Pingla Blast: শিশু-সহ ১৩ জনের মৃত্যু, পিংলা বিস্ফোরণ মামলায় ৩ জনের ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ
Pingla Blast:রায় ঘোষণার পরে আদালত চত্বরের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সদ্য সাজাপ্রাপ্ত নিমাই মাইতির স্ত্রী সুলেখা মাইতি। তার অভিযোগ তার স্বামীকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সিআইডি কুড়ি লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিল
চম্পক দত্ত: পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় বাজি কারখানার বিস্ফোরণ মামলায় রায় ঘোষণা করল মেদিনীপুর আদালত। ওই বিস্ফোরণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ৩ জনকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। ২০১৫ সালের ৬ মে-র ঘটনা। ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় মারা যান ১৩ জন। তার মধ্যে ছিল ১০টি শিশু।
টানা ৮ বছর বিচার প্রক্রিয়া চলার পর পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার ব্রাক্ষ্মণবাড়ে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনের ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিলেন বিচারক। সোমবার মেদিনীপুর জেলা আদালতের ফাস্ট এডিশনাল কোর্টের বিচারক সালিম শাহি এই সাজা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছেন সিআইডি পক্ষের আইনজীবী দেবাশীষ মাইতি।
সিআইডির আইনজীবী বলেন, "ওই ঘটনায় ১০ জন শিশু সহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বিচারক ১১টি ধারায় বিভিন্ন সাজা ও আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বোচ্চ সাজা ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, সঙ্গে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের জেলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন ওই মৃত শিশু শ্রমিকদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার।"
আসামীপক্ষের আইনজীবী প্রসূন দাস অধিকারী বলেন, "এই রায়ের অনুলিপি সংগ্রহ করে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে।" ২০১৫ সালের মে মাসে ব্রাহ্মণবাড় গ্রামে বাজি কারখানায় পরপর বিস্ফোরণে ১০ জন শিশুশ্রমিক-সহ প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জনের। তার মধ্যে রাম মাইতি, তার স্ত্রী রিনা মাইতি এবং শুভেন্দু ভক্তা ওই ঘটনায় মারা গিয়েছে। শনিবার তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক।
ঘটনার তদন্ত করেছে সিআইডি। মামলার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন নীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি অবসর গ্রহণ করলেও এদিন আদালতে হাজির ছিলেন। গোড়ায় তদন্ত শুরু করেছিল পুলিস। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্তভার হাতে নিয়েছিল সিআইডি। ওই ঘটনায় পিংলার তৃণমূলকর্মী রঞ্জন মাইতি, রঞ্জনের ভাই নিমাই মাইতি এবং মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা সুরজ শেখকে গ্রেপ্তার করেছিল সিআইডি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৫, ২৮৬, ৩২৩, ৩০৪ পার্ট টু, ৩৪ এবং সেকসেন ৪/৫ এক্সপ্লোসিভ সাস্টেন্স অ্যাক্ট (ই এস), সেকোসেন ৯ (বি) আই ই অ্যাক্ট এবং জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট এর একাধিক ধারা এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্ট এর ধারায় এদিন সাজা ঘোষণা করেন বিচারক।
এদিন রায় ঘোষণার পরে আদালত চত্বরের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সদ্য সাজাপ্রাপ্ত নিমাই মাইতির স্ত্রী সুলেখা মাইতি। তার অভিযোগ তার স্বামীকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সিআইডি কুড়ি লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিল। না দেবার জন্যেই এভাবে তার স্বামীকে ফাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এর পেছনে রয়েছে তৃণমূলের নেতারা ও পুলিস। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব। এই রায় মানতে পারছি না।