Gangasagar: পুণ্যার্থীর ছই-দড়িতেই 'ঘর বাঁধছেন' সাগরের মানুষ...
Gangasagar: গঙ্গাসাগর মেলা থেকে অল্প টাকার জিনিস কেনার অপেক্ষা বহু মানুষের। এতে যেমন পড়ে থাকা সকল যত্রতত্র সরে যাচ্ছে তেমনই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মানুষদেরও উপকার হচ্ছে...
নকিব উদ্দিন গাজী: গঙ্গাসাগরকে কি আগের রূপে ফিরিয়ে আনতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে ভাবাচ্ছে সকলকে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু মানুষ ভাঙা মেলা থেকে অল্প টাকায় কিনে নিয়ে যাচ্ছে ছই, বাস, প্লাস্টিক যা দিয়ে বানাবে তাঁদের বাড়ি। এতে যেমন পড়ে থাকা সকল যত্রতত্র সরে যাচ্ছে তেমনই মানুষদেরও উপকার হচ্ছে।
গঙ্গাসাগর মেলা মানেই আবেগ আর ভক্তি মিলে মিশে একাকার, তাই মকর সংক্রান্তির পূর্ণ তিথিতে ডুব দিয়ে পুন্য সঞ্চয় করে মনের বাসনাকে পূরণ করে কপিলমুনি মন্দিরে পূজা দিয়ে, বাড়ি ফিরেছে প্রায় এক কোটিরও বেশি পুণ্যার্থীর দল। এই পুণ্যার্থীদের আসার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাজিয়ে গুছিয়ে তুলতে সময় লাগে প্রায় তিন মাস। একদিকে আলো অন্যদিকে ছই দিয়ে তৈরি করা হয় অস্থায়ী ঘর, যাত্রীশেডের ব্যবস্থা করা হয় ভিআইপিদের থাকার জন্য। মেলা শেষে প্রশাসনের আধিকারিক থেকে মন্ত্রী আমলা সবাই ফিরেছে যে যার বাড়ি। এখনোও আসছে বহু পুণ্যার্থী, কেউ কেউ এখনও ডুব দিচ্ছে গঙ্গাতে। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মেলার আবর্জনা, সেগুলোকে পরিষ্কার করতে ব্যস্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্বনির্ভর দলের মহিলারা। এছাড়াও ভাঙ্গা হচ্ছে ছই দিয়ে ঘেরা ছোট্ট ছোট্ট ঘরগুলি।
আরও পড়ুন: Digha: দিঘার সৈকতে সি ফিশের পসরা দেখে লোভ সামলাতে পারেন না? খাওয়ার আগে দু'বার ভাবুন...
গঙ্গাসাগরে অধিকাংশ সময় প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটার ফলে অনেকের বাড়ি যেমন ভাঙে তেমনি নদীর বাঁধও ভাঙে। জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চাষের জমি, বাড়ি। সেইসব অসহায় মানুষগুলো অপেক্ষা করে থাকে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য। মেলা শেষ হতেই কম পয়সা দিয়ে ছই, বাঁশ, যাবতীয় প্লাস্টিক কিনে বাড়ি তৈরি করার কাজ লাগায় সেই সব অসহায় দুস্থ মানুষেরা। কারণ মূলত গঙ্গাসাগরে সেভাবে সইয়ের ব্যবহার করা হয়না এবং পাওয়াও যায় না। কেবল গঙ্গাসাগরে মেলার সময় এগুলো পাওয়া যায় তাই কম দাম দিয়ে গঙ্গাসাগর এলাকার বেশ কিছু মানুষ, যাঁরা নদীর পাড়ে বাস করেন তাঁরা এইসব জিনিস কিনে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে কাজে লাগান। চাষের জমিতে বেড়ার কাজেও লাগে এই বাঁশের ছই। এখন সেগুলো ভাঙতে তাঁরা ব্যস্ত, অন্যদিকে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী গঙ্গাসাগরের যে প্লাস্টিক, ময়লা যত্রতত্ত্ব পড়ে আছে তা ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার করেন।
গঙ্গাসাগরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে এক সপ্তাহ সময় নিয়েছেন প্রশাসন, এমনটাই জানিয়েছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা, স্থানীয় বিডিওকেও সেই নির্দেশই দিয়েছেন যাতে এক সপ্তাহর মধ্যে মেলা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে ওঠে, আগের গঙ্গাসাগরকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন প্রশাসন। পাশাপাশি এবারে সম্পূর্ণ দুর্ঘটনা মুক্ত গঙ্গাসাগর মেলা সমাপ্তি হয়। কোথাও ছোট কিংবা বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যাচ্ছে, কেবল হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন পূর্নার্থীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, নির্বিঘ্নে গঙ্গাসাগর মেলা শেষ হওয়াতে খুশি পূর্নার্থী থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরা। আবার ২৬ এ নতুন করে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি শুরু করার চিন্তা ভাবনা করবে প্রশাসন।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)