Tarasankar Bandyopadhyay: তারাশঙ্কর সেদিন তাঁর লেখার খাতাটা উনুনে পুড়িয়ে দিলেন! কেন জানেন?
তিনি রাঢ়বঙ্গের 'কবি'। তিনি বীরভূম-বর্ধমান ও সন্নিহিত লালমাটি-অঞ্চলের অনন্য কথাকার। তিনি ভারতের গ্রামজীবনের অতুলনীয় গদ্যকার। তিনি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ২৩ জুলাই তাঁর জন্মদিন। দীর্ঘ ব্যাপক এক লেখকজীবন যাপন করেছেন তিনি। তাঁর সৃষ্টিপথের বাঁকে বাঁকে নানা বদল, নানা সৃজন।
সৌমিত্র সেন: তিনি রাঢ়বঙ্গের 'কবি'। তিনি বীরভূম-বর্ধমান ও সন্নিহিত লালমাটি-অঞ্চলের অনন্য কথাকার। তিনি ভারতের গ্রামজীবনের অতুলনীয় গদ্যকার। তিনি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ২৩ জুলাই তাঁর জন্মদিন। দীর্ঘ ব্যাপক এক লেখকজীবন যাপন করেছেন তিনি। তাঁর সৃষ্টিপথের বাঁকে বাঁকে নানা বদল, নানা সৃজন।
1/6
১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই
![১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383260-tara1.png)
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৯৮ সালের ২৩ জুলাই। বিশ শতকের এক বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক তিনি। ৬৫টি উপন্যাস, ৫৩টি ছোটোগল্প-সংকলন, ১২টি নাটক, ৪টি প্রবন্ধ-সংকলন, ৪টি স্মৃতিকথা, ২টি ভ্রমণকাহিনি, ১টি কাব্যগ্রন্থ এবং ১টি প্রহসন রচনা করেছেন। 'আরোগ্য নিকেতন' উপন্যাসের জন্য ১৯৫৫ সালে 'রবীন্দ্র পুরস্কার' ও ১৯৫৬ সালে 'সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার' পান। ১৯৬৭ সালে 'গণদেবতা' উপন্যাসের জন্য 'জ্ঞানপীঠ পুরস্কার' পান। ১৯৬২ সালে 'পদ্মশ্রী', ১৯৬৮ সালে 'পদ্মভূষণ' সম্মান অর্জন করেছিলেন তিনি।
2/6
'চৈতালী ঘূর্ণি' থেকে শুরু
!['চৈতালী ঘূর্ণি' থেকে শুরু](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383259-tara2.jpg)
photos
TRENDING NOW
3/6
'জলসাঘর' এবং
!['জলসাঘর' এবং](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383258-tarajalsaghar.png)
4/6
কবিতা থেকে নাটক থেকে উপন্যাস
![কবিতা থেকে নাটক থেকে উপন্যাস](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383257-taramurti4.png)
অনন্য গদ্যকার তারাশঙ্কর শুরু করেছিলেন নাটক দিয়েই। মাঝেমাঝে কবিতাও লেখেন। কবিতা ছাপাও হয়। সম্পাদকরা কবিতা লিখতে উৎসাহও দেন, কিন্তু কবিতা লিখে তাঁর যেন মন ভরে না। শেষে নাটক লেখার শখ জাগল। লিখে ফেললেন। এক আত্মীয়-বন্ধু তখন নাট্যকার হিসেবে নাম করেছেন। তারাশঙ্করের নাটক পড়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। বললেন, তোমার এই নাটক মঞ্চস্থ হলে চারদিকে হইহই পড়ে যাবে! কিন্তু সে নাটক কলকাতার এক নামকরা গ্রুপের ম্যানেজারকে জমা দিতে গিয়ে প্রবল অপমানিত হতে হল তারাশঙ্করের সেই আত্মীয়-বন্ধুকে। অধ্যক্ষ নাটকটি তো পড়লেনই না। উলটে বললেন, নিজে নাটক লিখে নাম করেছেন ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে নিজের আত্মীয়স্বজনকে এনে ঢোকাবেন না যেন। সব শুনে এত অপমানিত বোধ করলেন তারাশঙ্কর যে বাড়ি ফিরে নাটকের পুরো খাতাটাই উনুনে গুঁজে দিলেন। পুড়ে ছারখার হয়ে গেল নাট্যকার হওয়ার স্বপ্ন।
5/6
'মনে হচ্ছে সব হারিয়ে যাবে'
!['মনে হচ্ছে সব হারিয়ে যাবে'](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383256-tara5.png)
বড় সংসার। এদিকে মাসে তখন বাঁধা রোজগার চল্লিশ টাকারও কম। ফলে সংসার চালাতে নাভিশ্বাস উঠছে। এর মধ্যেই কবি সমর সেনের ঠাকুরদাদা দীনেশ সেনের মাধ্যমে এক প্রস্তাব এল মুম্বই গিয়ে কেরিয়ার শুরু করার (তৎকালীন বোম্বাই)। আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতোই অফার। বোম্বাইবাসী হিমাংশু রায় ডাক পাঠিয়েছেন। তাঁর একজন বাঙালি গল্পকার প্রয়োজন। শুরুতেই মাইনে ৩৫০টাকা। প্রতিবছর ১০০ টাকা করে বাড়বে। অভাবের সংসারে এত টাকা! রাজি হয়ে যাওয়ারই তো কথা। কিন্তু গেলেন না সাহিত্যসাধক তারাশঙ্কর। বললেন-- আমি যাব না ঠিক করেছি। আমার মন চাইছে না। মনে হচ্ছে সব হারিয়ে যাবে।
6/6
'ধাত্রীদেবতা'
!['ধাত্রীদেবতা'](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/07/23/383255-tara6.jpg)
তারাশঙ্করের কাছারিবাড়ি 'ধাত্রীদেবতা' এখন তারাশঙ্কর বিষয়ক সংগ্রহশালা। এই সংগ্রহশালায় আছে তারাশঙ্করের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, ঘড়ি, পাণ্ডুলিপি, পদক, তারাশঙ্করের হাতে আঁকা ছবি, কাটুম-কুটুম। এটা এখন একটা ঘুরে আসার জায়গা। কিংবা বলা ভালো তারাশঙ্করকে একবার ছুঁয়ে আসার জায়গা। বাংলা সাহিত্যপ্রেমী মাত্রেরই সেখানে যাওয়া যেন অবশ্যকর্তব্য।
photos