ভোটের ভবিষ্যৎ কোথায়?
পাঁচ দফা নয়, বাহিনী সমস্যা মেটাতে পঞ্চায়েত ভোটকে চার দফায় করতে রাজি রাজ্য সরকার। প্রথম দফায় দোসরা জুলাই, জঙ্গলমহলের তিন জেলায় ভোট করানোর প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। চৌঠা জুলাই, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে ভোট করার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার। ছয়ই জুলাই নদিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে ভোট করার প্রস্তাব সরকারের।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা আজও কাটল না। বাহিনী জটিলতা কাটাতে আজ পঞ্চায়েত ভোট পাঁচদফায় করার প্রস্তাব দেয় হাইকোর্ট। রাজ্যের তরফে চার দফায় ভোট করার পাল্টা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও দফা বাড়ালেও বাহিনীর সমস্যা মিটছে না বলেই মনে করছে কমিশন। কমিশনের অভিযোগ, ভোটের প্রস্তাব নিয়ে সরকার তাদের সঙ্গে যে আলোচনা করেছে তাতে কোন দফায় কত বাহিনী পাওয়া যাবে সে বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলবে না। মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই হাইকোর্টে এ কথা জানিয়ে দেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী। এরপরেই দফা বাড়িয়ে বাহিনী সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। প্রথম দফার ভোটকে তিন দফায় ভেঙে মোট পাঁচ দফায় ভোট করানোর প্রস্তাব দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। প্রস্তাব ছিল ২,৪, ৬, ৮ ও ৯ জুলাই ভোট হোক।
আদালতের প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি তোলে রাজ্য ও কমিশন দু'পক্ষই। দু'পক্ষকে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশ পেয়ে মহাকরণে রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর নির্বাচন কমিশনের দফতরে যান মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। সে বৈঠকে সমাধানসূত্র বেরোয়নি। দুপুরে ডিভিশন বেঞ্চে চার দফায় ভোট করানোর প্রস্তাব দেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।
২ জুলাই প্রথম দফায় পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ভোট করানোর প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য। ৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায়, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ৬ জুলাই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নদিয়া, মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে ভোট করানোর। নয়ই জুলাই, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও দুই দিনাজপুরে ভোট করানোর প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ২ জুলাই। ওই দফায় ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছেন বহু প্রার্থী। এই পরিস্থিতিতে দফা বাড়ালে নতুন করে ভোটপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তা আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর মেলেনি বাহিনী সংক্রান্ত প্রশ্নেরও। কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যের প্রস্তাব মতো ভোট হলে প্রথম দফায় প্রয়োজন আটচল্লিশ হাজার ছশো ২৫ জন সশস্ত্র রক্ষী দ্বিতীয় দফায় প্রয়োজন, একলক্ষ একহাজার একজন সশস্ত্র রক্ষী তৃতীয় দফায় প্রয়োজন চৌষট্টি হাজার সশস্ত্ররক্ষী চতুর্থ দফায় প্রয়োজন চৌঁত্রিশহাজার পাঁচশো নয় জন রক্ষী।
কমিশনের দাবি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় জন্য প্রয়োজনীয় বাহিনী জোগাড় করা কোনও মতেই সম্ভব হবে না। প্রথম দফায় প্রয়োজনীয় রক্ষী সরবরাহের পরেও বাকি রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য খুবই অল্পসংখ্যক বাহিনী বাকি থাকবে, যে ঝুঁকি বাস্তবে নেওয়া সম্ভব কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বুধবার হাইকোর্ট এ নিয়ে কী রায় দেয় তার দিকেই তাকিয়ে সবপক্ষ।