হারিয়ে গেল পথের পাঁচালি
প্যারিস থেকে খোয়া গেল পথের পাঁচালির চিত্রনাট্য। পথের পাঁচালির চিত্রনাট্যর প্রথম কপি ও সত্যজিত রায়ের নিজের হাতে আঁকা কিছু ছবি রাখা ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম চলচ্চিত্র আর্কাইভ প্যারিসের সিনেমাটিক ফ্রান্সিসে। সেখান থেকেই হঠাত্ হারিয়ে গেছে পথের পাঁচালির চিত্রনাট্য।
প্যারিস থেকে খোয়া গেল পথের পাঁচালির চিত্রনাট্য। পথের পাঁচালির চিত্রনাট্যর প্রথম কপি ও সত্যজিত রায়ের নিজের হাতে আঁকা কিছু ছবি রাখা ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম চলচ্চিত্র আর্কাইভ প্যারিসের সিনেমাটিক ফ্রান্সিসে। সেখান থেকেই হঠাত্ হারিয়ে গেছে পথের পাঁচালির চিত্রনাট্য।
বুধবার কলকাতার সোসাইটি ফর দ্য প্রিজারভেশন অফ সত্যজিত রায় আর্কাইভ প্যারিসের সিনেমাটিক ফ্রান্সিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপরই রায় সোসাইটির প্রধান অরূপ কে দে বলেন, "দু:খের সঙ্গে জানাচ্ছি সিনেমাটিক ফ্রান্সিস থেকে পথের পাঁচালির চিত্রনাট্যর কপিটি খোয়া গেছে। আধুনিক চলচ্চিত্রের সবথেকে সম্মানীয় পরিচালকের প্রতি এই ঔদাসীন্যে আমরা সত্যিই মর্মাহত। এখন আশা রাখছি যেন চিত্রনাট্যটি চুরি না হয়ে গিয়ে থাকে। হারিয়ে গিয়ে থাকলে যেন কোনও না কোনও দিন যেন খুঁজে পাওয়া যায়। " খবরে মর্মাহত সত্যজিত রায়ের পরিবারও।
দুমাস আগেই অপ্রত্যাশিত ভাবে রায় সোসাইটির তরফে পথের পাঁচালির চিত্রনাট্য প্যারিস থেকে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। সূত্রে খবর, গত অক্টোবর মাসে এক জার্মান চিত্র পরিচালক সত্যজিত রায়ের প্রয়াত জীবনীকার মেরি সেটনের সুপারিশ দিয়ে কলকাতায় রায় সোসোইটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সত্যজিত রায়ের ওপর তথ্যচিত্র বানানোর জন্য ১৯৫৫ সালে ন্যূনতম বাজেটে তৈরি পথের পাঁচালির চিত্রনাট্যর কপির খোঁজ করেছিলেন মেরি। যেহেতু ষাটের দশকের শুরুতেই সত্যজিত রায় নিজেই সিনেমাটিক ফ্রান্সিসে চিত্রনাট্যটি দান করে দেন তাই সোসাইটি থেকেই ওই পরিচালককে সিনেমাটিক ফ্রান্সিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এরপরই তিনি রায় সোসাইটিকে চিঠি লিখে জানান সিনেমাটিক ফ্রান্সিস পথের পাঁচালির সব নথিই হারিয়ে ফেলেছে। পরে রায় সোসাইটি থেকে সিনেমাটিক ফ্রান্সিসে ফোন করে খোঁজ নেওয়া হয়।
এর আগে ১৯৯২ সালে সত্যজিত রায়ের মৃত্যুর কিছুদিন আগে উনি সিনেমাটিক ফ্রান্সিসের কাছে পথের পাঁচালির স্ক্রিপ্টটি চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। তখনই সিনেমাটিক ফ্রান্সিস জানায় সেগুলো হারিয়ে গেছে। সত্যজিত রায় অসুস্থ থাকায় তাঁকে তখন সেই খবর জানানো হয়নি। এরপর ১০ বছর আগে ফের একবার সন্দীপ রায় সিনেমার স্ক্রিপ্টের খোঁজ করেছিলেন। তখনও তাঁকে একই জবাব দেয় সিনেমাটিক ফ্রান্সিস।
পথের পাঁচালির মূল চিত্রনাট্যর সঙ্গে এই প্রথম স্ক্রিপ্টের প্রায় কোনও মিলই ছিল না। প্রযোজকদের কাছে তাঁর ভাবনা ব্যক্ত করতে সত্যজিত রায় একটি ছোট নোটবুকে স্কেচ বানিয়ে কিছু সংলাপ লিখেছিলেন। সেইসঙ্গেই আরও একটা খাতায় ছবির কিছু বিশেষ দৃশ্যর ছবিও এঁকেছিলেন তিনি। তার মধ্যে অপু, দুর্গার রেলগাড়ি দেখার দৃশ্যও ছিল।