করোনা আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃত্যু ৩ চিকিত্সকের, সবেমিলিয়ে রাজ্য হারাল ২০ চিকিত্সককে
চিকিত্সক হিসেবে রাজ্যে প্রথম করোনায় মৃত্যু হয় স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ বিপ্লব কান্তি সেনগুপ্তর
তন্ময় প্রামাণিক
করোনা আবহে আতঙ্ক বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। সোমবার একই দিনে করোনায় মৃত্যু হল রাজ্যের ৩ চিকিত্সকের। এদিন আরও একজন চিকিত্সকের মৃত্যু হয়েছে তবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না।
সোমবার যে তিন চিকিত্সকের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা হলেন, ডাঃ বিশ্বজিত্ মণ্ডল। বাড়ি ব্যারাকপুরে। করোনা পজিটিভ ছিলেন। দ্বিতীয় জন হলেন ডাঃ তপন সিনহা। কোভিড আক্রান্ত ছিলেন। কার্ডিয়োলজিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তৃতীয়জন হলেন ডাঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য। চিকিত্সা করতেন শ্যামনগরে। অন্যদিকে, এদিনই মৃত্যু হয়েছে ডাঃ হিমাদ্রী সেনগুপ্তের। তিনি অবশ্য করোনা আক্রান্ত ছিলেন না।
আরও পড়ুন-গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে খানিকটা কমলো করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা
উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরে চিকিত্সা করতেন জেনারেল ফিজিসিয়ান ডাঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য। এলাকায় যখন অধিকাংশ চিতিত্সক রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন সেসম দিনরাত এক করে কাজ করতেন প্রদীপবাবু। এলাকার চটকল শ্রমিকদের দেখতেন মাত্র ১ টাকায়। গভীর রাতেও তাঁর কাছে গেল কোনও রোগীকে ফেরাতেন না ডাঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য। করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি যখন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তখন তাঁর চিকিত্সার জন্য এলাকায় চাঁদা তুলছিলেন মানুষজন।
উল্লেখ্য, চিকিত্সক হিসেবে রাজ্যে প্রথম করোনায় মৃত্যু হয় স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ বিপ্লব কান্তি সেনগুপ্তর। তার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের ২০ জন চিকিত্সকের। ফলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে রাজ্যের চিতিত্সক মহল ও চিকিত্সকদের পরিবারে। শুধুমাত্র কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে ১৩ চিকিত্সকের। বাকিরা জেলার চিকিত্সক। এঁরা প্রত্যেকেই করোনা চিকিত্সরার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
আরও পড়ুন-স্নাতকস্তরে ভর্তি মাত্র ১ টাকায়, করোনা আবহে নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নৈহাটির ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র কলেজের
রাজ্যের চিকিত্সক সংগঠন এএইচএসবি-র প্রধান ডাঃ মানস গুন্টা জানান, রাজ্যের সবকটি চিকিত্সক সংগঠনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে প্রস্তাব দেওয়া হয়, কোনও একটি হাসপাতালে শুধুমাত্র চিকিত্সকদের চিকিত্সার জন্য নির্দিষ্ট করা হোক। যাতে যেসব চিকিত্সক করোনা চিকিত্সা করছেন তাঁরা দ্রুত চিকিত্সা পান। আবেদন করা হয় এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ারের দুটি তল নিয়ে ওই ব্যবস্থা চালু হোক। এখনও পর্যন্ত তা চালু হয়নি। এনিয়ে রাজ্য সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।