সাংসদ-বিধায়কদের আইন চর্চায় বাধা নেই : সুপ্রিম কোর্ট
ভারতের সংসদীয় রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে অ্যারিস্টোক্র্যাসি-ব্যারিস্টোক্র্যাসির ঐতিহ্য। এবার সেই পরম্পরায় ছেদ চেয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন খোদ আইনজীবী-রাজনৈতিক নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: আইনপ্রণেতাদের পেশাদারি আইন চর্চায় কোনও বাধা নেই। বিধায়ক বা সাংসদ হলেও গায়ে শামলা চড়িয়ে এজলাসে তাঁরা দাঁড়াতেই পারেন, এক জনস্বার্থ মামলার রায় দিতে গিয়ে মঙ্গলবার এ বিষয়টি স্পষ্ট করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন যাতে জনপ্রতিনিধিদের পেশাদারি আইন চর্চা থেকে বিরত রাখা হয়। কিন্তু, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই জনস্বার্থ মামলাটি এদিন খারিজ করে দেয়। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ চলতি বছরের ৯ জুলাই এই মামলার রায় দান স্থগিত রেখেছিল।
ভারতের সংসদীয় রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে অ্যারিস্টোক্র্যাসি-ব্যারিস্টোক্র্যাসির ঐতিহ্য। সেই গান্ধী-নেহেরুর আমল থেকে আজকের অরুণ জেটলি-কপিল সিবাল- সরকার, সংসদ ও রাজনীতির অলিন্দে বিগত সাত দশক ধরে অতিগুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলে আসছেন একাধিক পেশাদার আইনজীবীরা। অথচ এবার সেই পরম্পরায় ছেদ চেয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন খোদ আইনজীবী-রাজনৈতিক নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। কিন্তু, কেন? আরও পড়ুন- ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্তদের ভোটে লড়া রুখতে আইন করতে হবে সংসদকেই: সুপ্রিম কোর্ট
অশ্বিনীর হয়ে ওকালতি করতে গিয়ে প্রবীণ আইনজীবী শেখর নাফাড়ে বলেন, আইনপ্রণেতারা জনগণের করের টাকা থেকে বেতন গ্রহণ করেন। ফলে, তাঁরা বেতনভুক কর্মী। আর বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, বেতনভুক কর্মীরা কখনও পেশাদারি আইন চর্চা করতে পারেন না। এ জন্য গণতন্ত্রের দুই স্তম্ভ তথা আইন প্রণয়ন ও বিচার উভয় বিভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাঁদের আরও দাবি, একজন সরকারি কর্মচারীর যখন পেশাদারি আইন চর্চার অধিকার নেই, তাহলে সাংসদ/বিধায়করা কেন এই সুযোগ পাবেন? এর ফলে সংবিধানের সাম্যের অধিকারও ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে আবেদন করা হয়। এছাড়া, যেহেতু সাংসদদের হাতে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ইমপিচ করার ক্ষমতা রয়েছে, তাই তাঁরা পেশাদার আইন চর্চা করলে সমস্যা হতে পারে বলেও দাবি করেন অশ্বিনী কুমার। আরও পড়ুন- নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
আবেদনকারীর পক্ষে এমন যুক্তি শুনে আদালত বলে, যে কোনও চাকরির মধ্যে একটা প্রভু-ভৃত্যের ধারণা থাকে। কিন্তু, ভারত সরকার কোনওভাবেই আইনপ্রণেতাদের প্রভু নয়। উল্লেখ্য, এর আগেও এই মামলার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের মতামত জানতে চায়। কেন্দ্র আদালতকে বলে, সাংসদ বা বিধায়করা জনপ্রতিনিধি এবং কোনওভাবেই সরকারের পূর্ণ সময়ের কর্মী নয়। কেন্দ্রের সেই অবস্থান স্মরণে রেখেই এদিন সুপ্রিম কোর্ট অশ্বিনী উপাধ্যায়ের আবেদন খারিজ করে দিল।