Mamata Banerjee: কাজে 'ফাঁকি'তে কড়া মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী আইন প্রয়োগের হুঁশিয়ারি!
'যাঁরা কাজে ফাঁকি দিচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে', নবান্নে বৈঠকে নির্দেশ মুখ্যসচিবকে।
সুতপা সেন: কাজে 'ফাঁকি'তে এবার কড়া মুখ্যমন্ত্রী! 'দরকারে কেন্দ্রীয় আইনের ৫৬ ধারা প্রয়োগে'র হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। মুখ্যসচিবকে নির্দেশ, 'যাঁরা কাজে ফাঁকি দিচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে'। সূত্রের খবর তেমনই।
সূত্রের খবর, ২০ জানুয়ারি থেকে রাজ্যে ব্লকে ব্লকে শুরু হবে সরকারি কর্মসূচি। চলবে ১২ ফ্রেরুয়ারি পর্যন্ত। এদিন নবান্নে মুখ্যসচিব-সহ বিভিন্ন দফতরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন ব্লকে গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান করবেন সরকারি অফিসাররা। প্রয়োজনে ছুটি বাতিলেরও নির্দেশ দেন তিনি।
মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, 'একাংশের সরকারী কর্মচারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন। বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন'। ডিএ-র প্রসঙ্গ তুলে তাঁর আরও বক্তব্য, 'কেন্দ্রীয় হারে ডিএ চাইলে, কাজও তেমন করতে হবে। কেন্দ্রীয় আইনে সরকারি কর্মচারীদের বরখাস্তের বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় আইনের ৫৬ ধারা প্রয়োগ করতে হবে'।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: রাজ্যে 'সংহতি মিছিলে'র বিরুদ্ধে এবার হাইকোর্টে শুভেন্দু!
চুপ করে থাকেননি ডিএ আন্দোলনকারী। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, '৫৬ জে ধারা, সেটা কিন্তু আইপিএস ও আইএস ক্যাডারের জন্য তৈরি করা কেন্দ্রের একটা আইন। চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কোনও বিধান নেই'। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি, ভয় দেখিয়ে কর্মচারীদের আন্দোলনকে দমাতে পারবেন না। আর আপনি যে সুড়সুড়িটা দিচ্ছেন, মানুষের সঙ্গে কর্মচারীদের বিভেদ তৈরি করার, সেই জায়গাটাও কাজ করবে না। আপনি যদি বরখাস্ত করতে পারেন, জেনে রাখবেন তারজন্য আইন আদালত আছে। আপনাকে এক ইঞ্চিও জায়গা ছাড়তে প্রস্তুত নই'।
কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'জরুরি অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে, কোনও রাজ্য সরকার প্রশাসনকে টেনে নিয়ে যেতে পারে! সরকারি কর্মচারীরা প্রতারণা শিকার, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে পারছে না। স্যাটে হেরেছেন, সিঙ্গল বেঞ্চে হেরেছেন। ডিভিশন বেঞ্চে হেরেছেন। সুপ্রিম কোর্টে চলে গিয়েছেন'। তাঁর কথায়, 'আন্দোলন, প্রতিবাদ ধরনা তো অধিকারের মধ্যে পড়ে। তো সরকারি কর্মচারীরা যদি প্রতিবাদ করেন, তাহলে বরখাস্ত করে দেবেন! কেন্দ্রীয় হারে ডিএ চাইলে কেন্দ্রীয় আইন প্রয়োগ হবে! শেষের সেদিন বেশি দূরে নেই'।
মুখ্যমন্ত্রীকে 'অপদার্থ' বলে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম নেতা, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, 'মুখ্যমন্ত্রী যদি একথা বলেন, তাহলে ধরে নিতে হবে এতদিন ধরে সেই আইনটা কার্যকর করেননি, তাহলে তো তিনি নিজেই অপদার্থ! যদি সেনাপতি এমন অপদার্থ হয়, সময়মতো আইনমতো কাজ করতে পারে না, তাহলে সেই সেনাপতির ধমকিতে সেনা কর্মীরা বিচলিত হবে কেন'!
বিকাশের প্রশ্ন, 'সরকারি কর্মচারীরা কাজ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। যদি কোনও সরকারি কর্মচারী কাজ না করেন, নির্দিষ্টভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এতদিন করেননি কেন'?
এদিকে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের পাল্টা দাবি, 'সরকারি কর্মচারীদের জনমানসের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা থাকে। সরকারি কর্মচারীরা ১ তারিখে গুনে গুনে বেতনটা নেবেন, আর কাজ করবেন না আন্দোলনের নাম সরকারকে বিব্রত করবেন, সেটা তো দীর্ঘদিন ধরে হতে পারে না। তাহলে বলুন, যতদিন আন্দোলন করবেন, বেতন নেবেন না'।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)