রাজতন্ত্রে লিঙ্গবৈষম্যের অবসান
ব্রিটেনে রাজপরিবারে কন্যাসন্তান পাবে রানি হওয়ার সমানাধিকার।
কেমব্রিজের ডিউক আর ডাচেসের প্রথম কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তিনিই বসবেন ব্রিটেনের সিংহাসনে। পরে যদি তাঁদের কোনও পুত্রসন্তানও হয়, তা হলেও ওই কন্যাই পাবেন অগ্রাধিকার। শুধু তা-ই নয়, এতদিন রোমান ক্যাথলিক সঙ্গী নির্বাচনে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা-ও প্রত্যাহার করে নেওয়া হল।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থে কমনওয়েলথ দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে ষোলোটি দেশের প্রতিনিধিরা সর্বসম্মত ভাবে এই দুটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে নিজেদের সম্মতি দিয়েছেন। ব্রিটেনের তিনশো বছরের উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী, এতদিন যে কোনো শাসকের প্রথম পুত্র সন্তানই সিংহাসনে বসতে পারতেন। একমাত্র পুত্র সন্তানের অনুপস্থিতিতেই বড় মেয়ে রানির মর্যাদা পাওয়ার অধিকারিণী হতেন। ঠিক যেমনটা ঘটেছিল ষষ্ঠ জর্জ অর্থাত্ এখনকার রানির বাবার ক্ষেত্রে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়ে বলেছেন, নতুন আইন ওয়েলসের যুবরাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আগের কোনও উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নয়। আর রোমান ক্যাথলিক সঙ্গী নির্বাচন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, যিনিই ক্ষমতায় বসুন না কেন, তাঁকে চার্চ অফ ইংল্যান্ডের সঙ্গেই কাজ করতে হবে। কারণ, আইন অনুযায়ী তিনি চার্চের প্রধানের পদেও আসীন হন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি ক্যাথলিক সঙ্গী নির্বাচন করতে পারবেন না। এই ধরনের চিন্তাভাবনা আধুনিক রাষ্ট্রের ধারণার পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন ক্যামেরন।
লিঙ্গবৈষম্যের এই শতাব্দীপ্রাচীন পরম্পরার অবসানে উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডও।
কিন্তু ব্রিটেনে যাঁরা নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষে সওয়াল করে আসছেন, তাঁরা এই পরিবর্তনে উচ্ছ্বাসের কিছুই দেখছেন না। তাঁদের অভিযোগ, এতে খুব একটা লাভ হবে না। উইন্ডসর পরিবারে যে নারী বা শিশু জন্মায়নি, তাঁরাই এখানে বৈষম্যর শিকার হন। উল্লেখ্য, শীর্ষ সম্মেলনের প্রারম্ভিক ভাষণে ব্রিটেনের উত্তরাধিকার আইন নিয়ে রানি সরাসরি কিছু না বললেও মহিলাদের যে সমাজে বড় ভূমিকা থাকা উচিত, সেই মন্তব্য করেছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ।