প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে অনড় সুষমা, সুর চড়াল কংগ্রেসও
কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে সংসদের অচলাবস্থা কাটাতে বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজকে ফোন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। কিন্তু তাতেও বরফ গলল না। উল্টে সরকারের বিরোধিতায় সুর চড়ালেন সুষমা। কয়লা বল্ক বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে আবার সুষমা স্বরাজের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার।
ফোনেও বরফ গলল না। কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে সংসদের অচলাবস্থা কাটাতে বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজকে ফোন করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। কিন্তু তাতেও অধিবেশন জট খুলল না। উল্টে সরকারের বিরোধিতায় সুর চড়ালেন সুষমা। কয়লা বল্ক বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে আবার সুষমা স্বরাজের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুষমা স্বরাজ 'কোলগেট'কে ভারতের 'ইতিহাসের সর্ববৃহৎ দুর্নীতি' বলে কাটাক্ষ করেন। পাশাপাশি, এই দুর্নীতির দায় স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী।
এদিনের বৈঠকে সুষমা স্বরাজ বলেন,'কেন্দ্রীয় সরকার কয়লা ব্লক বণ্টন নিয়ে তাড়াহুড়ো করেছে'। ব্লক বণ্টন নিয়ে কোনও রকম নিয়ম মানা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিরোধীদের প্রবল চাপে গত দু'সপ্তাহ ধরে সংসদের উভয়কক্ষে বাদল অধিবেশনের কাজ কার্যত স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। বিরোধীদের বারবার আলোচনায় যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েও কোনও রফাসূত্র বের করতে পারেনি কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই জট কাটাতে বিরধী নেত্রীকে বিদেশ থেকে ফোন করতে বাধ্যই হন খোদ সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু এখনই কংগ্রের ওপর চাপ বজায় রাখার রাজনীতি থেকে সরে আসতে নারাজ সুষমা। আজকের বৈঠকে সংসদের অচলাবস্থা কাটানোর জন্য দু'দফা শর্ত আরোপ করা হয়েছে বিজেপির তরফে। ২০০৫ থেকে ২০০৮ এর মধ্যে বণ্টন হওয়া কয়লা ব্লক গুলি বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন সুষমা। সেইসঙ্গে, এই দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুক কেন্দ্র। এমনটাই দাবি বিজেপি নেত্রীর।
অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীর এই অনড় অবস্থানে সোমবার সংসদ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ৭ সেপ্টেম্বর সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিল, নিরপেক্ষ তদন্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিজেপি পথে নামবে বলেও রবিবার জানান সুষমা স্বরাজ, রবিশঙ্কর প্রসাদরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ দিনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁদের বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। বিক্ষোভ দেখানো হয় শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়ালের বাড়ির বাইরে।
বিজেপির চাপের মুখে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেসও। কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মন্ত্রিগোষ্ঠী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে বাতিল করার জন্য যে ব্লক বণ্টন করা হয়নি, সে কটাক্ষও করেছেন তিনি। মণীশ তিওয়ারি আবার ব্লক বণ্টন প্রসঙ্গে ছত্তিসগড়ের মতো বেশ কয়েকটি বিজেপি-শাসিত রাজ্যকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন। বিজেপি নেত্রীর দাবি খারিজ করে দিয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পবন বনসল বলেছেন, "কয়লা ব্লক বাতিল করার প্রশ্নই ওঠে না"। অচলাবস্থা কাটিয়ে বিরোধীদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্যও আবেদন জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে বিজেপি যখন অনড়, এই অবস্থায় সোমবার সংসদে বিজেপি কী অবস্থান নেয় তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এরমধ্যে কিছুটা তত্পর হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। কয়লার বণ্টন হওয়া যেসব ব্লকগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেগুলি বাতিলের জন্য কয়লামন্ত্রক তত্পর না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসার সময়সীমা নিদির্ষ্ট করা হয়েছে। গত এপ্রিলেই ৫৮টি অব্যবহৃত ব্লকের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। অথচ, ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি।