কৃষক আন্দোলনের নেতার সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বললেন মমতা
আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ডেরেকের মাধ্যমে ফোনে কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কৃষক আন্দোলনের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে মমতার নির্দেশে দিল্ল- হরিয়ানার-সিঙ্ঘু সীমানায় পৌঁছে গেলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। আন্দোলনে সহমর্মিতা জানিয়ে ফোনে কৃষক পরমজিত সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কথা বলেন আরও অনেক আন্দোলকারীর সঙ্গেও। আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ডেরেকের মাধ্যমে ফোনে সরাসরি কথাও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষকরা টেলিফোনে মমতাকে বোন সম্বোধন করে পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
দিল্লিতে কৃষক বিক্ষোভ, কৃষকদের সঙ্গে কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ডেরেক ওব্রায়েনের ফোনে কৃষকদের সঙ্গে কথা মমতার। pic.twitter.com/cETGIPQo5l
— zee24ghanta (@Zee24Ghanta) December 4, 2020
আজ বৈঠকের জন্য এই দিনটিই বেছে নিয়েছেন মমতা। বৈঠকের আগে সিঙ্গুরের স্মৃতিকে উসকে দিয়ে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে টুইট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা টুইটে লিখেছেন, '১৪ বছর আগে ৪ ডিসেম্বর ২০০৬ আমি কলকাতায় ২৬ দিন অনশন শুরু করেছিলাম। কৃষিজমি জোর করে ছিনিয়ে না নেওয়ার দাবিতেই ছিল সেই অনশন। কেন্দ্রের কড়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে বর্তমানে দেশে কৃষকরা যে আন্দোলন করছেন, তাকে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করে এই বিল পাশ করানো হয়েছে'। যা থেকে স্পষ্ট যে, বিধানসভা ভোটের আগে মমতা তৃণমূলকে আবার কৃষক-আন্দোলনমুখী করে তুলতে চাইছেন। অর্থাৎ, তৃণমূল আরও বেশি করে গ্রামের দিকে নজর দেবে।
তার উদাহরণ হিসেবে তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, আগামী সোমবার ৭ ডিসেম্বর তাঁর মেদিনীপুরের সভাকে মমতা আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর সভা হিসাবে দেখতে চাইছেন। ওই সভা থেকেও তিনি কৃষকদের আন্দোলনের প্রতি তাঁর সমর্থন আরও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাইছেন।
শুক্রবারের টুইট সম্পর্কে তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্বের অভিমত, ওই টুইটে মমতা তাঁর সুদীর্ঘ আন্দোলন-লড়াইয়ের ইতিহাস আরও একবার দলের নেতা-কর্মীদের মনে করিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, যে কৃষিজমি অধিকার রক্ষার আন্দোলন তাঁর উত্তরণের ভিত্তিভূমি, বিধানসভা ভোটের আগে তিনি আরও একবার সেই জমিতেই ফিরে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারও একাধিক টুইটে মমতা দিল্লির উপকণ্ঠে কৃষকদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: 'সরকার মানুষের উঠোনে ছিল, এখন দুয়ারে চলে এসেছে', প্রতিক্রিয়া সাংসদ মহুয়া মৈত্রের
লিখেছিলেন, ‘কৃষকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে মারাত্মক উদ্বেগে রয়েছি। ভারত সরকারের উচিত নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার করে দেওয়া। এই মুহূর্তে ওই আইন প্রত্যাহার না করা হলে আমরা রাজ্য ও দেশজুড়ে আন্দোলনে নামব। আমরা প্রথম থেকেই এই কৃষক বিরোধী বিলের বিরোধিতা করে আসছি’। ঘটনাচক্রে, আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিতে শুক্রবারই দলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে হরিয়ানায় পাঠিয়েছেন মমতা।
সব মিলিয়ে দিল্লিতে কৃষক বিক্ষোভ অব্যাহত। কাল ফের মুখোমুখি হতে চলেছে কৃষক-সরকার। তার আগে আজ বৈঠকে কৃষক সংগঠনগুলি। তারা সাফ জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই আইন সংশোধন মেনে নেওয়া হবে না, প্রতিবাদ হবে আরও জোরালো। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকলেও সিঙ্ঘু সীমানা-সহ দিল্লির অন্যত্র জমায়েত বাড়ছে কৃষকদের। যোগ দিচ্ছেন বিপুল সংখ্যক প্রতিবাদীরা। বিক্ষোভের জেরে বন্ধের মুখে নয়ডার কারখানাগুলি। কারখানাগুলিতে কাঁচা মালের অভাব দেখা দিচ্ছে। কৃষকদের বিক্ষোভে সামিল বেশ কিছু সংগঠনও।