ভেজাল দুধ ব্যবসার পর্দাফাঁস, তদন্তের ভার এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হাতে

কল্যাণী-বারাকপুর হাইওয়ের চাঁদুয়াতে বহুদিন ধরে চলছে ভেজাল দুধের ব্যবসা।

Edited By: অধীর রায় | Updated By: Jul 16, 2020, 03:46 PM IST
ভেজাল দুধ ব্যবসার পর্দাফাঁস, তদন্তের ভার এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হাতে
নিজস্ব চিত্র

অধীর রায় ও অনন্ত চট্টোপাধ্যায়
লকডাউনের সুযোগ নিয়ে জরুরি পরিষেবাকে বিষাক্ত করে তুলছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সেই বিষ প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু কিংবা বৃদ্ধরা খেয়ে চলেছেন। বহুদিন ধরেই লোকচক্ষুর আড়ালে এবং এলাকায় নিজেদের প্রভাব খাঁটিয়ে ভেজাল দুধের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল তারা। কল্যাণী-বারাকপুর হাইওয়ের চাঁদুয়াতে বহুদিন ধরে চলছে ভেজাল দুধের ব্যবসা। বীজপুর থানার অন্তর্গত নামকরা লালু শেঠের হোটেলের  পিছনে দীর্ঘদিন ধরে চলছে দুধের কালোবাজারির রমরমা ব্যবসা।

কী ধরনের কালোবাজারি?
শুনলে চমকে উঠবেন। বিভিন্ন জেলায় বড়বড় ট্যাঙ্কারে দুধ সরবরাহ করা হয়। এটা নিদিষ্ট এলাকায় দুধের গাড়ি এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে বড়বড় জারে করে দুধ নিয়ে যায় দুধওয়ালারা। সেই ট্যাঙ্কারে দুধের সঙ্গে থাকে পুকুরের নোংরা জল। হ্যাঁ এটাই বাস্তব ছবি। প্রতিদিন কল্যাণী-বারাকপুর হাইওয়ের চাঁদুয়াতে  ভোর হতেই লালু শেঠের হোটেলের পিছনে চলে যায় দুধের বড়বড় ট্যাঙ্কার। সেই ট্যাঙ্কারে যে পরিমাণ দুধ থাকার কথা সেই পরিমাণ দুধ থাকে না। সেটা পূরণ করা হয় জল দিয়ে।

প্রশ্ন কোন জল ?  
লালু শেঠের হোটেলের পিছনে আছে বড়বড় পুকুর। সেই নোংরা পুকুরে মোটা পাইপ লাগিয়ে মেশিন দিয়ে জল তুলে ভরা হয় দুধের ট্যাঙ্কারে। আর সেই ভেজাল বিষাক্ত দুধ বড়বড় জারে সেখানেই ভরা হয়। তারপর বিক্রির জন্য বাজারে চলে যায় ।

পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে এই বিপজ্জনক দুধের কালোবাজারি ব্যবসা চলছে বেশকিছুদিন ধরেই। জি় ২৪ ঘন্টার ক্যামেরায় এই ছবি ধরা পড়তেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় কালোবাজারির কারবারিরা। আমাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বীজপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সেই দুধের ট্যাঙ্কারটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বীজপুর থানা। জানা গিয়েছে এই ভেজাল দুধের ব্যবসা চালায় মা তারা দুধ কোম্পানি। শিশু খাদ্যে ভেজাল মেশাবার অভিযোগে বীজপুরের পুলিস একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। তদন্তের ভার তুলে দেওয়া হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হাতে। তদন্তের জন্য দুধের নমুনা পাঠানো হয়েছে ল্যাব টেস্টে।

এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার না হওয়াতে পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ এলাকার এক ব্যক্তি পুলিসকে জানিয়েছেন প্রতিদিন লালু শেঠের হোটেলের পিছনের এইভাবে দুধের ট্যাঙ্কারে পুকুরের নোংরা জল মেশানো হয়। তারপরও পুলিস হোটেলের মালিককে দায়সাড়া জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। লালু শেঠ ক্ষমতাবান হওয়াতেই পুলিস ব্যাকফুটে?  পুলিস তরফে জানানো হয়েছে তদন্ত চলছে। সময়মতো সব কিছু প্রকাশ্যে আসবে।

.