আরজিকরে মদ্যপানের আসর, হিটার জ্বালিয়ে চলছে রান্না, ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় পর্দা ফাঁস
সরকারি হাসপাতালে চলছে মদ্যপান। সঙ্গে রান্না বান্না করে দেদার খানা পিনা। তাও আবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই। এই ছবি খোদ কলকাতার বুকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল আরজিকরে শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের মোচ্ছবের ছবি।
সরকারি হাসপাতালে চলছে মদ্যপান। সঙ্গে রান্না বান্না করে দেদার খানা পিনা। তাও আবার হাসপাতালের জরুরি বিভাগেই। এই ছবি খোদ কলকাতার বুকে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল আরজিকরে শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের মোচ্ছবের ছবি।
ভালো করে দেখুন। এই ছবি কোনও পানশালা বা রেস্তোঁরা বা কোন ঘরোয়া মজলিসের নয়। এই ছবি খাস কলকাতার বুকে প্রথম সারির এক সরকারি মেডিক্যাল কলেজের। হ্যাঁ। এই ছবি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। সন্ধে নামলেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বিশ্রামকক্ষে বসে যায় মদ্যপানের আসর। আসরে হাজির হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা। ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের অন ডিউটি অবস্থায় মদ্যপানের ছবি।
শুধু মদ না। মদের সঙ্গে রয়েছে রীতিমত ভুরিভোজের ব্যবস্থাও। রয়েছে মাছ, মাংসের হরেক রকম আইটেম। রান্নাবান্না হচ্ছে রেস্টরুমের মধ্যেই। বিপজ্জনকভাবে প্লাগপয়েন্টের সঙ্গে তার জড়িয়ে জ্বালানো হয়েছে দু`দুটি হিটার।
জরুরি বিভাগের স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশ্রামের জন্য এই ঘরটি বরাদ্দ। এর পাশের ঘরটিই আরজিকরের পুলিস ফাঁড়ি। পুলিসের নাকের ডগাতে বসেই দিনের পর দিন ধরে চলেছে এই ফূর্তি। জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের ট্রলিও রাখা থাকে এই ঘরেই। হাসপাতালে আসা রোগীরা ট্রলি পাননা। অথচ রোগীদের সেই ট্রলিতে বসেই নিয়মিত চলে মোচ্ছব।
দেখুন, রোগীদের বেড, ট্রলিতেই রাখা হয়েছে রান্না করা খাবার, মদের বোতল, গ্লাস। যারা নিয়মিত এই আসর বসান তারা কারা? ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেইসব ব্যক্তিদের ছবি। যাঁরা ধরা পড়লেন ২৪ ঘণ্টার গোপন ক্যামেরায়-
১. অমিতাভ রায়, আরজি করের আপার ডিভিশন ক্লার্ক। হাসপাতালের তৃণমূল কংগ্রেসকর্মী ইউনিয়নের নেতা।
২. রাজু মণ্ডল, হাসপাতালের কর্মী। ইনিও শাসকদলের কর্মী ইউনিয়নের সদস্য।
৩. অনিল মণ্ডল। জরুরি বিভাগের রোগীদের ট্রলি দেওয়ার দায়িত্ব তাঁরই। অথচ, ডিউটির সময় অনিল হাজির মদ্যপানের আসরে।
৪. দিলীপ কামতি, আরজি করের জরুরি বিভাগের কর্মী। বিশ্রামকক্ষে হিটার জ্বালিয়ে রান্নাবান্না, মদ কিনে আনা সবটাই দিলীপের দায়িত্বে।
৫. দিলীপ, অনিল দু`জনেই শাসকদলের কর্মী ইউনিয়নের নেতা অমিতাভ রায়ের ঘনিষ্ঠ।
৬. শিবপ্রসাদ চহ্বান ওরফে কালু। হাসপাতালের সাফাইকর্মী শিবপ্রসাদও শাসকদলের কর্মী ইউনিয়নের সদস্য সমর্থক।
যে ঘরে মদ্যপানের আসর বসেছে সেই ঘরের দেওয়ালেই ঝুলছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। শাসকদলের অনুগামী নেতাকর্মীরাই জমিয়েছেন আসর। তাই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর অস্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল অধ্যক্ষ থেকে সুপার সকলেই স্পিকটি নট।