নাগাল্যান্ডের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন রাজনাথ সিং

বৃহস্পতিবার রাতে  নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির গণপিটুনিতে মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াংয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাও বলেছেন তিনি।

Updated By: Mar 6, 2015, 05:45 PM IST
  নাগাল্যান্ডের ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন রাজনাথ সিং

ইম্ফল: বৃহস্পতিবার রাতে  নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির গণপিটুনিতে মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াংয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাও বলেছেন তিনি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এই মুহূর্তে প্রতিবেশী রাজ্য অসম থেকে অতিরিক্ত বাহিনী পৌছে গেছে ডিমাপুরে। এই মুহূর্তে ডিমাপুরের পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও কথা বলেছেন টি আর জেলিয়াংয়ের সঙ্গে। মৃত, ফরিদ খান আদতে অসমের করিম গঞ্জের বাসিন্দা।

ডিমাপুরে জারি হয়েছে কারফিউ। এখনও পর্যন্ত সেখানে নতুন করে কোনও হিংসাত্মক ঘটনার খবর নেই।

জেলিয়াং জানিয়েছেন এই ঘটনার জন্য উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিরাপত্তার গাফিলতি সহ এই ভয়াবহ ঘটনা সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নাগাল্যান্ডের পুলিসের ডিরেক্টর জেনেরল জানিয়েছেন উন্মত্ত জনতার আয়তন এতটাই বেশি ছিল যে সেখান থেকে প্রকৃত অপরাধীকে সনাক্তকরণ বেশ কঠিন। তাঁর দাবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে।

গতকাল, জেল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণকারীকে পিটিয়ে মারে উন্মত্ত জনতা। ধর্ষণের প্রতিবাদে সকালে বিরাট সমাবেশ হয় ডিমাপুরে। এরপরই কয়েক হাজার ছাত্র ও সাধারণ মানুষ জোর করে ঢুকে পড়ে ডিমাপুর সেন্ট্রাল জেলে। অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে বেধড়ক  মারধর।  পরে পথেই মৃত্যু হয় অভিযুক্তের।

চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি নাগাল্যান্ডের এক মহিলাকে বারবার  ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বছর ৩৫ বছরের ওই যুবকের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিস। এরপর থেকেই অভিযুক্তের ঠাঁই হয় ডিমাপুর সেন্ট্রাল জেলে।

বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার প্রতিবাদে বিরাট সমাবেশ হয় ডিমাপুরে।  সমাবেশের পর হঠাতই ডিমাপুর সেন্ট্রাল জেলে জোর করে ঢুকে পড়ে সমাবেশে অংশ নেওয়া কয়েক হাজার ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। সেখান থেকে অভিযুক্তকে  ছিনিয়ে নিয়ে  বিবস্ত্র করে চলে বেধড়ক মারধর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শূণ্যে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পুলিস। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাসও। যদিও তাতেও পরিস্থিতি আয়ত্তে আসেনি। শহরের প্রাণকেন্দ্র ক্লক টাওয়ারে জনসমক্ষে অভিযুক্তকে  ফাঁসিতে ঝোলানোর পরিকল্পনা ছিল বিক্ষুব্ধ জনতার। একটি গাড়িতে বেঁধে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্তকে। যদিও গন্তব্যে পৌছনোর আগেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের। ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭ টা নাগাদ জরুরি বৈঠকে বসেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।  জনতার নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। একইসঙ্গে গোটা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অনুপস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তা ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। জোর করে জেলে ঢুকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়া সময় জেলে বন্দি বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়ে গেছে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিস।

ডিমাপুরে অ-নাগা জনসংখ্যা বেশ বেশি হওয়ায় এই ঘটনার প্রভাব সুদূর প্রসারী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

.