Abhishek Banerjee In Malbazar: পিএফ-গ্রাচুইটি না মেটালে বিজেপি বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও করুন, চা শ্রমিকদের ডাক অভিষেকের
চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে অভিষেক বলেন, আপনাদের দাবি, আমাদেরও দাবি। ওইসব দাবিদাওয়া নিয়ে যতদূর যাওয়ার প্রয়োজন ততদূর আমরা যাব। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মালবাজারের সভা থেকে চা বাগান মালিক ও উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক-সাংসদের সাফ হুঁশিয়ারি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের সোজাসাপটা বক্তব্য, আগামী ২ মাসের মধ্যে পিএফ ও গ্রাচুইটি সংক্রান্ত সমস্য়ার সমাধান না হলে ১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামুন। উত্তরবঙ্গের বিজেপি সংসদ-বিধায়কদের বাড়ি ঘেরাও করুন। কলকাতা থেকে আমি আসব। রবিবার মালবাজারে চা শ্রমিকদের এক সভায় অভিষেক বলেন, যেসব চা বাগান পিএফ ও ইএসআই জমা করেনি তাদের প্রত্যেকের গেটে এনিয়ে আন্দোলন হবে। তৃণমূল কংগ্রেস চা শ্রমিকদের স্বার্থে লড়াই করবে। মালিকদের স্বার্থে নয়। পিএফ ও গ্রাচুইটি কেন্দ্রের বিষয়। আমাদের দাবি, পিএফ ও গ্রাচুইটি পে স্লিপ অনুযায়ী হতে হবে আগামী ৩ মাসের মধ্য়ে। এটা আপনাদের হকের পয়সা। যে চা বাগানের মালিক পিএফ, গ্রাচুইটি দেবে না সেইসব বাগানের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে পুলিসে এফআইআর করুন। কোনও চা বাগানকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। আপনাদের কথা দিয়ে যাচ্ছি। নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুমাস সময় দিচ্ছি। পিএফ, গ্রাচুইটি সম্পর্কিত যেসব সমস্যা আছে তা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে মিটিয়ে নিতে হবে। তাতেও যদি না হয় তাহলে ১ জানুয়ারি থেকে বিজেপির যে ৯ বিধায়ক রয়েছেন ও ৩ সাংসদ রয়েছেন তাদের বাড়ি ঘেরাও করুন। কলকাতা থেকে আমি আসব। দরকার হলে দিল্লি পর্যন্ত আমরা যাব। বিজেপি বলেছে নবান্ন চলো। আমরা বলছি দিল্লি চলো।
আরও পড়ুন-বিদেশ যেতে বাধা! বিমানবন্দর থেকে ফিরলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা
তৃণমূল সাংসদ এদিন বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল, এই সময়ের মধ্যে তিনবার প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। উনি কী বলেছিলেন? ২০১৬ সালের আগে একবার এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বীরপাড়া, লঙ্কাপাড় চা বাগান-সহ ৭টি চা বাগান কেন্দ্র অধিগ্রহণ করে খোলার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু ওইসব চা বাগান খোলার ব্যবস্থা করেছে রাজ্যে সরকার। তাই বিজেপি যা বলে তা করে না। ওরা ২০১৬, ২০১৯ সালে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিছু করেছে কি? কেন্দ্র বলেছিল ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। দশ পয়সা দেখতে পেয়েছেন কেউ? এরা মিথ্যে কথা বলে। এদের ছেড়ে কথা বলা উচিত নয়। আপনাদের পিএফ ও গ্রাচুইটির দাবি ন্য়াহ্য। আপনাদের জেনে রাখা ভালো পিএফ, গ্রাচুইটির দায়ভার কেন্দ্রের। রাজ্যে শ্রমমন্ত্রী এখানে রেয়েছেন, আমার দাবি রইল এখানকার তিন লাখ চা শ্রমিকদের ৩ মাসের মধ্যে একটি আইডি কার্ড দিতে হবে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওই আইডি কার্ড আপনারা পেয়ে যাবেন। প্রতিটি চা বাগানে ৫০ শিশু রাখার জন্য ক্রেস তৈরি হবে। সেখানে নিশ্চিন্তে শিশুদের রাখতে পারবেন মায়েরা। ২-৩ টি চা বাগানকে নিয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও তৈরি হবে। দিদি কলকাতায় থাকলেও তাঁর কাছে সব খবর থাকে। চা পাতা ২৪ কেজির কম তোলা হলে কেজিপিছু টাকা কেটে নেওয়া হয়। এই জিনিস বন্ধ করতে হবে। চা পাতা না হলে তা উঠবে কীভাবে? রোজ যাতে শ্রমিকরা ২৩২ টাকা পান চা আমরা সুনিশ্চিত করব। চা বাগানের পাশে যেখানে থাকেন সেইসব জমির পাট্টা যাতে দেওয়া হয় তার চেষ্টা করব। চা বস্তিগুলিতে যাতে পানীয় জল পৌঁছায় তার চেষ্টা করা হবে।
চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে অভিষেক বলেন, আপনাদের দাবি, আমাদেরও দাবি। ওইসব দাবিদাওয়া নিয়ে যতদূর যাওয়ার প্রয়োজন ততদূর আমরা যাব। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। সিপিএম আমলে ২০১১ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি ছিল ৬৭ টাকা। সেই মজুরি বেড়ে এখন হয়েছে ২৩২ টাকা। অনেকের অভিযোগ, আমরা পিএফ গ্রাচুইটি পাই না। পিএফ জমা হচ্ছে কী হচ্ছে না তার কোনও এসএমএস আসে না। ভোটের সময় যারা আসেন আর বাকী সময়ে যাদের দেখা পাওয়া যায় না তাদের উপরে কি আপনারা আস্থা রাখবেন? ভোটের আগে এসে বলেছিলাম, প্রতি দুমাসে আসব। আমি যা বলি সেটাই করি।