পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও আলোচনার কথা হয়নি, পাক বিদেশমন্ত্রীর দাবি খারিজ করল দিল্লি
পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। তবে, জি় নিউজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খবরের কোনও সত্যতা নেই।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পাকিস্তানের দাবি নস্যাত্ করে দিল দিল্লি। শপথ নেওয়ার পরই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি দাবি করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়ে সদ্য প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া ইমরান খানকে একটি চিঠি দিয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছিল। তবে, জি় নিউজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই খবরের কোনও সত্যতা নেই।
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে, সেটি সেটি শুধুই শুভেচ্ছা বার্তা ছিল বলে দাবি কেন্দ্রের। সূত্রের আরও খবর, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ এবং সন্ত্রাসমুক্ত সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী ভারত, এই বার্তাই দেওয়া হয় চিঠিতে। কিন্তু কোনও আলোচনার কথা বলা হয়নি।
আরও পড়ুন- ধর্ম বদলেও শেষরক্ষা হল না, স্ত্রীকে ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টে ছত্তিসগঢ়ের 'হিন্দু' তরুণ
রবিবার পাকিস্তান তেহরিক –ই- ইনসাফের সহ-সভাপতি তথা বর্তমান পাক বিদেশমন্ত্রীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চিঠিতে শুভেচ্ছা বার্তা জানান ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তাঁর আরও দাবি, পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্যা সমাধানে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সুষমা স্বরাজও। ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী কুরেশি। তাঁর কথায়, পাকিস্তানও চায় পূর্ব এবং পশ্চিমের প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে উঠুক। শান্তির পথে আলোচনায় এগোতে চায় ইসলামাবাদ। আলোচনা ছাড়া কোনও বিকল্প পথ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান পিপলস পার্টির সরকারের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন মেহমুদ কুরেশি। ২০০৮ সালে বাণিজ্য নগরীতে যখন হত্যালীলা চলেছে, সে সময় দিল্লিতে ছিলেন তিনি। সেই কুরেশি ভারতের বিদেশমন্ত্রীকে সীমান্তে শান্তি রক্ষার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “দুই দেশ শুধুই প্রতিবেশীই নয়, পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রও। তাই শত্রুতা না রেখে সমস্যা সমাধানের জন্য দুই দেশকেই এগিয়ে আসতে হবে।” এই প্রসঙ্গে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথাও উল্লেখ করেন কুরেশি। লাহোর এবং ইসলামাবাদ পরিদর্শন করে পাকিস্তান ও কাশ্মীরের সমস্যাগুলি চিহ্নিত করেছিলেন তিনি। এবার কাশ্মীরের ক্ষেত্রে সেই পথেই মোদী সরকারকে এগোনোর বার্তা দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- অবশেষে মিলল হদিস, নীরব মোদী রয়েছেন ব্রিটেনেই
উল্লেখ্য, নির্বাচনে জয়ের পরই ইমরান খান শান্তি স্থাপনে প্রথমে ভারতকে এগিয়ে আসার কথা বলেন। তিনি জানান, সীমান্ত বা কাশ্মীর, যে কোনও ইস্যু নিয়ে আলোচনায় ভারত এক পা এগোলে, দু' কদম এগোবে পাকিস্তান। প্রসঙ্গত, প্রতি বার শান্তির বার্তা এসেছে ভারতের তরফ থেকেই। অটল বিহারী বাজপেয়ী থেকে নরেন্দ্র মোদী এক কদম এগিয়ে শান্তির বার্তা পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন সব ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রতিবারই শান্তি প্রক্রিয়ায় জল ঢেলেছে পাক সেনা। ক্ষমতায় আসার পর ‘অযাচিত অতিথির’ মতো পাকিস্তানে গিয়ে সৌজন্যবোধ দেখিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তারপরও পাঠানকোট হামলায় চিড় ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে। এরপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, ‘সন্ত্রাস এবং আলোচনা’ একসঙ্গে চলতে পারে না।