বিধানসভায় বেনজির কাণ্ড: স্পিকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল হল বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটির বৈঠকে
অঞ্জন রায়
অঞ্জন রায়
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ইতিহাসে বেনজির ঘটনা। অধিবেশনে গৃহীত হওয়ার পরও বাতিল হল বিরোধীদের আনা অনাস্থা। বিরোধীদের দাবি, ভারতবর্ষের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম। শাসকদলের দাবি, সময় ছিল না। তাই বাতিল করতে হল গৃহীত প্রস্তাব।
বিধানসভায় চলছে শীতকালীন অধিবেশন। ১০ দিনের অধিবেশন শেষ হবে ২৯ নভেম্বর। শুরুতেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান রাজ্য সরকারের সার্বিক ব্যর্থতার প্রতিবাদে অনাস্থা আনতে চান। মঙ্গলবার অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বের পর স্পিকার জানতে চান, এই অনাস্থা আনার জন্য পর্যাপ্ত বিরোধী বিধায়করা কি অধিবেশনে হাজির আছেন? আব্দুল মান্না জানান, আছেন। তখন স্পিকার সবাইকে দাঁড়াতে বলেন। গুনে দেখা যায় সেই মুহূর্তে ৩৭ জন বিরোধী সদস্য বিধানসভায় উপস্থিত। নিয়ম অনুসারে অনাস্থা আনতে গেলে অন্তত ৩০ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। স্পিকার অনাস্থা গ্রহণ হল বলে ঘোষণা করেন। কবে আলোচনা হবে তা বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটিতে আলোচনা হবে।
প্রথম অধিবেশ শেষ হওয়ার পর বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটির জরুরি বৈঠক বসে। বৈঠকে বিরোধী বিধায়করা কবে এবং কতক্ষণ আলোচনা হবে তা জানতে চান। শাসকদলের পক্ষে জানানো হয়, ২৯ নভেম্বর অধিবেশন শেষ। তার আগে আলোচনা করার সময় নেই। ফলে অনাস্থা আনা যাবে না।
‘সংযম অভ্যাস করুন’, মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন মনমোহন
এই নিয়ে শাসক-বিরোধীর বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। নীরব দর্শকের ভূমিকায় সেই বৈঠকে বসে থাকেন বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষ। শাসকদলের পক্ষে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় কোনও অবস্থাতেই অনাস্থা আনা যাবে না। এর পরই বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করে বাম ও কংগ্রেস। যদিও বৈঠক ছাড়েননি দিলীপবাবু।
দ্বিতীয় দফার অধিবেশনের শুরু হতেই ওয়েলে নেমে স্পিকারকে ঘিরে তীব্র বিক্ষোভ শুরু করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। তারা সরাসরি স্পিকারের পদত্যাগের দাবি তোলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় স্পিকার পুরসভা আইন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যান। প্রায় ৩০ মিনিট বিক্ষোভ দেখানোর পর ওয়াকআউট করে বাম ও কংগ্রেস। বিধানসভা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী বিধায়করা। তাদের দাবি, এমন বেনজির ঘটনা ভারতবর্ষের সংসদীয় ইতিহাসে এই প্রথম।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, অধিবেশন কক্ষে স্পিকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশের কোনও বিধানসভা বা লোকসভায় আজ পর্যন্ত ঘটেনি। পরষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, হাতে সময় না থাকায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।