Durga Puja 2022: ২৬৫ নট আউট, ডাকের সাজের ইতিহাস কথা বলে শোভাবাজারে!
Shobhabazar Rajbari, Durga Pujo 2022 : সালটা ১৭৫৭, মহারাজা নবকৃষ্ণ দেব এই রাজবাড়ির দুর্গা দালানে একচালা সাবেকি প্রতিমার পুজো শুরু করেন। কালে কালে সাধক রামপ্রসাদ সেন, ঠাকুর রামকৃষ্ণ থেকে স্বামী বিবেকানন্দের পদধূলি পড়েছিল এই দুর্গাদালানে। কথিত আছে, শোভাবাজার রাজবাড়িই সাবেক কলকাতার দুর্গাপুজোর প্রথম প্রবর্তক। সুতানুটি, গোবিন্দপুর এবং কলকাতায়, এর আগে শুধুই বাড়ির পুজো হতো। রাজা নবকৃষ্ণ প্রথম পুজোকে সর্বজনীন করলেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: লাখ লাখ টাকার থিম। কোথাও তো আবার কোটির কাছাকাছিও পৌঁছে যায় মেগা বাজেটের পুজো (Durga Pujo 2022)। কিন্তু, তারপরেও একচুলও কমেনি শোভাবাজার রাজবাড়ির (Shobhabazar Rajbari) ২৬৫ বছরের গ্ল্যামার। ভিড় থেকে আকর্ষণ, এখনও শোভাবাজার মানেই ঐতিহ্যের সেরা, বনেদিয়ানায় সেরা।এই দালানে এখনও অতীত ঐতিহ্য খেলা করে। এই উঠোনে এখনও অটুট রাজদরবারের আমেজ। এক কথায়, শোভাবাজার রাজবাড়ি মানেই ঐতিহ্য আর আন্তরিকতায় মোড়া আস্ত একটা ইতিহাস।
নিষ্ঠা থেকে আকর্ষণ, সবকিছুতেই বাংলার অন্যতম সেরা দুর্গাপুজোর তালিকায় আজও শুরুর দিকেই কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। সালটা ১৭৫৭, মহারাজা নবকৃষ্ণ দেব এই রাজবাড়ির দুর্গা দালানে একচালা সাবেকি প্রতিমার পুজো শুরু করেন। কালে কালে সাধক রামপ্রসাদ সেন, ঠাকুর রামকৃষ্ণ থেকে স্বামী বিবেকানন্দের পদধূলি পড়েছিল এই দুর্গাদালানে। কথিত আছে, শোভাবাজার রাজবাড়িই সাবেক কলকাতার দুর্গাপুজোর প্রথম প্রবর্তক। সুতানুটি, গোবিন্দপুর এবং কলকাতায়, এর আগে শুধুই বাড়ির পুজো হতো। রাজা নবকৃষ্ণ প্রথম পুজোকে সর্বজনীন করলেন।
যদিও এই দুর্গাপুজোর ইতিহাস বহুচর্চিত। কালের হেরফেরে নানা মত রয়েছে। দেবীর বাহন নৃসিংহ, দেহটি ঘোড়া আকৃতির, রং সাদা। কথিত আছে, মায়ের শোলার সাজ কৃষ্ণনগর থেকে পোস্ট অফিসের পার্সেলে আনা হত। ডাক মারফত আনা হত বলেই এর নামই হয়ে যায় ডাকের সাজ। শুরুতে দুর্গাপুজোয় সবার প্রবেশাধিকার ছিল না। রাজা নবকৃষ্ণ দেব প্রথম রাজপ্রাসাদের দ্বার খুলে দেন আপামর প্রজার জন্য। বাঙালি মনিষীদের পাশাপাশি এই পুজোয় একসময় এসেছিলেন রবার্ট ক্লাইভ, ওয়ারেন হেস্টিংসের মতো ইংরেজ শাসকরাও। যদিও, ইতিহাস বলছে, উনিশ শতকের শেষে ইংরেজ সরকার আইন পাশ করে ব্রিটিশ নাগরিকদের হিন্দু উৎসবে যোগদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
আরও পড়ুন : Durga Pujo 2022 : স্বীকৃতির পুজোতেও অন্ধকারে ভূতের মতো নেতাজির দুর্গাচরণ
গোটা পৃথিবীর সঙ্গে আমূল পাল্টে গেছে শহর কলকাতাও। গ্লোবাল ফেস্টিভাল হয়ে উঠেছে বাংলার প্রাণের পুজো। শোভাবাজার রাজবাড়িতে বিগত দু’বছর দর্শকদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। এবার ফের একবার অবারিত দ্বার। ভাবলেও অবাক লাগে, এক বিন্দুও চরিত্র বদলায়নি শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো। সেই ঐতিহ্য, সেই আন্তরিকতা, সেই রেওয়াজ, সেইসঙ্গে চিরাচরিত রুচি এবং নিষ্ঠা আজও হুবহু অটুট।