Exclusive: চোটপ্রবণ হলেও টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি Rohit, জানিয়ে দিলেন Dinesh Lad
টেস্ট দলের নেতা হওয়ার পথে রোহিত শর্মা।
সব্যসাচী বাগচী: সাদা বলের মতো এ বার কি লাল বলের তাজও রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মাথায় উঠবে? বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সরে যাওয়ার পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিসিসিআই (BCCI) নেবে। সেটা সবাই জানে। তবে সীমিত ওভারের পর রোহিতকে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবেও দেখতে চাইছেন তাঁর ছোটবেলার কোচ দীনেশ লাড (Dinesh Lad)। সেটা সোমবার জি ২৪ ঘণ্টাকে অকপটে জানিয়েও দিলেন এই মুম্বইকর।
মুম্বই থেকে টেলিফোনে দীনেশ বলেন, “রোহিত দলকে অনুপ্রেরণা যোগাতে জানে। সিনিয়রদের পাশাপাশি জুনিয়রদেরও গুরুত্ব দেয়। সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ওর মধ্যে আছে। সেটা অল্প সুযোগেই দেখিয়েছে। ওর এই ইতিবাচক দিকের কথা বোর্ড কর্তারাও জানে। তাই আমার ধারণা বিসিসিআই ওর হাতেই টেস্ট দলের নেতৃত্ব তুলে দেবে।“
কোহলির অবর্তমানে রোহিতের নেতৃত্বে ভারতীয় দল এশিয়া কাপ ও নিধহাস ট্রফি জিতেছিল। সঙ্গে পাঁচ বার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে আইপিএল জয়ী করানো তো আছেই। চাপের মুখে দলকে নেতৃত্ব দিলেও রোহিতের ব্যাটিং গ্রাফ নিচের দিকে নেমে যায়নি।
এই তথ্যগুলো মনে করিয়ে দীনেশ যোগ করলেন, “ভারতীয় দল কিংবা আইপিএল-এ মুম্বইকে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় রোহিত কিন্তু ব্যাটার হিসেবেও সফল। তাছাড়া গত কয়েক বছরে টেস্ট ক্রিকেটে ও ব্যাটার হিসেবে অনেক উন্নতি করেছে। গত ইংল্যান্ড সফর এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ। ইংল্যান্ডে লাল বলের ক্রিকেটে ওর কিন্তু ওপেন করার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। তবুও দলের স্বার্থে রোহিত সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল। তাই আমার কাছে এই মুহূর্তে রোহিতই সব ফরম্যাটে নেতা হিসেবে যোগ্য ব্যক্তি। ও দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরি।“
তবে দীনেশ তাঁর ছাত্রের হয়ে সওয়াল করলেও, সুনীল গাভাসকরের মতো প্রাক্তন তরুণ ঋষভ পন্থের দিকে ভোট দিয়েছেন। আবার আকাশ চোপড়ার মতো ক্রিকেট পন্ডিত ‘হিট ম্যান’কে টেস্টে দলের নেতা হিসেবে দেখতে রাজি নন। কারণ হিসেবে রোহিতের বয়স ও ফিটনেসকে বড় করে দেখাচ্ছেন। এ দিকে নেতা হওয়ার দৌড়ে বেশ ভাল ভাবেই রয়েছেন কেএল রাহুল।
আরও পড়ুন: Ravindra Jadeja: হাতে ব্যাট নেই, মুখে বিড়ি! জাড্ডুর এমন হাল কেন?
অনেকের দাবি, রোহিত যে হেতু টেস্ট দলের সহ অধিনায়ক, তাই তিনিই পরবর্তী অধিনায়ক হবেন। কিন্তু রোহিতের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা তাঁর ফিটনেস। গত কয়েক বছরে একাধিক চোটের কবলে পড়েছেন তিনি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে পারেননি। তাই সীমিত ওভারের নেতার হাতে লাল বলের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আগে বোর্ড কর্তারা ও জাতীয় নির্বাচক মণ্ডলী নিশ্চয়ই সেই বিষয়টাও দেখে নেবেন। রোহিত আদৌ তিন ফরম্যাটের ধকল নেওয়ার মতো মানসিক ও শারীরিক ভাবে ফিট কিনা সেটাও দেখে নিতে চাইছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) বোর্ড।
আগামী দুই বছর দেশে এবং বিদেশে ভারতের ঠাসা ক্রীড়াসূচি রয়েছে। রাহুল এবং রোহিত দুই তারকা অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বুধবার থেকে শুরু হতে চলা তিন ম্যাচের এক দিনের সিরিজে রাহুল নেতৃত্ব দেবেন। তেমনই আবার রোহিতের সামনে সুযোগ রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে এক দিনের সিরিজে নেতৃত্ব দেওয়ার। ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এই সিরিজ শুরু হওয়ার কথা। মনে করা হচ্ছে তার আগেই রোহিত হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট থেকে সেরে উঠবেন। তাছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসেই আবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে দুটি টেস্ট খেলবে ভারতীয় দল।
দীনেশ অবশ্য তাঁর ছাত্রের চোটের বিষয় নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে রাজি নন। তাই যোগ করলেন, “চোট-আঘাত তো একজন ক্রীড়াবিদের জীবনের অঙ্গ। রোহিত বেশ কয়েকবার চোট পেলেও বারবার রাজার মতো কামব্যাক করেছে। তাই ওকে চোটপ্রবণ বলে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। বরং ওর হাতেই পুরো দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিত। সবাইকে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। রোহিতও সেটা করবে।“
রোহিতের জন্য তাঁর ছোটবেলার কোচ সওয়াল করবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। তবে এটাও ঠিক যে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট বার বার ভোগাচ্ছে রোহিতকে। ২০২০ সালের আইপিএল-এ তিনি সব ম্যাচ খেলতে পারেননি। এরপর সেই চোটের জন্য অস্ট্রেলিয়া সফরে সীমিত ওভারের সিরিজ এবং প্রথম দু’টি টেস্টেও খেলতে পারেননি। সেগুলোই বিসিসিআই-এর বিবেচনা করা উচিত।
২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট। এর আগে হাতে কিছুটা সময় আছে। তাই মহারাজের বোর্ডও তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয়। বাকিটা সময় বলবে।