হিংসা বিধ্বস্ত দিল্লিতে ৩ দিন না খেয়ে! নওদার ১১ জনকে উদ্ধার করে ট্রেন ধরালেন অধীর
ইতিমধ্যেই অশান্ত দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ৩৪ ছুঁয়েছে। আহত কমপক্ষে ২০০।
নিজস্ব প্রতিবেদন : দিল্লিতে হিংসায় আটকে পড়া মুর্শিদাবাদের নওদার ১১ জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করলেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির গন্ডা নামে একটা জায়গায় হিংসার জেরে আটকে পড়েছিলেন নওদার ১১ জন। অশান্তির জেরে টানা ৩ দিন না খেয়ে ছিলেন তাঁরা। খবর পেয়েই তাঁদের উদ্ধারে উদ্যোগী হন মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপরই পুলিস দিয়ে ওই ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়। তারপর রাতের ট্রেনে কলকাতা ফেরার ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী জানান, দিল্লিতে আটকে পড়া ১১ জন নওদার মানুষকে উদ্ধার করে গত রাতে দিল্লি-কলকাতা ট্রেনে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিবারের লোকেদের আতঙ্কিত হতে বারণ করেন সাংসদ। চিন্তা করতে বারণ করে আশ্বস্ত করেন মুর্শিদাবাদের সাংসদ। এদিকে ইতিমধ্যেই অশান্ত দিল্লিতে মৃতের সংখ্যা ৩৪ ছুঁয়েছে। আহত কমপক্ষে ২০০। এখনও অশান্তি থামার কোনও লক্ষ্মণ নেই। চোরাগোপ্তা হামলা চলছে। এদিন সকালে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় গোকুলপুরীতে।
দিল্লী দাঙ্গায় আটকে পড়া 11 জন নওদার মানুষকে উদ্ধার করে গত রাতে দিল্লী-কলকাতা ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি, আতঙ্কিত পরিবারের সকলকে বলবো আপনাদের লোকেরা বাড়ি ফিরছে, চিন্তা নেই।
— Adhir Chowdhury (@adhirrcinc) February 27, 2020
সন্তানের লেখাপড়া-বাবা-মায়ের চিকিত্সা। মাথার ওপর অনেক চাপ। দুটো বাড়তি রোজগারের আশাতেই দিল্লি গিয়েছিলেন এরাজ্যের শ্রমিকরা। তবে সে সব স্বপ্নে আপাতত ছেদ। প্রাণ বাঁচাতে ঘরে ফিরছেন বাঙালি শ্রমিকরা। রাজধানীর ঝাঁ চকচকে গণ্ডি ছাড়িয়ে কর্দমপুরী। খেটে খাওয়া আম জনতার বাস। পশ্চিমবঙ্গের মালদা থেকে কাজে যাওয়া বহু শ্রমিক এই কর্দমপুরীতে থাকেন। কিন্তু ৭২ ঘণ্টায় বদলে গিয়েছে কর্দমপুরীর ছবিটা। কর্দমপুরীতে এখন শুধুই আগুন,গুলি, আর পাথর বৃষ্টির লড়াই। জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা, কারফিউ।
আরও পড়ুন, করোনাভাইরাস: জাপানে নোঙর করা জাহাজ ও চিনের উহান প্রদেশ থেকে দেশে ফিরলেন ১৯৫ জন ভারতীয়
খুল্লমখুল্লা তাণ্ডবের সাক্ষী কর্দমপুরীর অলিগলি। কান পাতলেই ভেসে আসছে আতঙ্কের আর্তনাদ! কার ভরসায় থাকবেন শ্রমিকরা? অশান্ত কর্দমপুরী থেকে এখন তাই শ্রমিকদের ঘরে ফেরার লাইন। বেতন বাকি, হাতে টাকা নেই, কিন্তু তাতে কি? প্রাণ তো বাঁচাতে হবে! প্রাণভয়েই তাই দিল্লি ছাড়ছেন বাংলার শ্রমিকরা। ভয়ে শুকিয়ে গিয়েছে মুখ। চোখে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। হিংসা ছড়ানোর ৩ দিন পর বুধবার, প্রধানমন্ত্রী টুইট করে দিল্লিতে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন। টুইটে নরেন্দ্র মোদী লেখেন, "শান্তি ও সম্প্রীতি দেশের মূল ভিত্তি। দিল্লির ভাই ও বোনেদের শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আবেদন করছি। দিল্লিতে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ।" কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও থামছে না হিংসা।