#উৎসব: পুকুর থেকে প্রতিমা তুলে এনে পুজো হল প্রথম বছর
সেদিন ছিল হোগলা পাতার মণ্ডপ। প্রতিমা ছিল আকৃতিতে অনেক ছোট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাগবাজারের জগদ্ধাত্রী পুজো চন্দননগরের অন্যতম প্রাচীন এক পুজো। এ বছর এই পুজো ১৮৭ বছরে পদার্পণ করল। স্বাভাবিকভাবেই এই পুজোর সঙ্গে মানুষের গভীর আবেগ ও বিশ্বাস জড়িয়ে গিয়েছে।
চন্দননগর বাগবাজার এই এলাকার অন্যতম প্রাচীন এলাকা। এরই সংলগ্ন ছিল ফরাসি উপনিবেশ। সেই সময়ে বহুদিন ধরেই এখানে বেশকিছু দাস পরিবার বসবাস করত। অঞ্চলটি এমনিতে ছিল জঙ্গল, হোগলাবনে ভর্তি। এখানে যেসব দাস পরিবার বসবাস করত তাদের অবস্থা খুব ভাল ছিল না। এরই মধ্যে একটু সচ্ছল ছিল শ্রীধর দাসের পরিবার। তবে শ্রীধর অবস্থাপন্ন হলেও এলাকার মানুষের কাছে তিনি এক কৃপণ মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। স্থানীয়েরা বলত, তাঁর হাত থেকে নাকি পয়সা বের করা খুব কষ্টকর ছিল!
আরও পড়ুন: #উৎসব: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নায়েব ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাতে সূচনা হয়েছিল এই পুজোর
স্থানীয়রা অনেকদিন থেকেই শ্রীধরকে একটু জব্দ করার ফিকির খুঁজছিল। একবার জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়ে স্থানীয় কিছু যুবক রাতে তাঁর বাড়িতে জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বসিয়ে দিল। সকালে শ্রীধর ঘুম থেকে উঠলে তাঁর বাড়ির লোকজন তাঁকে জানাল, বাড়িতে কেউ বা কারা জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বসিয়ে দিয়ে গেছে! শুনেই চমকে ওঠেন শ্রীধর। পুজো করতে বিশাল খরচা হবে এই ভয়ে তিনি তড়িঘড়ি প্রতিমাটি পাশের এক পুকুরে ফেলে দিয়ে আসেন।
এদিকে পাড়ার ছেলেরা তো লক্ষ্যই রাখছিল শ্রীধরের বাড়ির দিকে। শ্রীধর প্রতিমা পুকুরে ফেলে দিয়েছে দেখে তারা একটু ভীতই হল। ভাবল, যদি দেবীর রোষে পড়তে হয়! তখন তারাই পুকুর থেকে প্রতিমাটি তুলে এনে নিজেরাই পুজো শুরু করে দিল। কালে কালে সেই পুজোই এই এলাকার অন্যতম প্রাচীন পুজোর মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।
সেই পুজোরই আজ ১৮৭ বছর। সেদিন ছিল হোগলা পাতার মণ্ডপ। প্রতিমা ছিল আকৃতিতে অনেক ছোট। আজ সেই পুজো বিশাল আকার ধারণ করেছে। আজ সেই পুজো দেখতে মানুষের ঢল নামে। দেবীপ্রতিমার বৈভব, মণ্ডপের সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা-- সবই এখন রীতিমতো জমজমাট। নবমীর দিন ভোগ বিতরণ হয় ভক্তদের মধ্যে। করোনা-আবহে গত বছর অবশ্য ঘটে পুজো হয়েছিল। এবার স্বমহিমায় ফিরে এসেছে প্রাচীন এই পুজো।
(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)
আরও পড়ুন: #উৎসব: 'মেজ মা'! রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সূত্রেই শুরু হয়েছিল এই জগদ্ধাত্রী আরাধনা