সুরের জলসাঘর ছেড়ে অচিনপুরের বাসিন্দা কিংবদন্তী মান্না দে
জীবনের জলসাঘর ছেড়ে চলে গেলেন মান্না দে। ৯৪ বছর বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে প্রয়াত হলেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে। রাত ৩টা ৫০ তাঁর মৃত্যু হয়। কিডনির সমস্যা ভুগছিলেন তিনি। ১৬০ দিন বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর পরলোকগমন করলেন মান্না দে। তাঁর মৃত্যুতে গোটা দেশজুড়ে শোকের ছায়া, সঙ্গীতমহল স্তব্ধ।
জীবনের জলসাঘর ছেড়ে চলে গেলেন মান্না দে। ৯৪ বছর বয়সে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে প্রয়াত হলেন প্রবাদপ্রতীম সঙ্গীতশিল্পী মান্না দে। রাত ৩টা ৫০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। বুকে সংক্রমনজনিত অসুখ ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। টানা ১৬০ দিন বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন মান্না দে। বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ধ্যক্যজনিত বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন তিনি। ৮ জুন বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
মৃত্যুশয্যায় মান্না দের পাশে ছিলেন তাঁর কন্যা ও জামাতা। গুণমুগ্ধরা যাতে প্রয়াত শিল্পীকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে পারেন সেজন্য তাঁর দেহ সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর রবীন্দ্র কলাক্ষেত্রে শায়িত থাকবে। এরপর আজ দুপুরেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। মান্না দে-র দেহ কলকাতায় আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন মান্না দে-র কন্যাকে। কিন্তু মান্না দে-র মরদেহ কলকাতায় আনতে রাজি হননি তাঁর পরিবার।
আসল নাম ছিল প্রবোধ চন্দ্র দে। সঙ্গীতজগতের কাছে পরিচিত ছিলেন মান্না দে নামেই। বাংলা ছাড়াও অসমিয়া,মারাঠি,মালয়ালম,কন্নড়,গুজরাতি,পঞ্জাবি, ভোজপুরি ভাষায় গান গেয়েছেন মান্না দে।
বিভিন্ন ভাষায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো গানে কন্ঠ দিয়ে শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে নিয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী৷ বাংলা সিনেমায় তাঁর গাওয়া অসংখ্য গান আজও মুখে মুখে ফেরে। মুম্বই চলচ্চিত্র জগতেও ছিল তাঁর সমান জনপ্রিয়তা। পেয়েছেন পদ্মশ্রী,পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। তবে সবথেকে বড় পুরস্কার, তাঁর অসংখ্য গুনমুগ্ধ ভক্ত, তাঁকে দিয়েছেন অকৃত্রিম ভালবাসা। আর তাই নিয়েই সঙ্গীতজগতের একচ্ছত্র সম্রাট বিদায় নিলেন। থেকে গেল একরাশ শূন্যতা। যা কোনদিনই পূরণ হওয়ার নয়।
বাবা - পূর্ণ চন্দ্র এবং মা - মহামায়া দে’র সন্তান মান্না দে ১ মে ১৯১৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা কলকাতার স্কটিশচার্চ ও বিদ্যাসাগর কলেজে৷ কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে- র কাছেই গানের হাতেখড়ি। এরপরই নজরে পড়ে যান শচীন দেববর্মনের৷ দিল্লিতে পা রাখেন ১৯৪২ সালে। ১৯৪৩ সালে তামান্না ছবিতে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন মান্না দে৷ বাকিটা ইতিহাস। ভারতীয় সঙ্গীতজগতে মান্না দে-র যুগ স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।