Casting Couch in Tollywood: ‘বন্ধুকে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা পরিচালকের' ওয়েব সিরিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন দর্শনা
Casting Couch in Tollywood: ২০১৭ সালে পরিচালক সুমন দাসের সঙ্গে কাজের সূত্রেই আলাপ তাঁর। অডিশনের জন্য তাঁকে সুমন গল্ফগ্রিনের একটি ঠিকানায় যেতে বলেন সেখানে পৌঁছে পূজা জানতে পারেন যে সেটা সুমনেরই ফ্ল্যাট। সেখানে তাঁর অডিশনও হয়। কিন্তু এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময়ই তাঁকে বাধা দেয় পরিচালক।
Casting Couch in Tollywood, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মি টু আন্দোলনে নাম জড়িয়েছে বলিউডের একাধিক পরিচালকের, নাম জড়িয়েছে টলিউডেরও অনেকের। এবার সেই তালিকায় নতুন নাম পরিচালক সুমন দাস। ছোটপর্দায় ‘নেতাজি’, ‘আয় তবে সহচরী’ থেকে সোমবার থেকে শুরু হওয়া নয়া ধারাবাহিক ‘সোহাগ জল’-এর পরিচালক সুমন। এবার তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনলেন মুম্বইয়ের মডেল পূজা কুলে। সোমবার ফেসবুক লাইভে পরিচালকের কুকীর্তির কথা সামনে আনেন পূজা।
পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে তাঁকে যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে বলে জানান পূজা কুলে। বজবজের মেয়ে পূজা টালিগঞ্জে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করত। তবে বর্তমানে তিনি মুম্বইয়ের বাসিন্দা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্তরের ম্যাগাজিনের জন্য ফটোশ্যুট করেন তিনি। বিভিন্ন ফ্যাশন শোয়েও অংশগ্রহণ করেন, হেঁটেছেন ল্যাকমে ফ্যাশন উইকেও। এদিন ফেসবুকে লাইভে পূজা জানান, ২০১৭ সালে পরিচালক সুমন দাসের সঙ্গে কাজের সূত্রেই আলাপ তাঁর। অডিশনের জন্য তাঁকে সুমন গল্ফগ্রিনের একটি ঠিকানায় যেতে বলেন সেখানে পৌঁছে পূজা জানতে পারেন যে সেটা সুমনেরই ফ্ল্যাট। সেখানে তাঁর অডিশনও হয়। কিন্তু এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময়ই তাঁকে বাধা দেয় পরিচালক। এক ঝটকায় পূজার হাত থেকে ফোন ফেলে দিয়ে তাঁকে চেপে ধরে বিছানায় ফেলে দেয় সুমন। পাশের ফ্ল্যাটে মিউজিকাল প্রোগ্রাম থাকার কারণে আরও বিপদে পড়েন পূজা। তবে এর জেরেই পূজার চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি।
আরও পড়ুন-Siddharth Malhotra-Kiara Advani: জানুয়ারিতেই বিয়ের পিঁড়িতে সিদ্ধার্থ-কিয়ারা?
যে ঘটনার কথা এদিন পূজা তুলে ধরেছেন তা কোনও চিত্রনাট্যের থেকে কম যায় না। সুমনের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে অন্য প্ল্যান করেন পূজা। তিনি সুমনকে বিশ্বাস করান যে তিনি কোথাও যাবেন না। এরপরই তার হাতে একটি গ্লাসে নেশার পানীয় দেন সুমন। যদিও সেই মদ ফেলে দেন পূজা। এরপরই টয়লেট যাওয়ার নাম করে একটি ঘরে নিজেকে আটকে ফেলেন পূজা। সারা রাত সেই দরজা ভাঙার চেষ্টা করতে থাকে সুমন। ভোরবেলা পূজা নিজেই সেই দরজা খোলেন। সেই সময় এক প্রতিবেশী মহিলা সুমনের ফ্ল্যাটে আসায় বেঁচে যান তিনি, এমনটাই দাবি পূজার। সেই সময় পূজাকে খুনেরও হুমকি দেন সুমন। পূজার দাবি তিনি যাদবপুর থানায় গেলেও তাঁকে সহযোগিতা করেনি পুলিস। তবে সুমনের বিরুদ্ধে এফআইআর দাবি করেছিল পূজা। সুমন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'আজ থেকে আমার নতুন সিরিয়াল শুরু হচ্ছে, আমি এই বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না।'
২০১৯ সালে গোটা ঘটনা জানিয়ে একটি লাইভ করেছিলেন পূজা, সোমবার ফের তিনি লাইভে এসে তাঁর তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান। ২০১৯ সালে অনেকেই পরিচালক সুমন দাসের খপ্পরে পড়ে খারাপ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তাঁকে মেসেজ করেছিলেন, এমনটাই দাবি পূজার। পূজা অবার যে এখনও ইন্ডাস্ট্রিতে রমরমিয়ে কাজ করে চলেছেন এই পরিচালক। তবে সবাইকে সচেতন করতে ফের ফেসবুক লাইভে এসেছিলেন তিনি। ‘গভীর জলের মাছ’-এ লুক সেটে গিয়ে অভিনেত্রী দর্শনা বণিক জানতে পারেন যে, সুমন দাস তাঁর পরিচালক। তখনই সেই প্রজেক্ট থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি। প্রযোজক সাহানা দত্ত দর্শনার কথায় বিশ্বাস করেই খোঁজখবর শুরু করে জানতে পারেন যে, সুমন দাসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন নয়। তাঁর বিরুদ্ধে এখনও আদালতে মামলা চলছে, সেই রায় বার হয়নি। এরপরই নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে তাঁকে সম্পূর্ণরূপে ব্যান করেছেন তিনি।
জি ২৪ ঘণ্টার তরফে দর্শনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'যদিও ওনার সঙ্গে আমার আগে কোনও কাজ হয়নি বা দেখাও হয়নি কখনও। কিন্তু পূজার কাছে শুনেছিলাম ওর সঙ্গে উনি কী অন্যায় করেছে। আমি নিঃশব্দে বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছি। ওনার সঙ্গে কোনরকম কথা বলিনি। লুক সেট কোনওরকমে শেষ করে সাহানাদিকে সংক্ষেপে বিষয়টা জানাই আর দুঃখের সঙ্গে বলি, এই কাজ করতে পারব না। আমি ওঁকে বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলাম, হাত-পা কাঁপছিল। সাহানাদি বোঝে, উনি আমায় স্নেহ করেন, উনি বলেন তুই বন্ধুর জন্য ঠিক করেছিস।আমরা পরে কাজ করব তাড়াতাড়ি। এরপর আমি বেরিয়ে আসি। তারপর পূজাকে ফোন করে সবটা জানাই। ও কাঁদবে না হাসবে,বুঝতে পারছিল না। ফোনে দুজনেই কাঁদি সেদিন। তারপর এক কাছের বন্ধুর বাড়ি যাই। তাঁকে গিয়ে সবটা বলি, সে ছেলে হলেও এটা শুনে কেঁদে ফেলে আর আমায় বলে আমি তোর জন্য গর্বিত।