নেতাই থেকে ছোট আঙারিয়া, ‘রক্তাক্ত’ নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণায় মুখ্যমন্ত্রী
নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “বাম আমলের অত্যাচার ভুলিনি। নন্দীগ্রামে এখনও অনেকে নিখোঁজ।"
![নেতাই থেকে ছোট আঙারিয়া, ‘রক্তাক্ত’ নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণায় মুখ্যমন্ত্রী নেতাই থেকে ছোট আঙারিয়া, ‘রক্তাক্ত’ নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণায় মুখ্যমন্ত্রী](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2018/12/05/160168-mamata.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: সেই পূর্ব মেদিনীপুর। সেই নন্দীগ্রাম। যে জমি আন্দোলনকে সামনে রেখে ৩৪ বছরে বাম শাসনের ভিত টলিয়ে দিয়েছিলেন, আন্দোলনের সেই জেলাতে প্রশাসনিক সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা হল বাজকুলে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের সিংহভাগ জুড়েই থাকল নন্দীগ্রামের স্মৃতিচারণা।
এল নেতাই থেকে ছোট আঙারিয়া। সোমবার বাজকুলের সভায় বারবার এই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। এদিন আবারও একবার সিপিএমের বিরুদ্ধে অত্যাচারের কথা শোনা গেল মমতার গলায়।
আরও পড়ুন: রাজ্যে বিজেপির রথযাত্রা নিয়ে আগামীকাল হাইকোর্টে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “বাম আমলের অত্যাচার ভুলিনি। নন্দীগ্রামে এখনও অনেকে নিখোঁজ। অনেক অত্যাচার চালিয়েছে ওরা। বহু মানুষ মারা গিয়েছে। কিচ্ছু ভুলিনি।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ আমাকে একদিন এখানে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল ওরা। অ্যাসিড বোমা মারত। সিপিএমের হার্মাদরা অত্যাচার করত।” সিপিএমের বিরুদ্ধে বাজকুলের সভায় আগাগোড়াই সরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “একটা কথা আজ এখানে দাঁড়িয়ে বলছি, আগে বলিনি। গোপাল গান্ধী একদিন আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। তিনি আমাকে সাবধান করেছিলে যে ওরা আমাকে মেরে দেবে। আমি তাও ঢুকেছিলাম। আমাকে ওরা আটকাতে পারেনি।”
আরও পড়ুন: রাজ্যে মোদীর সফরসূচিতে ফের বদল, বাদ গেল ২টি সভা
এরপরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাকে চমকালে, আমি গর্জাই।” সিপিএমের পাশাপাশি বিজেপিকেও এদিন কাঠগড়ায় দাঁড় করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ সিপিএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপিতে এসে ভিড়েছে। বাংলাতে হার্মাদদের কোনও জায়গা নেই। সিপিএমকে তাড়িয়েছি। এবার যেসব হার্মাদরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছে, তাদেরও তাড়িয়ে ছাড়ব। ” পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলের সভা থেকে বিজেপিকে এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন রাজ্য কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্যের কংগ্রেস বিজেপির সঙ্গে রয়েছে।” এক্ষেত্রে ‘রাজ্য কংগ্রেস’ কথাটা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী আসলে হাইকমান্ডের সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের ফারাকটা স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেক্ষেত্রে রাজ্য কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেও রাহুল-সোনিয়াদের প্রতি আস্থা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী যে বিজেপি বিরোধী জোট করতে চান, তাতে কংগ্রেস হাইকমান্ডকে পাশে পেতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এদিনের বার্তায় সেকথাও স্পষ্ট বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।