বিধায়কের আচরণে ক্ষুব্ধ মমতা, 'তৃণমূলের একটা কালচার রয়েছে', প্রশাসনিক বৈঠকে দিলেন বার্তা
'খবরদার এগুলো করো না', বিধায়ককে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদন: হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী (Goutam Chowdhury)। অতিবৃষ্টির কারণে এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ দেখান উত্তর হাওড়ার বিধায়ক। রাস্তায় বসে পড়েন তিনি। তাঁর এই আচরণে ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে গৌতম চৌধুরীকে (Goutam Chowdhury) দিলেন কড়া বার্তা।
প্রশাসনের আধিকারিকদের পাশাপাশি বৈঠকে জেলার বিধায়কদের সঙ্গেও কথা বলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তাঁদের অভাব, অভিযোগের কথা জানেন। বিধায়কদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে ওঠেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী (Goutam Chowdhury)। তিনি বলতে শুরু করলে থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ গম্ভীর গলায় এরপর প্রশ্ন করেন, "তুমি গৌতম চৌধুরী? তুমি কেন একদিন রাস্তায় বসেছিলে?" বিধায়ক জানান, এলাকায় জল জমে যাওয়ার কারণে রাস্তায় বসে পড়েছিলেন তিনি। ফের ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "জল জমে গিয়েছিল বলে তুমি রাস্তায় বসে পড়়বে? প্রকৃতি কি আমাদের হাতে? গত ৮০ বছরে এত বৃষ্টি হয়নি। কোথায় তুমি সহযোগিতা করবে, তা না তুমি রাস্তায় বসে গিয়েছ। তৃণমূল কংগ্রেসের একটা কালচার রয়েছে। খবরদার এগুলো করো না। টিভিতে দেখাবে একদিন মানুষ মনে রাখবে অনেকদিন। আমি বাধ্য হয়েছিলাম তোমাকে বলাতে যে, এরম করো না। দরকার হলে জলটা নিজে সরাতে চেষ্টা করবে।"
এরপর মুখ্যমন্ত্রী জানান, জল জমা হাওড়ার পুরনো অসুবিধা। সেই সমস্যা দূর করতে সরকার তিনটে ধাপে কাজ করাচ্ছে। প্রথম ধাপের কাজ শেষ। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বলেন, "৭০ বছরে কেউ করেনি। হাওড়ার জল নিকাশি ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সরকার তিনটে ধাপে কাজ করছে। প্রথম ধাপ হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হয়েছে।" বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, "চাই চাই চাই না, আমি কী দিতে পারি সেটা দেখাতে হবে। জনগনের সব করে দিয়েছি। কিচ্ছু বাকি নেই। তোমাকে জনগন অনেক দিয়েছে। এবার তোমার দেওয়ার পালা। কেউ বঞ্চিত হলে সেটা দেখার দায়িত্ব তোমার।"
অক্টোবর মাসে কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। যার মধ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বামুনগাছি এলাকাও ছিল। বৃষ্টি ও নর্দমার জল মিশে অনেক বাড়িতে জল ঢুকে যায়। হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা কেন জলমগ্ন? এই প্রশ্ন তোলেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। কাঠগড়ায় তোলেন তৃণমূলেরই পুরসভার নতুন প্রশাসক মণ্ডলীকে। এমনকী, নতুন বোর্ডের ব্যর্থতার অভিযোগে জমা জলে চেয়ার পেতে ধর্নায়ও বসে পড়েন তিনি। যা নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরে চাপানউতর শুরু হয়। কটাক্ষ করে বিজেপি।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'আগে ঠিক করুন কে কী ভুল করেছেন', প্রবীরের 'বেসুরো' প্রশ্নে তোপ দিলীপের
আরও পড়ুন: মমতার ধমকেই তড়িৎগতিতে কাজ, চিংড়িহাটায় দুর্ঘটনা রুখতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ পুলিসের