GangaSagar Mela 2025: দু'দশক পার, গঙ্গাসাগরে গৃহবধূর সন্ধান পেল পরিবার...
GangaSagar Mela 2025: টানা কুড়ি বছর পর গঙ্গাসাগরে খোঁজ মিলল খুলনার বধূর, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এক নয়, দুই নয়; টানা কুড়ি বছর পর গঙ্গাসাগরে খোঁজ মিলল খুলনার বধূর। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি, এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা দেশ। জীবন থেকে চলে গেছে কুড়িটা বছর, তাতে কী! স্ত্রীকে ফিরে পেতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের দফতরে খুলনা থেকে চিঠি লিখেছেন খুলনার বধূর স্বামী।
আরও পড়ুন: আসছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, উধাও হবে শীত! সপ্তাহের শেষে আচমকা হাওয়া বদল বঙ্গে?
জানা যাচ্ছে খুলনার বধূ, অর্চনার বাড়ি বাংলাদেশের খুলনায় এবং তিনি ছিলেন পেশায় প্যারামেডিক্যালের মহিলা কর্মী। তাঁর এক ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে ছিল ভরা সংসার। কিন্তু এখানেই ঘটেছিল ছন্দ পতন, তাঁর অসুস্থ প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাড়িতে রেখে নিজের হাতে চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। সুস্থ হওয়ার বদলে মৃত্যু হয় তার, এই কারনেই তাঁর কপালে জোটে গঞ্জনা এবং দুঃখে-কষ্টে মানসিক ভারাক্রান্ত হয়ে যান তিনি। বাড়ি ছেড়ে ঘুরতে থাকেন এদিক-ওদিক, কখনও কপিল মুনির আশ্রম তো কখনও দক্ষিণেশ্বর। ওদিকে অর্চনার স্বামী লঙ্কেশ্বর গোলদার তাঁর স্ত্রীকে ফিরে পেতে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন। দেখতে দেখতে কুড়ি বছর পার হলেও লঙ্কেশ্বর হাল ছাড়েননি, মনের মধ্যে ছিল অদম্য জেদ। অবশেষে সাধিকা বেশে খুঁজে পাওয়া গেল অর্চনাকে, পরনে লাল শাড়ি, কপালে লম্বা তিলক ও মাথায় জটা। ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। তাঁর ইংরেজীতে কথা বলার পাশাপাশি ইংরেজী লেখা দেখে অবাক হয়ে যায় আশ্রম চত্বরের লোকজন। তাঁর পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে বারংবার এড়িয়ে যেতেন তিনি। প্রসঙ্গত এই কারণেও তাঁকে খুঁজে পেতে অনেকটাই বেগ হয়েছিল সকলকে।
সম্প্রতি অর্চনার খোঁজ পেয়ে গঙ্গাসাগরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যেরা, সংগঠনের সম্পাদক জানান স্থানীয় দোকানিদের কাছ থেকে জানতে পারেন অর্চনার কথা এবং তৎক্ষনাৎ তাঁরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তাঁর সঙ্গে। অর্চনার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তাঁরা বাংলাদেশের রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের জানান এবং অবশেষে পরিবারের লোকেরা খুঁজে পান তাঁকে।
মহিলা সব কথা মনে করতে না পারলেও তাঁর স্বামী এবং তাঁর গ্রামের কথা মনে করে বলতে পারেন তিনি, এর পাশাপাশি তাঁর পরিবারের কথাও তিনি বলেন। কেন তিনি পরিবার ছেড়ে নানান জায়গায় ঘুরছেন জানতে চাইলে বিস্তারিত ভাবে জানান সকল কথা। জানা যায় কপিল মুনির আশ্রমে তিনি গত তিন-চার বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি এবং গঙ্গাসাগরের এক নম্বর গলির শ্মশানেও রয়েছে তাঁর অবাধ যাতায়াত। রেডিও ক্লাবের সদস্যেরা এও জানান তাঁদের মনে হয়েছে অর্চনা কোনও এক আভিজাত্য পরিবারেরই মেয়ে। অর্চনার বাবার নামে স্কুলের কথা জানতে পারেন তাঁরা অর্চনার থেকে। এমনকি তিনি যথেষ্ঠ ওয়াকিবহল বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে। তবে অনেক কথায় পাওয়া যায় অসংলগ্নতা। রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যরা ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের কথা বলিয়ে দেন এবং এতেই মিলেছে ফল, অর্চনা বাড়ি ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। তবে তাঁকে কী ভাবে ফেরানো হবে তাঁর পরিবারে তা নিয়েই এখন চলছে কথপকথন তাঁর পরিবারের সঙ্গে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অর্চনাকে বাড়ি ফেরানো কতটা সহজ হবে তা ভাবিয়ে তুলেছে সকলকে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)