ধর্ষণের সময় কী পরেছিলেন ওঁরা, দেখানো হচ্ছে এই প্রদর্শনীতে

--প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারত হোক বা ব্রাসেলস, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটলে প্রথমেই আঙুল ওঠে ধর্ষিতার দিকে, তাঁর পোশাক-আশাক বা তাঁর চাল-চলনের দিকে। আর এই ধারণা যে কতটা ভুল, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে একটি প্রদর্শনী। পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত বেলজিয়ামের রাজধানী শহর ব্রাসেলস-এ চলছে এই প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘হোয়াট ওয়্যার ইউ ওয়্যারিং’ (What were you wearing)। এই প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হচ্ছে এমন ১৮টি পোশাক, যেগুলি আক্রান্তরা ধর্ষণের দিন পরেছিলেন।

এই প্রদর্শনীর টি-শার্ট, জিন্স, টপ, শিশুর ফ্রক— সব কটি পোশাকই যেন নীরবে একটাই প্রশ্ন করছে, ‘এর পরও বলবেন, ধর্ষণের জন্য এই পোশাকগুলোই দায়ি?’

পৃথিবীর বেশিরভাগ রক্ষণশীল মানুষের দাবি বা বিশ্বাস হল, নিগৃহীতা পোশাকই ধর্ষককে প্ররোচিত করেছে ধর্ষণের জন্য। ভারত, বাংলাদেশ-সহ পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে আজও একজন ধর্ষিতাকে নানা অসম্মানজনক, আপত্তিকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।

ব্রাসেলস-এ চলছে এই প্রদর্শনী।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার ধর্ষণের ঘটনায় আক্রান্তের পোশাক বা তার স্বভাব-চরিত্রের দিকেই আঙুল তোলা হয়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধ করেও রেহাই পেয়ে যায় প্রকৃত অপরাধীরা। ফলে তাদের অপরাধীদের এই ধরনের অপরাধ করার সাহস আরও বেড়ে যায়। গোটা পযথিবী জুড়ে বাড়তে থাকা নারী নির্যাতন আর ধর্ষণের ঘটনার জন্য মূলত দায়ি সমাজের এই মানসিকতা যা পরোক্ষে প্রশ্রয় যোগাচ্ছে এই অপরাধীদের। আর আমাদের বিচার-বিবেচনার এই প্রতিবন্ধকতার দিকটিই সযত্নে তুলে ধরা হয়েছে ব্রাসেলস-এর এই প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছে ৮ জানুয়ারি থেকে, চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই প্রদর্শনীর নাম, তার বিষয়বস্তু উপস্থাপনায় ভাবনার অভিনবত্ব ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে চতুর্দিকে। বিশ্বের একাধিক প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামেও জায়গা করে নিয়েছে ‘হোয়াট ওয়্যার ইউ ওয়্যারিং’!