তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা মমতার! ২০১৯ নির্বাচনে অবিজেপি জোট জল্পনা তুঙ্গে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬ নির্বাচনের পর থেকেই দেশে একটি অবিজেপি জোট গডার পক্ষে সওয়াল করে আসছেন। এ নিয়ে কখনও আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আবার কখনও পতিদার নেতা হার্দিক প্যাটেলের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন : বিজেপির সর্বগ্রাসী উত্থান রুখতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চন্দ্রশেখর রাওয়ের টুইট, ২০১৯-এ বিজেপিকে ঠেকাতে আঞ্চলিক দলগুলির উচিত একজোট হয়ে কাজ করা। আর এই প্রস্তাবে সায় রয়েছে বলে তাঁকে ফোন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, টুইটারে দাবি রাও-এর।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সাল থেকেই। দেশজুড়ে পদ্মের উত্থান রুখতে বাম-কংগ্রেস-সহ একাধিক আঞ্চলিক দলের একজোট হয়ে লড়াই করার পক্ষে আলোচনা হয়েছে বারবার। তবে কথা উঠলেও, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জন্য সেই আলোচনায় ভাটার টানও পড়েছে বারবার। কিন্তু ত্রিপুরা নির্বাচনে বামেদের ভরাডুবির পর, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এই জোট জল্পনা আরও বড় হয়ে দেখা দিল।
আরো পড়ুন- চা বেচে মাসে ১২ লাখ রোজগার!
সোমবার কলকাতায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ফের একবার কেন্দ্রে অবিজেপি জোটের পক্ষে সওয়াল করেন। তবে, এই বিষয়ে পার্টি কংগ্রেসে আলোচনার পরই বামেদের অবস্থান স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তিনি। অন্যদিকে, রবিবার একটি আলোচনা সভায় কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ একটি মন্তব্য এই জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ভারতের মাটি থেকে বামেরা শক্তি হারালে তা দেশের জন্য ভয়ানক। ফলে, যে কোনও অবস্থাতেই বামেদের ক্ষয় রোধ করতে কংগ্রেস পাশে দাঁড়াবে বলেও মন্তব্য রমেশের। যদিও, কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের পক্ষ থেকে দলীয়ভাবে রমেশের এই মন্তব্যে সমর্থন জানানো হয়নি।
আরো পড়ুন- অবশেষে ফল ঘোষণা, ধনপুর আসনে জয়ী মানিক সরকার
এর মাঝে রবিবার চন্দ্রশেখর রাও ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে কথোপকথন অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই সঙ্গে জোটজল্পনাও আরও তুঙ্গে উঠেছে। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের দুটি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ইতিমধ্যেই হাত মিলিয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অখিলেশ ও মায়াবতী। অন্যদিকে, ত্রিপুরা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের ফল উল্লেখযোগ্য ভাবে খারাপ হওয়ার পর, নাম না করেই রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় একজোট হয়ে লড়াই করলে এই অবস্থা হত না দুটি দলের। বলাইবাহুল্য, ত্রিপুরায় ৫৯টি আসনের একটিতেও জয় পায়নি কংগ্রেস। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের মোট প্রাপ্ত ভোট শতাংশের বিচারে নোটার থেকেও কম।
আরো পড়ুন- সিপিএমের আত্মসমর্পণ ও কংগ্রেসের পলায়নই ত্রিপুরায় এই ফলের জন্য দায়ী: মমতা
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬ নির্বাচনের পর থেকেই দেশে একটি অবিজেপি জোট গডার পক্ষে সওয়াল করে আসছেন। এ নিয়ে কখনও আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল, আবার কখনও পতিদার নেতা হার্দিক প্যাটেলের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। তবে প্রশ্ন উঠছে, আঞ্চলিক দলগুলি শুধুমাত্র অবিজেপি জোটের কথা ভাবছে, না কি তালিকায় রয়েছে অকংগ্রেসি-অবিজেপি জোটও, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে একথা স্পষ্ট যে, ত্রিপুরা জয়ের পর বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়াকে রুখতে জোট বেঁধে ময়দানে নামার প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝছে প্রায় সবকটি বিরোধী দলই।