Partha Chatterjee: পার্থর জামিনের আবেদন খারিজ, শুনানিতে উঠে এল বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গ
জমিনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ইডির আইনজীবীর আরও বক্তব্য ছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথম থেকেই প্রভাবশালী। তাঁকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তিনি তাঁর অ্য়ারেস্ট মেমোতে সাক্ষর করতে চাইছিলেন না। তাঁর কাছে যখন তাঁর একজন আত্মীয়র নাম জানতে চাওয়া হয় তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নাম বলেন
পিয়ালি মিত্র: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ হল ব্যাঙ্কশাল আদালতে। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে প্রভাবশালী তাও ফের একবার উঠে এল শুনানিতে। ফলে তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও মামলাকে প্রভাবিত করার সম্ভবানা উড়িয়ে দিল না আদালত। এইসব বিষয় মাথায় রেখেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ করলেন বিচারক।
আরও পড়ুন- বুমরা থেকে জাদেজার চোট নিয়ে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন চেতন শর্মা
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের শুনানিতে উঠে এল বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি দুটি তারিখের কথা উল্লেখ করেন। একটি হল ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। অন্যটি ১৯৫২ সালের ৬ অক্টোবর। তিনি বলেন এই দুটো দিনে দুই ব্যক্তি জন্মেছিলেন। একজন খুব বিখ্যাত এবং অন্যজন কুখ্যাত। একজন হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যিনি বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে নবজাগরণ ঘটিয়েছিলেন। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে একশো বছর এগিয়ে দিয়েছিলেন। অন্যদিক, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এতটাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছেন। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে একশো বছর পিছিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াও গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি সবক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে।
জমিনের বিরোধিতা করতে গিয়ে ইডির আইনজীবীর আরও বক্তব্য ছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথম থেকেই প্রভাবশালী। তাঁকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তিনি তাঁর অ্য়ারেস্ট মেমোতে সাক্ষর করতে চাইছিলেন না। তাঁর কাছে যখন তাঁর একজন আত্মীয়র নাম জানতে চাওয়া হয় তখন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নাম বলেন। টাকা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। সেক্ষেত্র কুন্তল ঘোষের নাম উঠে আসছে। কুন্তল একবার পার্থকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করেন ইডির আইনজীবী।
পার্থ চট্টোপাধ্যয়ের আইনজীবীরা আজ দুটি বিষয় বলার পরিকল্পান করেছিলেন। প্রথমত, এই মামলা থেকে পার্থকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। দ্বিতীয়ত জামিনের আর্জি জানানো হয়। পার্থর আইনজীবীরা জামিনের আর্জি জানাতে গিয়ে বলেন, এই যে মামলা হয়েছে সেটি আইটিসি অ্য়াক্টের মধ্যে পড়ে। সেক্ষেত্রে ইডির এই মামলার তদন্ত করার কথা নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে কোনও মানি লন্ডারিং হয়নি।
এদিন আদালতের তরফে বলা হয়, কেস ডায়েরিতে যে ধরনের তথ্য রয়েছে তাতে এটা বিশ্বাস করার জন্য যথেষ্ঠ যে অভিযুক্তের মানিলন্ডারিং সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। গত ৬ মাসের তদন্তে অভিযুক্তের ভূমিকা উঠে এসেছে এবং কেস ডায়েরির থেকে থাকা বয়ান থেকে তাঁর এই স্ক্যামের সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভবনা জোরাল হয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে অভিযুক্ত একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। ফলে তদন্ত প্রভাবিত করা এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে বিবেচনা করে আমি জামিনের সপক্ষে নই। ফলে পার্থ চট্টাপাধ্যায়ের জামিনের আর্জি খারিজ করা হল।