Cheeta: আফ্রিকা থেকে আসছে আধডজন চিতা, কোন জঙ্গলে দেখবেন ভয়ংকর সুন্দর!
১৯৪৭-৪৮ সাল নাগাদ ভারতের তিনটি চিতাকে হত্যা করেছিলেন কোরিয়ার মহারাজা। এই ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে একপ্রকার অবলুপ্ত হয়ে যায় চিতা। যার ফলে প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হয় ভারতের বাস্তুতন্ত্রও। শেষপর্যন্ত ১৯৫২ সালে ভারতের বুকে সরকারিভাবে অবলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চিতাকে। প্রায় ৭৫ বছর পর আবারও ভারতের বুকে শোনা যাবে চিতার পদধ্বনি, যা নিঃসন্দেহে খুশির খবর।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ব্যাঘ্রপ্রেমীদের জন্য সুখবর। ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি (NTCA) – এর অন্যতম প্রধান অধিকর্তা পি যাদব বলেছেন নামিবিয়া থেকে বেশকিছু সংখ্যক চিতাকে মধ্যপ্রদেশের শেওপুরের কুনো জাতীয় উদান্যে নিয়ে আসা হচ্ছে আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এনটিসিএ-র সচিব বলেন ‘আমরা মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদান্যের জন্য আটটি চিতা আনছি যার মধ্যে পাঁচটি মহিলা এবং তিনটি পুরুষ।‘আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কুনো জাতীয় উদান্যে এই চিতা প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই খবরে স্বাভাবিকভাবেই খুশির হাওয়া ভারতের পশুপ্রেমীদের মধ্যে। কুনো জাতীয় উদান্যের এই প্রচেষ্টার তারিফ করছেন তাঁরা।
সাক্ষাৎকারটি থেকে আরও জানা যাচ্ছে নামিবিয়া থেকে আটটি চিতাকে ভারতে আনার জন্য ভাড়া করা হয়েছে একটি কার্গো প্লেন। আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর সকালের মধ্যে ভারতে পৌঁছে যাবে চিতাগুলি। নামিবিয়ার রাজধানী উইকহোণ্ড থেকে চিতাগুলি প্রথমে আসবে ভারতের জয়পুর, তারপর তাদের নিয়ে আসা হবে পালপুরে। গোটা বিষয়টি সম্পূর্ণ করার জন্য তৈরি রয়েছে হেলিপ্যাডও, জানিয়েছেন পি যাদব।
পি যাদবের দাবি সম্পূর্ণ অন্য মহাদেশ থেকে চিতা আনার ঘটনাটি ঐতিহাসিক কারণ, ১৯৪৭-৪৮ সাল নাগাদ ভারতের তিনটি চিতাকে হত্যা করেছিলেন কোরিয়ার মহারাজা। এই ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে একপ্রকার অবলুপ্ত হয়ে যায় চিতা। যার ফলে প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হয় ভারতের বাস্তুতন্ত্রও। শেষপর্যন্ত ১৯৫২ সালে ভারতের বুকে সরকারিভাবে অবলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চিতাকে। প্রায় ৭৫ বছর পর আবারও ভারতের বুকে শোনা যাবে চিতার পদধ্বনি, যা নিঃসন্দেহে খুশির খবর।
পি যাদবের কথা অনুযায়ী চিতাগুলিকে ভারতে আনার পর তাদের ৩০ দিনের জন্য নিভৃতবাসে রাখা হবে, ব্যবস্থা করা হয়েছে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষারও। কুনো জাতীয় উদ্যান রীতিমতো সেজে উঠেছে তার নতুন অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। আটটি চিতার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রায় ৬ বর্গমিটারের একটি পৃথক স্থানের যার মধ্যে আবার রয়েছে ৯টি পৃথক এলাকা। তবে নতুন দেশের জলবায়ুর সঙ্গে চিতাগুলির মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন বাঘ সংরক্ষনের সঙ্গে যুক্ত এই অধিকর্তা। তিনি আরও বলেন চিতাগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠন করা হয়েছে ‘চিতা মিত্র’ নামের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল। যারা প্রায় সর্বক্ষণ নজরে রাখবে কুনো জাতীয় উদান্যের নতুন সদস্যদের। যখন দেখা যাবে চিতাগুলি নতুন পরিবেশে নিজেদের সম্পূর্ণ মানিয়ে নিয়েছে তখন তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে জঙ্গলে। এরইসঙ্গে চিতা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুনো জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ।