'বিভীষণের' ছক্কায় সেমির গাঁট ছাড়িয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

দক্ষিণ আফ্রিকা-২৮১/৫ (৪৩ ওভারে)।। নিউজিল্যান্ড-২৯৯/৬ (৪২.৫ ওভারে)
নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী (ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে)
ওয়েব ডেস্ক: ঘরের থেলের হাতে হেরে স্বপ্নভঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকার। জোহানেসবার্গে জন্মানো এক ক্রিকেটারের অবিশ্বাস্য ইনিংসেই হারতে হল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ৩৯ বছর ৯ মাস ১৮ দিনের চেষ্টার পর অবশেষে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া নিউজিল্যান্ড প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৬ বার হারের পর অবশেষে গাঁট ছাড়িয়ে খেতাবি লড়াইয়ে উঠল কিউইরা।
বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে উঠতে হলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ১২ রান। গোটা ক্রিকেটবিশ্ব তখন হাঁ করে তাকিয়ে ডেল স্টেইনের দিকে। স্টেইনের শেষ ওভারে প্রথম দু বলে হল মাত্র দু রান। হিসাব গিয়ে দাঁড়াল ৪ বলে ১০ রান। তৃতীয় বলে ভিট্টোরি মারলেন বাউন্ডারি। পরের বলে সিঙ্গলস নিয়ে প্রান্ত বদল করলেন ভিট্টোরি। দু বলে নিউজিল্যান্ডের দরকার ৫ রান। সেখান থেকে একবারে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে ফাইনালে তুললেন নায়ক দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মানো কিউই ব্যাটসম্যান গ্র্যান্ট ইলিয়ট। অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক স্টেডিয়ামে একেবারে ফেটে পড়ল উচ্ছ্বাসে। গোটা অবশেষে সেমিফাইনালের গাঁট ছাড়িয়ে ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪৩ ওভারে ২৯৯ রানের বড় লক্ষ্যমাত্রাকে তাড়া করে অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিল ব্র্যান্ডন ম্যাকালামের দল। বেশ ভাল খেলেও মোক্ষম সময়ে ফিল্ডিং ও বোলিংয়ের ব্যর্থতায় হারতে হল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
প্রথমে ব্যাট করে ফ্র্যাঙ্ক দু প্লেসিসের দুরন্ত ইনিংস, মাঝে ডিভিলিয়ার্সের হিসাবি ব্যাটিং ও শেষের দিকে ডেভিড মিলারের বিধ্বংসী ব্যাটিং দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২৮১-তে নিয়ে যায়। বৃষ্টি এসে খেলার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৪৩ ওভারে ২৯৮ রান। অর্থাত্ ৫০ ওভারের ম্যাচে ৩৫০ রান তাড়া করার মত কঠিন কাজ ছিল কিউইদের সামনে। পাহাড় প্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলে কিউইরা। প্রায় প্রতি বলেই চার, ছয় হাঁকাতে থাকেন ম্যাককালাম। কিছুটা ম্যাচের গতির বিরুদ্ধে সপ্তম ওভারে আউট হয়ে যান ম্যাককালাম (২৬ বলে ৫৯)। তারপরেই আউট উইলিয়াসমন। তখন সবাই ধরেই নিয়েছে এত বড় রান তাড়া করা অসম্ভব হয়ে যাবে নিউজিল্যান্ডের। চতুর্থ উইকেটে মার্টিন গাপ্টিল-রস টেলর জুটি প্রতিরোধ গড়ো তোলেন। কিন্তু যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের রাশ নিতে চলেছে নিউজিল্যান্ড, তখনই রান আউট হয়ে দলের কাছে বিশাল ধাক্কা দেন গত ম্যাচের ডবল সেঞ্চুরিয়ান গাপ্টিল (৩৪)। তারপরেই ফিরে যান রস টেলরও। ১৪৯ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন একেবারে মাঝ নদীতে নৌকাডুবির অবস্থায় কিউইরা। তবে তখনও রান রেট বেশ ভালই ছিল কিউইদের। সেখান থেকে ইলিয়ট আর কোরি অ্যান্ডারসনের পার্টনারশিপ দলকে নির্ভরতা দিতে শুরু করে। মোক্ষম সময়ে অ্যান্ডারসনকে রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন অধিনায়ক এবি। শেষের দিকে ইলিয়টের দুরন্ত ইনিংসে দলকে জয় এনে দেয়।