GAZA: একটু উষ্ণতার জন্য কাঁদছে গাজা, শীতে জমে বরফ হয়ে মরছে শিশুরা...
GAZA: হাইপোথার্মিয়া আসলে কী? হাইপোথার্মিয়া, সাধারণত নিম্ন শরীরের তাপমাত্রা হিসাবে পরিচিত, এমন একটি অবস্থা যেখানে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৬ ফারেনহাইট) এর নিচে নেমে যায়। এই চিকিৎসা জরুরী অবস্থা ঘটে যখন শরীর তাপ উৎপন্ন করার চেয়ে দ্রুত তাপ হারায়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছোট্ট সিলা, বয়স মাত্র তিন সপ্তাহ। সুস্থ-সবল ফুটফুটে কন্যা সন্তান। তীব্র ঠাণ্ডায় শীতল বালির উপর কাঁপতে কাঁপতে মায়ের উষ্ণ বুকে ঘুমোতে যায় সে। সেই রাতে তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছেঁড়া-ফাটা তাঁবু, শীতল বালি, ঠাণ্ডা হাওয়ার থেকেও সুরক্ষিত ছিল না তাঁবুটি। সেই অবস্থায় ছিল সদ্যোজাতটি। অবস্থা এত খারাপ যে শরণার্থী ক্যাম্পে একটিও কম্বল নেই। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি শরণার্থীশিবিরে। সেখানে বহু শরণার্থী এইভাবেই তীব্র ঠাণ্ডায় নিজেদের জীবন কাটাচ্ছেন। আর সেই কারণে হাইপোথার্মিয়ার মতন চরম সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আর সেই হাইপোথার্মিয়াতেই আক্রান্ত হয় ছোট্ট সিলা।
আরও পড়ুন: Dead after boat sinks: রোজ মৃত্যু হয় ৩০ জনের! ভয়ংকর এই জলপথ দিয়েই আসেন পরিযায়ীরা...
হাইপোথার্মিয়া আসলে কী? হাইপোথার্মিয়া, সাধারণত নিম্ন শরীরের তাপমাত্রা হিসাবে পরিচিত, এমন একটি অবস্থা যেখানে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৬ ফারেনহাইট) এর নিচে নেমে যায়। এই চিকিৎসা জরুরী অবস্থা ঘটে যখন শরীর তাপ উৎপন্ন করার চেয়ে দ্রুত তাপ হারায়।
মঙ্গলবার রাতে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়, তীব্র ঠাণ্ডার কারণে হাইপোথার্মিয়ার শিকার হয়ে যায় সিলা। রাতে তিনবার কাঁদতে কাঁদতে জেগে উঠেছিল সে। সিলার মা খুব চেষ্টা করেছিলেন। নিজের শরীরের সমস্ত উষ্ণতা দিয়ে গরম রাখার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না! সকালে তার মা-বাবা তাকে নিথর অবস্থায় খুঁজে পান। সিলার বাবা মাহমুদ আল-ফাসিহ জানান, ‘সে (সিলা) সুস্থ অবস্থায় জন্ম নিয়েছিল এবং স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তাঁবুতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তার শরীরের তাপমাত্রা এতটাই কমে যায় যে শরীরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। আমরা বালির উপর ঘুমাই। আমাদের কাছে যথেষ্ট কম্বল নেই এবং তাঁবুর ভেতরে ঠাণ্ডা অনুভব করি।'
গাজার (Gaza) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আল-বুরশ বলেন, ‘শিশুটি তীব্র ঠাণ্ডায় জমে মারা গেছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এই স্থানটি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ী নিরাপদ মানবিক এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান গাজায় ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়েছে, যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এই আক্রমণে গাজার ৯০ শতাংশ বাসিন্দা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা প্রায় ২৩ লাখ মানুষের সমান। শীতের ঠাণ্ডা ও বৃষ্টির মধ্যে শত শত মানুষ উপকূলবর্তী তাঁবু শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া ত্রাণ সংস্থাগুলো খাবার ও সরবরাহ পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে। কম্বল, গরম কাপড় ও জ্বালানি কাঠেরও সংকট দেখা দিয়েছে।
এইভাবেই তীব্র ঠাণ্ডায় মৃত্যু হচ্ছে গাজার বহু শিশুর। গত ৪৮ ঘণ্টায় শীতজনিত কারণে তিন দিন ও এক মাস বয়সী আরো দুটি শিশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। কিন্তু কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আল-ফাররা গাজার এক হাসপাতালের ডিরেক্টর তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের অন্যায্যতার ফল ও গাজা উপত্যকার মানুষের উপর এর প্রভাবের একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ এটি।’ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)