ম্যাচ উইনারদের দলে চেয়েছিলাম, জায়গা ছিল না ড্র করা ক্রিকেটাদের: সৌরভ
লর্ডসের ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালে জেতার পর আমিও জার্সি ওড়ালাম। তবে সেটা একেবারেই পরিকল্পিত ছিল না। জীবনে এমন অনেক কিছু হয়, যার উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়নস-এ এবারের অতিথি সৌরভ গাঙ্গুলি। আড্ডা দিলেন গৌরব কাপুরের সঙ্গে। ৬ মাসে ৭৫টা এপিসোড, ১৪টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আর বছরের ১০০টা দিন দেশের প্রথম সারির টিভি-কে সাক্ষাত্ দেওয়ার পর ‘ক্লান্ত মহারাজ’ এ বার ছুটি চাইছেন।
লন্ডনে বসে শুরুটাই হল লর্ডস দিয়ে। স্মৃতি রোমন্থনে ‘দাদা’ বললেন- ৩-২ এগিয়ে থেকে ওয়াংখেড়ে-তে হেরেছিলাম। সিরিজ ৩-৩ করে ফ্লিনটপ জার্সি উড়িয়েছিল। লর্ডসের ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালে জেতার পর আমিও জার্সি ওড়ালাম। তবে সেটা একেবারেই পরিকল্পিত ছিল না। জীবনে এমন অনেক কিছু হয়, যার উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
দল নির্বাচন প্রসঙ্গে: আমি চেয়েছিলাম ম্যাচ উইনার ক্রিকেটারদের। কখনই চাইনি আমার দলে ড্র করা ক্রিকেটার থাকুক। আমার সময় ভারতীয় দলে একটা ভাল মিশ্রণ ছিল। যুবরাজ, হরভজন, বীরু, আশিষ, জাহির সবাই প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন।
বীরেন্দ্র সেওয়াগকে দিয়ে ওপেন করানো: বীরুর নির্বাচনের সময় অনেকেই বলেছিল, ওকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! আমি বলেছিলাম, একজন ক্রিকেটারকে সুযোগ না দিয়েই তার দক্ষতা বিচার করা উচিত নয়। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় অভিষেক টেস্টেই শতরান করে। এরপরই ওকে ওপেন করতে বলেছিলাম। তারপর ইংল্যান্ডে এসেও শতরান করেছে। টেস্ট ক্রিকেটে ডেলিভারি ছেড়ে ছেড়ে বল পুরনো করতে হয়। বীরু-কে দেখলাম মেরে মেরে বল পুরনো করতে। টেস্ট ক্রিকেটে ৮ হাজার রান, যার ‘ইমপ্যাক্ট’ মারাত্মক।
আরও পড়ুন- এদেশে সচিনের থেকেও বেশি শ্রদ্ধেয় ধোনি, বলছে সমীক্ষা
আশিষ নেহরা প্রসঙ্গে: দল থেকে বাদ পড়লেই আমার ঘরে আসত, আর আমি চা খাইয়ে বলতাম এখন মাথা ঠান্ডা কর। পরের ম্যাচে খেলবি।
প্রসঙ্গ ধোনি: ধোনি প্রথম ২টো ম্যাচে সাত নম্বর খেলেছে। আমি দেখেছি ওর মধ্যে প্রতিভা আছে। সাতে ব্যাট করে ও কখনই বড় ক্রিকেটার হতে পারত না। ঠিক করি, তিনে ব্যাট করতে পাঠাবো। আমি চারে নেমে ওকে তিনে পাঠালাম। ধোনি সফল হয়েছে।
একই সঙ্গে সৌরভ এও বললেন, অধিনায়ক হিসাবে ধোনি এতটা সফল হবে, সেটা তিনি ভাবেননি। তবে ধোনির ক্ষমতা এবং দক্ষতা নিয়ে প্রত্যয়ী ছিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। ধোনির সাফল্যে খুশি সৌরভ ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়নস-এ বলেন- এটা দেখে ভাল লাগে ভারতের পূর্ব প্রান্ত থেকে ২টো অধিনায়ক পেল ভারত।
আরও পড়ুন- হাতে চোট, প্রথম টেস্টে অশ্বিনের খেলা নিয়ে সংশয়!
প্রসঙ্গ বিরাট কোহলি: বিরাট চায় ফিট দল। লোকে সমালোচনা করলেও ও ভিন্ন চিন্তা ভাবনার মানুয। আমি বিরাটের থেকে অনেক কিছু আশা করি। মনে প্রাণে চাই বিরাট দেশের বাইরে টেস্ট জিতুক। দেশ বিরাটকে ভরসা করে।
সৌরভের কাছে সেরা প্রতিদ্বন্দ্বী: অস্ট্রেলিয়া। স্টিভ ওয়া, রিকি পন্টিংয়ের দলকে হারানোর আনন্দই ছিল আলাদা। তাঁর মতে, ৮-এর দশক থেকে এখনও পর্যন্ত সেকরম অস্ট্রেলিয়া দল আর দেখিননি তিনি।
ক্রিকেট ও সৌরভ: সৌরভ জানান, তাঁর সময় ভারতীয় দলের প্রতিটি ক্রিকেটার একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। এই দলেও তাই আছে। সৌরভের কাছে ভারতের হয়ে খেলা তাঁর জীবনের ১৫টা বছর ছিল সবথেকে বর্ণময়। তাঁর বক্তব্য, “তুমি যত টাকাই কামাও, এই অভিজ্ঞতা আর কোথাও পাবে না। একটা ফাস্ট বোলারকে কভার ড্রাইভ মারার পর যে আনন্দ হয়, দর্শকদের তালিতে যতটা খুশি হওয়া যায় তা আর কিছুতেই নেই। এর কোনও বিকল্প নেই”।