21 July TMC Sahid Divas: কবে ফেরত পাবেন চাকরি? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও অপেক্ষায় 'প্রতিবাদী' সিরাজুল!
21 July TMC Sahid Divas: ১৯৯৩ সালে ২১ জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন কলকাতা পুলিসের তত্কালীন কনস্টেবল সিরাজুল হক। ডেপুটি পুলিস কমিশনার দীনেশ বাজপেয়ীর দিকে বন্দুক তাক করে বলেছিলেন, 'স্যর, এই অত্যাচার থামান। না হলে আমি গুলি চালাতে বাধ্য হব'।
মনোজ মণ্ডল: আরও একটা একুশে জুলাই চলে গেল! গতবার ধর্মতলায় সমাবেশের পর, গাইঘাটার সিরাজুল হককে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশও দিয়েছিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে! কিন্তু হারানো সেই চাকরি এখনও ফেরত পাননি কলকাতা পুলিসের প্রাক্তন এই কনস্টেবল।
আরও পড়ুন: TMC 21 July Shahid Diwas: 'এটাই সব থেকে বড় পাওনা...' একুশের সভায় এসে কেন বললেন মধুপর্ণা?
৩ দশক পার। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই সচিত্র ভোটার কার্ড-সহ একাধিক দাবিতে মহাকরণ অভিযানের তত্কালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠেছিল শহর। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে পুলিসের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৩ জন। যে ঘটনার স্মরণেই প্রতিবছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল।
তখন কলকাতা পুলিসে কনস্টেবলে পদে কর্মরত ছিলেন গাইঘাটার ইছাপুরের ভদ্রডাঙার এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল হক। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই ব্রেবোর্ন রোডে ডিউটি পড়েছিল তাঁর। বেলা বাড়তেই বিশাল মিছিল নিয়ে সেখানে হাজির হন মমতা। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। ছুটে আসেন কলকাতা পুলিসের তত্কালীন ডেপুটি পুলিস কমিশনার দীনেশ বাজপেয়ী। গাড়ি নেমেই লাঠি চালানোর নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, 'মারো, বেটিকে খতম করে দাও'। মুহূর্তে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মমতা।
সেদিন পুলিসের ভূমিকায় গর্জে ওঠেছিলেন খোদ স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাব ইন্সপেক্টর নির্মল বিশ্বাস। সিরাজুলদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, 'আপনারা কি হাতে চুড়ি পড়ে বসে আছেন? বিরোধী নেত্রীকে এভাবে মারছে, আর আপনারা দেখছেন'? এরপরই যিনি লাঠি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই ডেপুটি পুলিস কমিশনার দীনেশ বাজপেয়ীর দিকেই বন্দুক তাক করেছিলেন কনস্টেবল সিরাজুল। বলেছিলেন, 'স্যর, এই অত্যাচার থামান। না হলে আমি গুলি চালাতে বাধ্য হব'।
পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিলেন ডেপুটি পুলিস কমিশনার। কিন্তু চাকরি থেকে বরখাস্ত হন নির্মল ও সিরাজুল। মামলায় জিতে পরে অবশ্য চাকরি ফিরে পেয়েছিলেন নির্মল। আর সিরাজুল? অভাবের কারণে মামলা লড়তে পারেননি তিনি। তবে চাকরি ফিরে পেতে আবেদন করেছিলেন বহু জায়গায়। সিরাজুল বলেন, 'দিদি আমায় ডেকেছিলেন, গিয়েছিলাম। দিদিকে বলেছিলাম, চাকরিটা ফিরিয়ে দিন। দিদি অর্ডার দিয়েছিলেন, কিন্তু চাকরি ফেরেনি'।
এখন দিনমজুরি করেন সিরাজুল। তাঁর প্রশ্ন, 'শুনেছি মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের বেশি করে গুরুত্ব দেয়। তাহলে আমার সঙ্গে এরকম করছেন কেন'? ছেলের চাকরি ফেরতের আশায় চোখের জল ফেলছেন সিরাজুলের মা।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)