অজান্তেই রেস্তোরাঁর সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে এই বিষ খাচ্ছেন আপনিও
খাবেরর সুগন্ধ আর স্বাদ বাড়াতে রেস্তোরাঁয় খাবারে এই উপাদান মেশানো হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নুন বা চিনির মতোই একটি সাদা স্ফটিক পাউডারের মতো একটি উপাদান রাস্তার ধারের ফাস্ট ফুডের দোকানগুলোতে বা রেস্তোরাঁয় খাবারের সঙ্গে মেশাতে দেখেছেন অনেকেই। এই চিনির মতো বা একটি সাদা স্ফটিক পাউডারের মতো দেখতে উপাদানটিকে কি বলে জানেন? যাঁরা বলবেন ‘আজিনামোটো’, তাঁরা ঠিকই আন্দাজ করেছেন। তবে আজিনামোটো একটি ব্র্যান্ডের নাম, উপাদানটি হল মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট। খাবেরর সুগন্ধ আর স্বাদ বাড়াতে রেস্তোরাঁয় খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট মেশানো হয়। পুষ্টিবিদদের মতে, সামান্য পরিমাণে হলে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট তেমন ক্ষতিকারক নয়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় এই উপাদান শরীরে গেলে তা মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, সারা বিশ্বে প্রায় ২ লক্ষ টন সোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহার করা হয়। প্রসেসড চিপস, প্যাকেজড স্যুপ, টিনজাত খাবারে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহার করা হয়। প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে তাতে মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা এমএসজি (MSG) কতটা ব্যবহৃত হয়েছে। নিউট্রিশন ও মেটাবলিজমের জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে বিশেষজ্ঞদের দাবি, শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের শরীরে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে এমএসজি। মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট-এর প্রভাব সরাসরি পড়ে হৃদযন্ত্রের উপর, বাড়ে হৃদরোগের আশঙ্কা। বুকে ব্যথা শুরু হয়। হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। এমএসজি-র কু-প্রভাব পড়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের শরীরে। এই সময় শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম গেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় আর তার প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ শিশুর ওপর। এ ছাড়াও অতিরিক্ত এমএসজি শরীরে ঢুকলে নানা রকমের বিপাকীয় সমস্যা শুরু হতে পারে। আসুন এ বার শরীরে অতিরিক্ত মনোসোডিয়াম গ্লুটামেটের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
১) সোডিয়াম গ্লুটামেটের অত্যধিক ব্যবহারে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির অকার্যকারীতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন এবং স্ট্রোক ও অন্যান্য ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।
২) সোডিয়াম গ্লুটামেট খাবারকে আরও স্বাদযুক্ত করে তোলে এবং আমাদের জিভের গ্রহীতাগুলিকে প্রভাবিত করে। এই কারণেই ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার সমস্যা দেখা যায়।
৩) অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্লুটামেট শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
৪) খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত পরিমাণ সোডিয়াম গ্লুটামেট শরীরে গেলে বাড়তে পারে মাইগ্রেনের সমস্যা। এরই সঙ্গে তীব্র মাথা ব্যাথা, পেশীর শক্ত হয়ে যাওয়া, অসাড়তা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব-সহ নানা রকম শারীরিক অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।