Teesta Flash Flood: 'যদি দেহটা ভেসে আসে,' বোনের অপেক্ষায় তিস্তায় ঠায় তাকিয়ে দাদা!
বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ সাইরেনের আওয়াজ ও মাইকিং শুনে বাচ্চা কোলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তৈয়বা। দেওরকে সঙ্গী করে শ্বশুরকে ঘরের বাইরে আনতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে যান ৩ জন-ই।

অরূপ বসাক: সিকিম বিপর্যয়ে এখনও নিখোঁজ ১০২ জন। সেই নিখোঁজদের খোঁজে পরিবারের সদস্যরা একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছেন গজলডোবায় তিস্তা নদীর দিকে। যদি জলের স্রোতে ভেসে আসে দেহ...বোনের খোঁজে গজলডোবায় শিলিগুড়ি দার্জিলিং মোড়ের বাসিন্দা প্যায়ারে খান। বোন তৈয়বা খাতুন সিকিমের রংপোতে বসবাস করতো। বুধবার ভোর ৩টের সময় রংপো সেতুর নীচের বস্তিতে বসবাসকারী বোন তৈয়বা (২৪), ২৪ বছর বয়সী বোনের দেওর ও ৮০ বছর বয়সী শ্বশুর ভেসে যান তিস্তার জলস্রোতে। এরপর বাড়ির লোকজন বহু খোঁজাখুজি করেও তাঁদের কোনও খোঁজ পায়নি।
জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ সাইরেনের আওয়াজ ও মাইকিং শুনে বাচ্চা কোলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তৈয়বা। কিন্তু বৃদ্ধ শ্বশুর ঘরেই আটকে পড়েন। দেওরকে সঙ্গী করে শ্বশুরকে ঘরের বাইরে আনতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে যান ৩ জন-ই।নিখোঁজ তৈয়বা-র দাদা প্যায়ারে খান বলেন, সিকিমের রংপো সেতুর পাশে ৪০০ ছোটখাট ঘর ছিল। সেখানে বহু পরিবার থাকত। বুধবার ভোরের মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে সমস্ত ঘরবাড়ি ভেসে যায়। হাতে গোনা ৪০টি বাড়ি কোনওমতে রক্ষা পায়। তিনি বলেন, "আমার বোনের বাড়িতে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে মোট ৮ জন সদস্য ছিল। তার মধ্যে ৫ জন কোনও মতে বেঁচে গেলেও বাকি ৩ জনের এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।"
নিখোঁজদের আত্মীয় মুন্না খান বলেন, বুধবার সারাদিন রংপো এবং সেবকের আশপাশে খোঁজ চালিয়েও তাঁদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাড়ির অন্যান্য লোকজন গজলডোবায় এসে বসে আছে। যদি তাঁদের দেহ তিস্তায় ভেসে আসে। তবে বিকেল পর্যন্তও তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। বাড়ির লোকের বক্তব্য, প্রবল জলের স্রোতে ৩ জন-ই হয়তো তিস্তায় ভেসে গিয়েছে। অন্যদিকে, উত্তর সিকিমের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে নিখোঁজ ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের কাঠালগুঁড়ি চা বাগানের ২ শ্রমিকও। বিপর্যয়ে আটকে পড়েছে ওই এলাকার আরও ১৩ জন। নিখোঁজ ২ যুবকের নাম পঞ্চন ওঁরাও (৩৫), বাড়ি বিচ লাইন এলাকায় আর নিখোঁজ অজিত মুন্ডা (২৯)।
বৃহস্পতিবার কাঠালগুঁড়ি চা বাগানের দুই শ্রমিক নিখোঁজ, এই খবর আসতেই চা বাগান এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চা বাগান থেকে মোট ১৫ জন সিকিমে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন। কাঠালগুঁড়ি চা বাগানের ৪ জন একই ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত। ঘটনার দিন রাত থেকে কাঠালগুঁড়ির ২ জন শ্রমিকের খোঁজ মিললেও বাকি ২ জন নিখোঁজ। সিকিম থেকে বাকি ২ শ্রমিক জানিয়েছেন, নিখোঁজ ২ শ্রমিক জলে ভেসে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন, Sikkim Flash Flood | GLOF: নেপালে ভূমিকম্পের পরদিনই সিকিমে বিপর্যয়, GLOF-ই ডেকে আনল ধ্বংসলীলা!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)