মঞ্চেই মহাজোট? বাংলায় বাম-তৃণমূল ছেড়ে 'একলা চলো'র ডাক কংগ্রেসের
এদিন পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈয়ের নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা।
মৌমিতা চক্রবর্তী
মহাজোটের বৈঠক হচ্ছে দিল্লিতে। চলতি মাসের ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডেও হাতে হাত ধরতে দেখা গিয়েছে বিরোধী নেতানেত্রীদের। অথচ কার্যক্ষেত্রে নিজেদের ভাগ ছাড়তে নারাজ কেউই। বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে জোট ভেঙেছেন রাহুল গান্ধী। পশ্চিমবঙ্গেও ভাঙা সংগঠন নিয়ে 'একলা চলো'র পথে কংগ্রেস। বামেদের সঙ্গেও জোট অনীহা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের। তৃণমূলকে নিয়ে যতটা আপত্তি কংগ্রেস নেতাদের, বামেদের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখাতে রাজি তাঁরা।
এদিন পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈয়ের নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। বৈঠকের নির্যাস, তৃণমূলের সঙ্গে জোট নৈব নৈব চ। তবে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু কোনওভাবেই আত্মসম্মান বিকিয়ে নয়। মোটের উপরে 'একলা চলো' নীতির পক্ষে সওয়াল করেছেন কিয়দংশ নেতা। তবে জেলা সভাপতিদের সঙ্গে কথা বলার পরই এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন গৌরব গগৈ। তাঁর কথায়, ''কর্মীরা তৃণমূলের হিংসার শিকার। তাদের সঙ্গে কোনও আপোষ নয়''। বামেদের সঙ্গে জোটের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছে রাজ্যের পর্যবেক্ষক। তবে জোটের দরজা খোলার রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন সোমেন মিত্র। একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁর বক্তব্য,''আমরা ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘুরব না। ২০১৬ সালের পর ওরা কেন আমাদের হাত ছাড়ল সেটা বলুক। ওদের কোনও নেতাই যোগাযোগ রাখেনি''।
আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে চাইছেন নেতারা। আগামী দিনে বাম-কংগ্রেস জোটের তাই সম্ভাবনা থাকছে। প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে দিল্লিতে মহাজোটের বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যে কারও সঙ্গে জোটে যেতে চাইছে না তৃণমূল। একাই লড়াই করবে তাঁর দল।
আরও পড়ুন- বিদায় ব্রিটিশ সুর, মোদীর জমানায় প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে 'শঙ্খনাদ'
সদ্য আনুষ্ঠানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে নিয়েও এরাজ্যে প্রচার চালাতে উত্সাহী কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেক্ষেত্রে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা একই সভায় থাকতে পারেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের ব্রিগেডে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন সনিয়া ও রাহুল গান্ধী। কিন্তু প্রদেশ নেতৃত্বের আপত্তিতে পত্রবার্তা দিয়েই দায় সারেন 'মা-বেটা'। ব্রিগেডে জনসভায় হাইকম্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে এসেছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। পরে সাংবাদিক বৈঠকে খাড়গে স্পষ্ট করেছিলেন, জাতীয়স্তরে মহাজোট থাকলেও রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সিদ্ধান্ত প্রদেশ নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- স্বাধীনতার পর প্রথমবার প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজির আইএনএ
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মহাজোটের নেতাদের একমঞ্চে, বৈঠকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে অথচ নির্বাচনী সমঝোতায় নেই তাঁরা। এভাবে চললে মহাজোটের নেতানেত্রীদের সদিচ্ছা নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বাধ্য বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।