মধ্যমগ্রাম শুটআউটকাণ্ডে দিল্লির সুপারি কিলার! ধৃত নাবালক সহ ৫
ধৃত ঈশ্বর ওঁরাও, অমিত হালদার ও ওই নাবালক, সবাই-ই শুটআউটকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত রাখালের সঙ্গী বলে জানা যাচ্ছে। প্রত্যেকেই রাখালের প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
নিজস্ব প্রতিবেদন : মধ্যমগ্রাম শুটআউটকাণ্ডে স্পষ্ট হল সুপারি কিলার যোগ। তৃণমূল যুব নেতা রিঙ্কুকে খুন করার জন্য সুপারি দেওয়া হয়েছিল দিল্লির দুই সুপারি কিলারকে। বাচ্চু ওরফে সোমনাথ দত্ত ও প্রাণ সিংহকে সুপারি দেওয়া হয়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে শ্যামনগর থেকে সোমনাথ দত্ত ওরফে বাচ্চুকে প্রথমে গ্রেফতার করে পুলিস। তারপরই গ্রেফতার হয় দ্বিতীয় সুপারি কিলার প্রাণ সিংহ। এই দুজন ছাড়াও শুটআউটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নাবালক সহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
ধৃত ঈশ্বর ওঁরাও, অমিত হালদার ও ওই নাবালক, সবাই-ই শুটআউটকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত রাখালের সঙ্গী বলে জানা যাচ্ছে। প্রত্যেকেই রাখালের প্রোমোটিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুপারি কিলার প্রাণ সিংহের বিরুদ্ধে হাইওয়ে থেকে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, মাদক পাচার, এলাকার জমি দখল, বাজার থেকে তোলা আদায়ের পাশাপাশি মূল অভিযুক্ত রাখাল নন্দীর নামে খুনের মামলাও রয়েছে। ২০১০ ও ২০১২ সালের দুটো পুরনো খুনের মামলায় নাম রয়েছে রাখাল নন্দীর।
প্রসঙ্গত সোমবার সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল যুব নেতা বিনোদ সিং ওরফে রিঙ্কু। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলার সময়ই চারদিক থেকে ৬ জন আততায়ী এসে জড় হয়। পজিশন নেয়। এরপর রিঙ্কু দলীয় কার্যালয়ের ভিতর ঢুকতেই শুরু হয় বোমাবাজি। প্রাণ বাঁচাতে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরই লুকিয়ে থাকেন রিঙ্কু। সেইসময় এক দুষ্কৃতী গুলি চালাতে চালাতে ভিতরে ঢোকে। আর বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল আরও একজন। দলীয় কার্যালয়ের ভিতর রিঙ্কুকে লক্ষ্য করে পর পর ২টি গুলি করে ওই দুষ্কৃতী। প্রায় মিনিট তিনেক পর ওই দুষ্কৃতী দলীয় কার্যালয় থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। তারপর বন্দুক উঁচিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় সবাই।
শুটআউটকাণ্ডে তদন্তে নেমে পুলিস নিশ্চিত হয় যে আততায়ীরা কেউই এলাকার নয়। বাইরে থেকে ভাড়া করে আনা গুন্ডা দিয়েই অপারেশন করা হয়েছে। কারণ আততায়ীদের কারোও মুখই বাধা ছিল না। এখন পরিচিত হলে বা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে দুষ্কৃতীরা মুখে কাপড় বেঁধে নিত। পাশাপাশি, শুটআউটের ঘটনায় পুলিসে হাতে আসে রাখাল নন্দীর নাম। ঘটনাস্থলে না থাকলেও রিঙ্কুকে খুন করবে বলে ছক সে-ই কষেছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন, নানুরের বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে মমতার বিরুদ্ধে 'বিস্ফোরক' মুকুল
স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, তৃণমূল যুবনেতা রিঙ্কুর সঙ্গে একসময়ে খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল রাখালের। তারা বন্ধু ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মদের ঠেকে বচসাকে কেন্দ্র করে সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরে। তারপর প্রোমোটিং ব্যবসাকে কেন্দ্র করে জল গড়ায় অনেকদূর। সম্প্রতি বাদুতে একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে বচসা চরমে উঠেছিল। এলাকায় রাখাল তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত।