উত্তর প্রদেশই ঠিক করবে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? এটাই না কি মায়াবতীর জন্মদিনের ‘গিফট’!
গত শনিবার সপা-বসপা ৩৮টি করে সমান আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন মায়াবতী। কংগ্রেসকে জোটে নেওয়া তো দূর, পাশে থাকলে ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়
নিজস্ব প্রতিবেদন: ১৫ জানুয়ারি। প্রয়াগরাজে চলছে কুম্ভমেলার পূর্ণ্যস্নান। এ দিনই বহুজন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতীর জন্মদিনও। আশ্চর্য সমাপতন! এমন দিনেই উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিলেন, এ রাজ্যই ঠিক করবে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? ইঙ্গিত নিজের দিকে, না কি ‘ভাতিজা’ অখিলেশ, এ মুহূর্তে বলা কঠিন। কিন্তু মায়াবতী এটা স্পষ্ট করলেন, উত্তরপ্রেদেশ ঠিক করবে দিল্লির তখতে কে বসবেন।
আরও পড়ুন- কুম্ভমেলায় শুরু পূণ্যস্নান, ট্যুইটে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
৬৩-তে পড়লেন মায়াবতী। পুরনো তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে সপা-বসপা কর্মীদের জয়ের স্বাদ দেওয়াটাই তাঁর জন্মদিনের ‘সেরা গিফট’ বলে মনে করছেন মায়াবতী। এ দিন বসপা সুপ্রিমো বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের মুখে জন্মদিন পালন করছি। বিজেপিকে ধরাশায়ী করাটাই একমাত্র লক্ষ্য। সপা-বসপা জোট করেছে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্যে।” তাঁর কথায়, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, উত্তর প্রদেশেই ঠিক করবে। এটাই তাঁর জন্মদিনের সেরা গিফট হবে।
গত শনিবার সপা-বসপা ৩৮টি করে সমান আসনে লড়ার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন মায়াবতী। কংগ্রেসকে জোটে নেওয়া তো দূর, পাশে থাকলে ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়। শুধুমাত্র আমেঠি ও রায়বেরিলি ওই দুটি কেন্দ্র কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। স্বভাবতই জল্পনা থাকছে, ৮০ টি লোকসভা আসনে সবচেয়ে বেশি নিজেদের দখলে রাখলে প্রধানমন্ত্রী দৌড়ে কে এগিয়ে থাকবেন? মায়াবতী না অখিলেশ? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অখিলেশ হাল্কা হেসে জবাব দেন, উত্তর প্রদেশ থেকে অনেকেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আপনারা জানেন আমি কাকে সমর্থন করছি। ‘বুয়ার’ দিকে তাকিয়ে ‘বাবুয়া’ বলেন, যদি ফের উত্তর প্রদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার ওঠে, তাহলে ভীষণ আনন্দিত হব। অখিলেশের মন্তব্যে খুশির ঝলক দেখা যায় মায়াবতীর মুখেও।
আরও পড়ুন- জওয়ান গাইলেন “সন্দেশে আতে হ্যায়”, আবেগে ভাসল দেশবাসী
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের যে কোনও সিদ্ধান্তে মায়াবতীর উপরই বেশি ভরসা করছেন অখিলেশ। দিল্লিতে বিরোধীদের মহাজোট নিয়ে বৈঠকে মায়াবতী যোগ না দিলে, ওই বৈঠকে বিরত থাকেন অখিলেশ-ও। গোরক্ষপুর-ফুলপুরের লোকসভা উপনির্বাচনে মায়াবতীর হাত ধরেই জয়ের স্বাদ পেয়েছেন অখিলেশ। গত লোকসভায় কংগ্রেসের হাত ধরে যে ভাবে ভরাডুবি হতে হয়েছিল, এ বারে ভোটের বৈতরণী পেরোতে বুয়ার হাত ধরা ছাড়া কোনও উপায় দেখছেন না ভাতিজা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তবে, রাজনীতিতে একটা প্রবাদ আছে, উত্তর প্রদেশ যার, দিল্লি তারই। অর্থাত্ গোবলয়ের রাজ্যগুলি থেকে সপা-বসপা ভাল ফল করলে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণে মায়া-অখিলেশই নির্ণায়ক শক্তি হতে পারেন, এ কথা এক কথায় মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিজ্ঞরাও।