গোয়ায় সরকার টেকাতে 'আয়ুর্বেদ চিকিত্সা'ই ভরসা বিজেপির
পর্রীকরের মতো তিনিও সংকট সামাল দিয়ে দেবেন বলেই মত বিজেপির।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় নবতম সংযোজন প্রমোদ সাওয়ান্ত। সোমবার গভীর রাতে তিনি শপথ নিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। আর তার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে আলোচনা।
পেশায় আয়ুর্বেদ চিকিত্সক প্রমোদ সাওয়ান্ত গোয়ার সেনকোয়েলিম বিধানসভার বিধায়ক। সেখান থেকে জিতেই বছর ৪৫-এর ওই বিজেপি নেতা ২০১৭ সালে গোয়া বিধানসভার অধ্যক্ষ হয়েছিলেন।
সেখান থেকে প্রমোদের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা বেশ অপ্রত্যাশিত। কিন্তু তিনি যে কতটা দলের আস্থাভাজন, তা বিজেপির এই সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: রাত ২টোয় শপথ নিলেন গোয়ার নতুন মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত
কারণ, গোয়ায় এতদিন শরিকি মতবিরোধ নিয়ন্ত্রণে রাখার কারিগর ছিলেন মনোহর পর্রীকর। সেই কারণেই তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার পর শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকে গোয়ায় বিজেপির সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিলেন।
তাই রবিবার মনোহরের পর্রীকরের প্রয়াণে গোয়ায় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছিল। সোমবার দিনভর দফায় দফায় বৈঠক করতে হয়। ময়দানে নামতে হয় বিজেপির গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নিতিন গড়কড়িকে।
শরিক দুই দল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি ও গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি উঠতে থাকে। কিন্তু বিজেপিও মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে নারাজ ছিল। ফলে সমস্যার সমাধান হতে রাত গভীর হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গোয়ার নয়া মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির প্রমোদ সাওয়ান্ত, শরিকি চাপে জোড়া ডেপুটি
তার পর বেছে নেওয়া হয় প্রমোদ সাওয়ান্তকে। রাজনৈতিক মহলের মত, শরিকদের মন বুঝে গোয়ার সরকার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলেই প্রমোদকে বেছে নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গোয়া বিধানসভার আসন সংখ্যা ৪০। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৪টি আসনে জিতেছিল। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির তিনজন, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির তিনজন ও তিনজন নির্দল বিধায়ক নিয়ে সরকার গড়েছিল বিজেপি।
আরও পড়ুন: পানাজির মিরামর সৈকতে পর্রীকরে শেষকৃত্য সম্পন্ন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়
গোয়া বিধানসভায় সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার ২১। বিজেপির সরকার হয়েছিল তার থেকে দু'জন বিধায়ক (২৩) নিয়ে। ফলে একক বৃহত্তম দল হিসেবে ১৬টি আসন পেয়েও বিরোধী আসনে বসতে হয়েছে কংগ্রেসকে।
কিন্তু সম্প্রতি দু'জন কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগ করেন। গত মাসে একজন বিজেপি বিধায়ক ফ্রান্সিস ডি'সুজা মারা গিয়েছেন। রবিবার প্রয়াত হলেন মনোহর পর্রীকর। ফলে এখন গোয়া বিধানসভার বিধায়ক সংখ্যা ৩৬ জন। তাই এখন ১৯ হল গোয়ার ম্যাজিক ফিগার। আর বিজেপি সরকার এখন ২১ জন বিধায়কের।
আরও পড়ুন: সাদামাঠা জীবন যাপনে গোটা দেশে নজির ছিলেন পর্রীকর, স্কুটারে করে যেতেন বিধানসভা
এই পরিস্থিতিতে গোয়ায় শরিকদের সঙ্গে মনোমালিন্য হলেই পদ খোয়াতে হতে পারে প্রমোদ সাওয়ান্তকে। ধাক্কা খেতে পারে বিজেপি। কিন্তু পর্রীকরের মতো তিনিও সংকট সামাল দিয়ে দেবেন বলেই মত বিজেপির।