জাহির খান নন, শাস্ত্রীর কথা মতো ভরত অরুণই ভারতীয় দলের বোলিং কোচ
ওয়েব ডেস্ক: সৌরভদের কমিটিকে দশ গোল দিলেন রবি শাস্ত্রী। ভরত অরুণের ওপর বিসিসিইয়ের সিলমোহর আদায় করেই নিলেন বিরাটদের হেড স্যার। সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গাঙ্গুলি, ভিভিএস লক্ষ্মণদের পছন্দের জাহির খান ভারতীয় দলের বোলিং কোচ হচ্ছেন না। ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তকে কার্যত নকআউট করে দিয়ে নিজের পছন্দের ভরত অরুণকেই ভারতীয় দলের বোলিং কোচ করে ছাড়লেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের নব নিযুক্ত হেড স্যার রবি শাস্ত্রী। এর সঙ্গে ভারতীয় দলের সহকারী কোচ হিসেবে নিযুক্ত করা হল সঞ্জয় বাঙ্গারকে। আর ফিল্ডিং কোচ হলেন হল রামকৃষ্ণন শ্রীধর। অর্থাৎ, এখন থেকে বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের চার জন মাস্টারমশাই হলেন, রবি শাস্ত্রী (কোচ), সঞ্জয় বাঙ্গার (সহকারী কোচ), ভরত অরুণ (বোলিং কোচ) এবং আর শ্রীধর (ফিল্ডিং কোচ)।
এদিন সাংবাদিক সন্মেলন করে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচিং স্টাফদের নাম ঘোষণা করে দেয় বিসিসিআই। ভারতের শীর্ষ আদালত কর্তৃক নিযুক্ত 'দ্য কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস'-এর সেক্রেটারি অমিতাভ চৌধুরী মঙ্গলবার জানিয়ে দেন, "রবি শাস্ত্রী, সঞ্জয় বাঙ্গার, ভরত অরুণ, আর শ্রীধরের সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি করছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। আগামী ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই কোচিং স্টাফদের নিয়েই গোটা কাজ সম্পাদনা করবে ভারতীয় ক্রিকেট দল"। বিসিসিআইয়ের এই ঘোষণার পর ভারতীয় দলের নব নিযুক্ত হেড স্যার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আমি নিজের কাছে খুবই পরিষ্কার। আমার কোর টিম কী হবে আমি জানি। এবার এটাই আপনারা জানছেন"। এরই সঙ্গে ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে শাস্ত্রী বলেন, "আমি ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁরা আমাকে ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে যোগ্যতম বলে মনে করেছেন এবং আমার ওপর দায়িত্ব সঁপেছেন, এই কারণে আমি সিএসি'র কাছে চিরকৃতজ্ঞ"।
জাহির খান এবং রাহুল দ্রাবিড় প্রসঙ্গে, রবি শাস্ত্রী বলেন, "এটা সম্পূর্ণভাবে তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। কে কতটা সময় ভারতীয় দলের জন্য দিতে পারছেন, সেটাই আসল প্রশ্ন। তবে তাঁদের (জাহির খান এবং রাহুল দ্রাবিড়) যেকোনো পরামর্শকেই গুরত্ব সহকারে গ্রহণ করবে দল"। পড়ুন- শাস্ত্রীকে কোচ করা নিয়ে আপত্তি ছিল সৌরভের: সূত্র
উলেখ্য, রবি শাস্ত্রী প্রথম দিন থেকেই জাহির খানের বদলে ভরত অরুণকেই ভারতের বোলিং কোচ হিসেবে চেয়ে এসছেন। উল্টোদিকে সৌরভরা চেয়েছিলেন জাহিরকেই বোলিং কোচ করা হোক, সেইমতো ঘোষণাও হয়ে যায়। কিন্তু রবি শাস্ত্রী নিজের আপত্তির কথা জানান বিসিসিআইকে। "কোচই তাঁর কোচিং স্টাফ বেছে নেওয়ার অধিকার পায়", শাস্ত্রীর এই দাবিতেই বিসিসিআই জাহির খান এবং রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে চুক্তি আটকে দেয়। বলা হয়, বিসিসিআইয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে এখনই চুক্তি করা হবে না দুই কিংবদন্তীর সঙ্গে। এরপর মঙ্গলবার বোর্ডের বৈঠকের পর 'দ্য কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস'-এর সেক্রেটারি অমিতাভ চৌধুরী জানিয়ে দেন ভরত অরুণই ভারতীয় দলের বোলিং কোচ হচ্ছেন। আর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে এটাও পরিষ্কার হয়ে যায়, বোর্ড রাজনীতিতে আপাতত 'শাস্ত্রীর কাছে হারলেন সৌরভরা'। হেড কোচ নির্বাচন ছাড়া ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটির আর কোনও সিদ্ধান্তই মানা হল না। এখন প্রশ্ন, যেখানে উপদেষ্টাদের কোন উপদেশই মানা হল না, সেখানে এই উপদেষ্টা কমিটির কার্যকারিতাই বা কী?- প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে। তাহলে কী অচিরেই ভাঙতে চলছে সৌরভ-সচিন-লক্ষ্মণদের কমিটি? এই প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়ই।