অনাথাশ্রমের 'লক্ষ্মী'কে বিয়ে করে নজির গড়লেন রাজীব
বছর ছয়েক আগে নাবালিকা অবস্থায় জলপাইগুড়ির অনুভব হোমে এসেছিলেন বাপ-মা হারা লক্ষ্মী।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ঘটকালি করলেন ডিএসপি। জলপাইগুড়ির অনুভব হোম ছেড়ে বিপ্লবের হাত ধরে হোম সুইট হোমে গেলেন লক্ষ্মী।
মাস দুয়েক আগে অনুভব হোমের কোর্ডিনেটর দীপশ্রী রায়ের কাছে আচমকাই ফোন করেন জলপাইগুড়ির প্রাক্তন ডিএসপি প্রভাত চক্রবর্তী। বলেন, তাঁর বন্ধুর ভাইয়ের জন্য হোমের এক পাত্রী চাই। রায়গঞ্জের বাসিন্দা পাত্র রাজীব পাল স্বাস্থ্য দপ্তরে করণিক পদে কর্মরত।
আরও পড়ুন, প্রেম করে বিয়ের ৬ মাসের দাম্পত্যেই চুরমার স্বপ্ন, পরিণতি মর্মান্তিক
প্রস্তাব পাওয়া মাত্রই আর দেরি করেননি দীপশ্রী রায়। সঙ্গে সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন লক্ষ্মীর কয়েকটি ছবি। দিন দুয়েক পর খবর আসে, পাত্রীর ছবি দেখে পাত্রের বাড়ির পছন্দ হয়েছে। তাঁরা মেয়ে দেখতে আসবেন। মেয়ে দেখে পছন্দও হয়ে যায় তাঁদের। ঠিক হয়ে বিয়ে হবে ১৬ অগাস্ট ২০১৮।
কে এই লক্ষ্মী?
বছর ছয়েক আগে নাবালিকা অবস্থায় জলপাইগুড়ির অনুভব হোমে আসেন বাপ-মা হারা লক্ষ্মী। এরপরে হোমে থেকেই পড়াশোনা। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও যথেষ্ট পারদর্শিতার পরিচয় রাখেন লক্ষ্মী। ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট পান। রান্নাতেও পটু। বর্তমানে জলপাইগুড়ি কর্মতীর্থে অনুভব হোমেরই রেস্তরাঁ চালাচ্ছিলেন লক্ষ্মী। পাশাপাশি ড্রাইভিং ও বিউটিশিয়ান কোর্সও করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন, বোলেরোর ভিতর তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ, উদ্ধার ৬০ লাখি লেপার্ড গোকো
এমন লড়াকু মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে গর্বিত পাত্র রাজীবও। রাজীব জানিয়েছেন, "আমার বরাবরই ইচ্ছে ছিল সহায়-সম্বলহীন কোনো মেয়েকে বিয়ে করব। কারণ এরা ফেলনা নয়। এরা সমাজে যোগ্য মর্যাদা পাওয়ার দাবিদার। তাই এই বিয়ে। লক্ষ্মী কোনও অংশে কারোর থেকে কম নয়।"
আরও পড়ুন, মূত্রনালীতে টিউমার! হাতে গ্লাভস পরে নিজেই পেট কাটলেন বৃদ্ধ, তারপর...
বর, সংসার পেয়ে খুব খুশি লক্ষ্মীও। একদিন সে সব হারিয়ে অনুভব হোমে এসেছিলেন। আজ নিজের সংসারে পা রাখছেন। দুচোখে এখন অনেক স্বপ্ন লক্ষ্মীর।