TMCP: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে চোর চোর স্লোগান!
মিটিং শুরু হয় গুগল মিট অ্যাপে। আর এই মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে হঠাৎ করেই একের পর এক মিটিংয়ে ভাগ নেওয়া সদস্যরা চোর চোর স্লোগান সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে। অস্বস্তিতে পড়ে তড়িঘড়ি মিটিং শেষ করে দিতে হয় নেতৃত্বকে।
চম্পক দত্ত : তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভার্চুয়াল বৈঠকে চোর চোর স্লোগান! একবার নয়, একাধিকবার ঘটল এমন ঘটনা। অস্বস্তিতে পড়ে তড়িঘড়ি বৈঠক শেষ করতে হল নেতৃত্বকে। ভাইরাল সেই ভার্চুয়াল বৈঠকের ভিডিও।
গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত ব্লক, শহর এবং প্রত্যেক কলেজ ইউনিট সদস্যদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ের ডাক দেয় সংগঠনের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেই মিটিংয়ে ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য নেতৃত্বও। সন্ধে ৭ টায় সেই মিটিং শুরু হয় গুগল মিট অ্যাপে। আর এই মিটিং শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে হঠাৎ করেই একের পর এক মিটিংয়ে ভাগ নেওয়া সদস্যরা চোর চোর স্লোগান সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে। অস্বস্তিতে পড়ে তড়িঘড়ি মিটিং শেষ করে দিতে হয় নেতৃত্বকে। ঘটনার জন্য বিরোধীদের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এসএফআই ও এবিভিপি পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকেই।
পুরো বিষয় নিয়ে মেদিনীপুর সংগঠনিক জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কিছু না বললেও রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, মিটিংয়ের মধ্যে দু-একজন ফেক অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন করে কুরুচিকর মন্তব্য করেছে। সেটার তীব্র নিন্দা করছি আমরা এবং কারা বা কোথা থেকে এই জিনিসটি ঘটানো হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষ। প্রশাসনকে আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছি। লিখিত অভিযোগও জানাব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে সেই আর্জি আমরা করব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, আমরা জেলার কোনও মিটিং এখনও পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করিনি। এটা আমার জানা নেই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যে ছেলেটি সভাপতি হয়েছে, সে একদম নতুন। ভিসি একটা অত্যন্ত কনফিডেন্সিয়াল বিষয়য়। যারা এতে অংশগ্রহণ করে তাদের পরিচিতিটা সঠিকভাবে নেওয়ার দরকার ছিল। এটা নিশ্চিত গাফিলতি রয়ে গিয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যদি এইরকম কথাবার্তা হয়ে থাকে। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি কারা এই ভিসিতে ছিল এবং কাদেরকে কানেক্ট করা হয়েছিল। পুরো খবর নিয়ে তারপরই বলতে পারব ঘটনাটা কী ঘটেছে।
ওদিকে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক রনিত বেরা বলেন, গোটা ভারতবর্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রয়েছে। তাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ রয়েছে। আমরা দেখেছি গোটা রাজ্য এবং দেশে এটা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র দল, যে দলে শুধুমাত্র চোর-ডাকাত-গুন্ডা এরাই রয়েছে। সেই আদর্শ নিয়েই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ চলছে। এই ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও আমরা দেখেছি যে তৃণমূলের বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো তিনি নিজেই নিজের দলের বিভিন্ন নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে নাম করে তাদের চোর বলেছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তৃণমূলের মতন এতটা ডাকাতি না করতে পারলেও তারা ছোটখাটো চুরি করে থাকে। এমন একটা ছাত্র সংগঠন যে যাদের শিক্ষা নিয়ে কোনও লড়াই নেই, শিক্ষা নিয়ে কোনও দাবি নেই। ছাত্রদের স্বার্থ নিয়ে কোনও কথা নেই। তারা সারাদিন কীভাবে ইউনিয়নের টাকা চুরি করা যায়, চাকরির টাকা চুরি করা যায়, সেই নিয়েই ব্যস্ত।
আরও বলেন, আমাদের ভারতীয় ছাত্র ফেডারেশনের এতে কোন ইন্টারেস্ট নেই যে তৃণমূল ছাত্র ছাত্র পরিষদের ভার্চুয়াল মিটিংয়ে কী আলোচনা হচ্ছে তাতে আমরা আগ্রহ দেখাব বা আমরা ছেলে ঢোকাব। সেখানে যারা উপস্থিত ছিল তারা তাদেরই মধ্যেকার ছেলে। যারা হয়তো আইডেন্টিফাই করতে পেরেছে যে তাদের নেতারা চোর, সেই জন্যই স্লোগান দিয়েছে। অথবা তাদের নিজেদের মধ্যে টাকা পয়সা বখরার কোনও অসুবিধা হয়েছে, কেউ হয়তো কম কাটমানি পেয়েছে, তাই তারা চোর বলে স্লোগান দিয়েছে। এবিভিপি - র রাজ্য সম্পাদক সঙ্গীত ভট্টাচার্যও বলেন, দলের মধ্যে থেকে যারা মেনে নিতে পারছে না, এই ভার্চুয়াল বৈঠকে তারাই প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন, Puri: 'আমি এখন কী করব, ছেলে ছাড়া কী করে থাকব!' অঝোরে কান্না মায়ের