Abhishek Banerjee, 21 July: একুশে জুলাইয়ের আগেই দলীয় কর্মীদের কড়া নির্দেশ অভিষেকের!
পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর এখন পাখির চোখ ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। আর তার আগে এটাই শেষ একুশে জুলাই। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নিয়ে নতুন কী কর্মসূচি ঘোষণা করেন, নতুন কী বার্তা দেন, সেই দিকেই তাকিয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
প্রবীর চক্রবর্তী ও অয়ন ঘোষাল: 'পঞ্চায়েত জিতে বসে থাকা চলবে না। সামনে আরও বড় লড়াই। রাস্তায় নেমে পড়তে হবে। কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে। গোটা অগাস্ট মাস-ই রাস্তায় থাকবে দল। সেপ্টেম্বরে হবে দিল্লি অভিযান।' একুশে জুলাইয়ের আগেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে কড়া বার্তা অভিষেকের। রাত পোহালেই একুশে জুলাই। তার আগে বুধবার বিভিন্ন ক্যাম্প, যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তৃণমূল কর্মীদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, পরিদর্শনে যান। সেই ক্যাম্পে গিয়েই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর এখন পাখির চোখ ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। আর তার আগে এটাই শেষ একুশে জুলাই। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নিয়ে নতুন কী কর্মসূচি ঘোষণা করেন, নতুন কী বার্তা দেন, সেই দিকেই তাকিয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। একুশে জুলাইয়ের সভার জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী সমর্থকরা কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন। তাদের জন্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গা যেরকম আলিপুর উত্তীর্ণ, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্ক সহ একাধিক স্থানে ক্যাম্প করে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করা হয়েছে মেডিকেল ক্যাম্পও।
কসবা গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম
কসবা গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের গ্যালারির নীচের অংশকে যেমন আলাদা করে ৪ ভাগ করা হয়েছে। ২টি ভাগ সংরক্ষিত মালদহ জেলার জন্য। বাকি ২টি মুর্শিদাবাদ জেলার জন্য। সব মিলিয়ে এই ২ জেলার মোট ১২ হাজার দলীয় কর্মী সমর্থকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখানে। রয়েছে মাস কিচেন। এককালীন ৬০০ জনের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ২টি মেডিক্যাল ক্যাম্প। তাতে ২ জন করে চিকিৎসক ও ৪ জন করে স্বাস্থ্যকর্মী। আছে ৪টি মোবাইল চার্জ হাব। যার এক-একটিতে একসঙ্গে ৬০টি করে মোবাইল চার্জ দেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে আগামিকাল গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম থেকে মেয়ো রোড ক্রসিং পর্যন্ত কর্মী সমর্থকদের শাটল সিস্টেমে পৌঁছে দিতে ৩১টি বাসেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র
ওদিকে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে যেমন ডিম-ভাতের পাশাপাশি, ৩ জেলার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের জন্য গরম গরম লুচি-আলুরদমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে ৪ পিস করে লুচি সঙ্গে আলুরদম। যা বাকি শিবিরগুলি থেকে আলাদা করেছে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রকে। লুচির সঙ্গে দুপুরের মেন্যুতে রয়েছে ভাত, ডাল, শাকের তরকারি, মিক্স ভেজ সবজি এবং ডিমের কারি। কিচেনের ভিতরে মূল পাচক হিসেবে কাজ করছেন ৮ জন। সহকারী হিসেবে আছেন আরও প্রায় জনা ১৫। এখানেও মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া এবং উত্তর দিনাজপুর জেলা থেকে আগত মোট ১২০০০ কর্মী সমর্থকের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন হাজার চারেক। অন্যান্য শিবিরের মত এখানেও রয়েছে মেডিক্যাল ক্যাম্প।
করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্ক
করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্কে যেমন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার এবং দার্জিলিং- ৬ জেলার ৩০ হাজার কর্মীর থাকা-খাওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। প্রতি জেলার জন্য একেকটি পৃথক হ্যাঙ্গার। ক্যাম্পে মেগা কিচেন প্লাস ডাইনিং হল। একেকবারে সেখানে ২০০০ মানুষকে খাবার সরবরাহের জন্য ২০টি করে কাউন্টার। ডাইনিং ছাউনিতে ৪০০০ মানুষের বসে খাওয়ার জায়গা। মেডিক্যাল ক্যাম্প ২ টো। দিবারাত্র ডেডিকেটেড অ্যামবুল্যান্স তৈরি আছে ২০টা। অগ্নি নির্বাপক মোটরবাইক ১২টি। এসি সেমিনার হল ১ টা। এসি মিটিং রুম ১ টা। এককালীন ১২০০ জনের স্নানের ব্যবস্থা। ৫০০ অস্থায়ী বায়ো টয়লেট। দৈনিক ২০০০ শিশুর জন্য যারা কর্মী পরিবারের সঙ্গে এখানেই আছে, তাদের মাথাপিছু প্রতি বেলায় হাফ লিটার করে দুধের পাউচ, দৈনিক ২০০০ লিটার দুধের ব্যবস্থা।
শিয়ালদা-হাওড়া
ওদিকে শিয়ালদা-হাওড়া স্টেশনেও কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ট্রেন থেকে নামা অগণিত দলীয় কর্মী সমর্থকের জন্য কর্পোরেট ধাঁচে আয়োজন করা হয়েছে কলকাতার দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রবেশ পথ শিয়ালদহ স্টেশনে। উত্তরবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে দলের ফলাফল অত্যন্ত আশাব্যাঞ্জক। তাই এবার উত্তরবঙ্গ থেকে বিগত ২-৩ বছরের তুলনায় অনেক বেশি কর্মী সমর্থক একুশের সভায় যোগ দিতে আসবেন বলে অনুমান তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের। তাই স্টেশনের মেইন এগজিট গেটের দু-প্রান্তে তৈরি হয়েছে বিশাল ২ সামিয়ানা। একটিতে আছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যার মধ্যে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ির জনপ্রতিনিধিরা আছেন। এটি কন্ট্রোল রুম। আরেকটি শিবিরে আছেন দল নিযুক্ত ভল্যান্টিয়াররা। যারা কর্মী সমর্থকদের বাসের নম্বর দিচ্ছেন। জানিয়ে দিচ্ছেন, তাদের থাকার ব্যবস্থা কোথায় করা হয়েছে। সেইমতো শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ৫০টি বাসের মধ্যে যে কোনও একটিতে উঠে পড়ছেন তাঁরা। একইরকমভাবে হাওড়া স্টেশনেও আসতে শুরু করেছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তাঁদের সবার জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তর হাওড়ার দুটি জায়গায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে। মেনুতে থাকছে, ভাত, ডাল, আলু-পটলের তরকারি ও ডিম।
আরও পড়ুন, Kolkata: বাবার মৃত্যুতে বাড়ি বিক্রি করে হোটলে? রুমে মা-মেয়েকে পাওয়া গেল ভয়ংকর অবস্থায়!