Neymar Jr, FIFA World Cup 2022: 'নেইমারের পা ভাঙলে ব্রাজিলীয়রা খুশি হবে!' সমর্থকদের ধুয়ে দিলেন বিস্ফোরক রাফিনহা
Neymar Jr: ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন নেইমার। ভার্টিব্রাতে গুরুতর চোট লাগার জন্য তাঁকে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর নিজের দেশে সেমি ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে ১-৭ গোলে হারের লজ্জা হজম করেছিল ব্রাজিল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লিওনেল মেসি (Lionel Messi) আর্জেন্টিনার (Argentina) ফুটবল ঈশ্বর। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo) পর্তুগালের (Portugal) জনগণের কাছে মহামানব। তবে নেইমার (Neymar Jr) কিন্তু ব্রাজিলের (Brazil) আমজনতার কাছে মোটেও তেমন নন! চলতি বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) সার্বিয়ার (Serbia) বিরুদ্ধে ম্যাচে তাঁর পা ভেঙে গেল, তাতে ব্রাজিলের বিশাল সংখ্যক জনগণ খুশি হতেন! আশ্চর্য হলেও এটাই সত্য। এমনই চ্যাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন নেইমারের সতীর্থ ও দলের অন্যতম ফুটবলার রাফিনহা (Raphinha)। নিজের ইনস্টাগ্রামে সেটা অকপটে লিখে, দেশের ফুটবল সমর্থকদের তীব্র কটাক্ষও করেছেন ২৫ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।
সার্বিয়ার বিরুদ্ধে গত ম্যাচে ১২বার ফাউলের শিকার হয়ে পা মচকে যায় নেইমারের। গ্রুপ পর্ব তো বটেই, বিশ্বকাপে তাঁকে আর মাঠে দেখা যাবে কিনা, সেটা ঘোর সেটা অনিশ্চিত। সতীর্থের বিপদের সময় ফিনহা তো চুপ থাকতে পারেন না। তাই ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছেন, 'আর্জেন্টাইন সমর্থকরা মেসিকে ঈশ্বর মনে করে, পর্তুগাল সমর্থকরা রোনাল্ডোকে মনে করে রাজা। আর ব্রাজিলের সমর্থকরা নেইমারের পা ভাঙার জন্য উল্লাস করে। কী দুঃখজনক ব্যাপার। নেইমারের কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে ব্রাজিলিয়ান হয়ে জন্ম নেওয়া। এই দেশ তার প্রতিভা এবং ফুটবলের জন্য যোগ্য নয়!'
বোলসোনারোর বড় সমর্থক হলেন নেইমার। দেশের রাজনীতিতে নাক গলিয়ে ব্রাজিলের 'পোস্টার বয়' খুব অপ্রিয় হয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি নির্বাচনে নেইমার সেই বোলসোনারোকে সমর্থন করলেও, বামপন্থী লুলা ডি সিলভার কাছে হেরে গিয়েছেন বোলসোনারো। এরপর থেকেই অস্বস্তিতে আছেন নেইমার। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে মারাত্মক চোট। এহেন বলসোনারো করোনার সময় নানা উল্টাপাল্টা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আমাজন বন উজাড় এবং দুর্নীতির অভিযোগও আছে। সেইজন্য নির্বাচনে লুলা ডি সিলভাকেই ভোট দিয়েছে ব্রাজিলের জনগণ। এরপরেও অবশ্য নেইমার তাঁর অবস্থান বদলাননি।
লুসেল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার রক্ষণে ছিল দীর্ঘকায় ফুটবলার। পাওয়ার ফুটবলের উপর ভর করে বারবার নেইমারকে আটকে দিচ্ছিল হেড কোচ ড্রাগন স্টোকোভিচের (Dragan Stojkovic) ছেলেরা। শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে নেইমারের খেলা নষ্ট করে দেওয়ার সঙ্গে তাঁকে চার্জ করতেও দেখা গিয়েছিল। প্রথমার্ধেই পাঁচবার ফাউল করা হয়েছিল তাঁকে। পুরো ম্যাচ জুড়ে নেইমারের বিরুদ্ধে মোট ফাউলের সংখ্যা ১২। যদিও ৮০ মিনিট পর্যন্ত নিজের ঝলক দেখিয়েছিলেন। কয়েকবার চোরা স্প্রিন্ট টেনে বল পায়ে বিপক্ষের বক্সে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। কিন্তু বল জালে রাখতে পারেননি। প্যারিসি সাঁ জাঁ-র তারকাকে ভয়ংকর ট্যাকেল করেন সার্বিয়ার সেন্টার ব্যাক নিকোলা মিলেনকোভিচ। সেইজন্য ৮০ মিনিটের মাথায় নেইমারকে চলে আসতে হয় সাইডলাইনে। ম্যাচের বাকি সময়ে নেইমারের গোড়ালিতে ছিল আইস প্যাক। খেলার শেষের পর খুঁড়িয়েই নেইমার ফেরেন লকার রুমে।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন নেইমার। ভার্টিব্রাতে গুরুতর চোট লাগার জন্য তাঁকে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। এরপর নিজের দেশে সেমি ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে ১-৭ গোলে হারের লজ্জা হজম করেছিল ব্রাজিল। সেই হারের যন্ত্রণা এখনও ভোলেননি কোনও সেলেকাও সমর্থক। ব্রাজিল গ্রুপ পর্যায়ে পরের দুই ম্যাচ খেলবে সুইৎজারল্যান্ড (২৮ নভেম্বর) ও ক্যামেরুনের (৩ ডিসেম্বর) বিরুদ্ধে। এই দুই ম্যাচে নেইমারহীন ব্রাজিল খেলবে। কিন্তু সবার মনে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, ব্রাজিল নক-আউট পর্বে কোয়ালিফাই করলে, নেইমারের সার্ভিস পাওয়া যাবে তো!