TMCP Foundation Day: 'এটা আসলে বংশ পরম্পরা...', ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর বিরোধিতা নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক
TMCP Foundation Day: পঞ্চায়েত ভোটে নিয়ে অভিষেক বলেন, পঞ্চায়েতে যে লড়াই দিয়েছি আগামী দিন আরও বড় লড়াই দিতে হবে। ইতিমধ্যেই আপনারা দেখেছেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত আওয়াজ উঠেছে জিতেগা ভাই জিতেগা..
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর তোড়জোড় শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এই সিসিটিভি বসানো নিয়ে পড়ুয়াদের একাংশের আপত্তি রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে এনিয়ে নাম না করে সিপিএমকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পিছনে ২ কারণ! কেন এত ব্যাপক অভিঘাত?
আপনারাই বিচার করুন, যারা কথায় কথায় হাইকোর্টে যায়, সিসিটিভি লাগানোর কথা বলে তারাই বলছে কলেজ চত্বরে সিসিটিভি লাগানো যাবে না। এটা আসলে বংশ পরম্পরা। এদের দাদুরা ছিল কমপিউটারের বিরুদ্ধে, এদের বাবারা ছিল ইংরেজির বিরুদ্ধে, ছেলেরা হয়েছে সিসিটিভির বিরুদ্ধে। আর আমরা সিসিটিভি লাগাবোই। কোনও পড়ুয়ার প্রাণ আগামী দিনে যাবে না। লড়াইটা আগামিদিনে কীভাবে লড়তে হয় তা আমরা বুঝে নেব। দলনেত্রীকে বলল, আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনার কেশাগ্র স্পর্শ্ব করার ক্ষমতা বিজেপির নেই।
অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের দাবি, চিকিত্সার জন্য বাইরে গিয়েছিলাম। সংবাদমাধ্যমে এমন হাওয়া তোলা হল যে আমি আর ফিরব না। আমার পদবি মোদী নয়, আমার পদবি চোকসি নয়, আমার পদবি মাল্য নয়। আমার পদবি বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা মাথা উচু করে লড়তে পারি। মাথা নীচু করে, বশ্যতা স্বীকার করে বাঁচতে শিখিনি। যে খবরের কাগজ পড়ে আমরা বড় হয়েছি সেইসব কাগজে এখন মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে। ভুলে গিয়েছিলাম, নামে যদি বাজার থাকে তাহলে সে তো বিক্রি হবেই। আর আনন্দের সঙ্গে বিক্রি হবে। মেরুদন্ড বিক্রি করে বশ্যতা স্বীকার করে বিক্রি হবে। আমি আবার বলছি ২০২০ সালে চেখে চোখ রেখে বলেছিলাম, আজও সংবাদমাধ্য়নমের বন্ধুদের চোখে চোখ রেখে বলছি আমার বিরুদ্ধে যদি প্রমাণ থাকে তাহলে ইডি সবিআই নয় একঠা ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করুন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে গিয়ে মৃত্যুবরণ করবে। আজও বুক ঠুকে একই কথা বলে গেলাম। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করা লোক। পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গা মেরে ভেঙে দিয়েও তাকে দমানো যায়নি। তোমারা আমাদের দমাবে? আমাদের ধমকে চমকে লাভ নেই। যে দিন বিদেশ থেকে ফিরেছি তার পরের দিনই ইডিকে পাঠিয়ে দিয়েছে রেইড করেছে। অফিস রেইড করেছে আর আমার কমপিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করে দিয়ে চলে এসেছে। সাত দিন পর সিবিআই রেইড করে যদি ওই ১৬টি ফাইল উদ্ধার করত তাহলে এই সংবাদমাধ্যমই বলতো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে এইসব লিস্ট উদ্ধার হয়েছে। আপনারা যারা মিডিয়া ট্রায়াল করেন, তদন্তে আপনাদের ধৈর্য নেই। আপনারা মানুষকে কলুসিত করেন। এটা র্যাগিং নয়? অরূপ বিশ্বাস একটু আগেই বলছিলেন র্যাগিং-মুক্ত ক্যাম্পাস। আমাদের সরকারই র্যাগিং-মুক্ত ক্যাম্পাস চালু করেছে। সরকার জানিয়ে দিয়েছে কোথাও কোনও র্যাগিং হলে আমাদের জানান।
পঞ্চায়েত ভোটে নিয়ে অভিষেক বলেন, পঞ্চায়েতে যে লড়াই দিয়েছি আগামী দিন আরও বড় লড়াই দিতে হবে। ইতিমধ্যেই আপনারা দেখেছেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত আওয়াজ উঠেছে জিতেগা ভাই জিতেগা....জিতেগা ভাই জিতেগা... পুরুলিয়ায় জিতছে কে? তৃণমূল আবার কে। যেভাবে স্বাধীনতা আন্দালনে মানুষ লড়াই করেছিল সেভাবেই মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার বুঝেছে তাদের অনেক ক্ষমতা। রিমোট কন্ট্রোলের বোতাম টিপে আমাদের টাকা আটকে দিয়েছে। এবার ইভিএমের বোতাম টিপে এদের জামানত বাজেয়াপ্ত করে দিতে হবে। গণতন্ত্রের শেষ কথা গণদেবতা বলে, কোনও নেতা বলে না। নবজোয়ারের সময় যারা বলেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢুকতে দেব না। বনগাঁয় আমাদের আটকাতে হয়েছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর আমাকে বনগাঁয় ঠাকুরনগরে ঢুকতে দেয়নি। বলেছিল অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে মন্দিরে ঢুকতে হবে। আমি বলেছিলাম এক জবাব মানুষ দেবে। পঞ্চায়েতে নিজের বুথে হেরেছেন শান্তনু ঠাকুর। বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক নিজের বুথে হেরেছেন। চমকানো নেতা দিলীপ ঘোষ নিজের বুথে হেরেছেন। কোচবিহারের বিধায়ক নিজের বুথে হরেছেন। আর এখনকার যিনি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে গ্রামটি দত্তক নিয়েছিলেন সেখানে সেই গ্রামে হেরেছেন। বিরোধী দলনেতা পুরভোটে নিজের বুথে হেরেছেন। যারা নিজের বুথে জিততে পারে না তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে হারাবে? আমি বলব নেত্রী পর্যন্ত পৌঁছানো তো দূরের কথা তৃণমূল ছাত্র ও যুব কংগ্রেসের সঙ্গে লড়ে দেখান।
অভিষেক আরও বলেন, সমাবেশের সাফল্য নির্ভর করে তার জমায়েতের উপরে। এবার এই সভায় যতদূর দেখা যায় ততদূর মাথা আর মাথা। কোচবিহারের দিনহাটা থেকে আমরা শুরু করেছিলাম তৃণমূলের নবজোয়ার। দু'মাস ছিলাম। কোচবিহার থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা যেখানেই গিয়েছি সেখানেই যেভাবে বন্ধুরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের পঞ্চায়েতের গড়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকটা সামনে থেকে লড়াই করে আমরা জিতছি। ১৯৭৮ এর পর থেকে এখনওপর্য়ন্ত যত পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে এবারের মতো বিরোধীরা এত বেশি মনোনয়ন বিরোধীরা দিতে পারেনি। এটা বিরল। ভারতের ইতিহাসে বিরল। সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধীরা তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছে। তার পরেই কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ গোটাটাই জোড়া ফুলময়। মানুষ প্রমাণ করেছে।