ঘরে-বাইরে চাপের মুখে আসাদ
সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে প্রেসিডেন্ট আসাদের উপরে। একদিকে যেমন দুনিয়াজুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তেমনই পোপ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রসংঘ, আরব লিগ এমনকী আল-কায়দা প্রধানও আসাদ-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন।
সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে প্রেসিডেন্ট আসাদের উপরে। একদিকে যেমন দুনিয়াজুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তেমনই পোপ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রসংঘ, আরব লিগ এমনকী আল-কায়দা প্রধানও আসাদ-বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তবে পার্থক্য একটাই। সিরিয়ার মানুষকে পশ্চিমী দুনিয়া বা আরব দুনিয়ার উপরে নির্ভরশীল না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জওয়াহিরি।
গত সপ্তাহে বিদ্রোহীরা হোমস, জাবাদানির মতো বেশ কিছু শহর নিজেদের দখলে নিয়ে এসেছিল। সেগুলি আবার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট বশার আল আসাদের সেনা। আন্দোলনকারীদের দাবি, হারানো জমি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এখনো পর্যন্ত পঁয়ত্রিশ জন নিহত হয়েছেন। এবং গত শনিবার থেকে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারশোর কাছাকাছি। দামাস্কাসে নিহত হয়েছেন জেনারেল পদমর্যাদার এক ব্যক্তি। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, গত মার্চ থেকে এখানে প্রাণ হারিয়েছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ। সরকারি হিসেবে, নিহত হয়েছেন অন্তত দু`হাজার সেনা। হোমসের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে এগোচ্ছে। ফুরিয়ে আসছে খাদ্য-পানীয়-ওষুধপত্র। দেশের ভিতরে যেমন, বাইরেও তেমনই জোরালো হচ্ছে আসাদ-বিরোধী স্বর।
মাঝেমধ্যেই লন্ডন-সহ ব্রিটেনের অন্যান্য শহরে অনাবাসী সিরীয়রা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সিরিয়ায় নিরবচ্ছিন্ন রক্তপাতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-মিছিল হয়েছে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনে। শনিবার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনাসভার আয়োজন করেছিলেন ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের রামাল্লায়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে আরও জোরালো অবস্থান নেওয়ার দাবিতে সেদিনই বিক্ষোভকারীরা প্যারিসের পথে নেমেছিলেন।
পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে রবিবার কায়রোয় বৈঠক করেন আরব লিগের অর্থমন্ত্রীরা। পশ্চিমী শক্তিগুলির পাশাপাশি আসাদ-বিরোধী অবস্থান নিয়েছে ভ্যাটিকানও। সিরিয়ার মানুষের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট। কিন্তু দামাস্কাসকে সামলানো যে খুব একটা সহজ হবে না, সেটা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া এবং চিনের অবস্থান থেকেই স্পষ্ট।
আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দিতে পশ্চিমী শক্তি এবং আরব দুনিয়ার সমর্থনে রাষ্ট্রসংঘ যে খসড়া প্রস্তাব এনেছিল, তার বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ করে রাশিয়া এবং চিন।
এই অবস্থায় আল-কায়দা প্রধান আয়মন আল-জওয়াহিরির আসাদ- বিরোধী অবস্থান অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। সিরিয়ার মানুষের বিক্ষোভে তাঁর সমর্থন রয়েছে বটে
কিন্তু পশ্চিমী বা আরব শক্তির সঙ্গে আপোষ না করেই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের কাছে অনুরোধ করেছেন জওয়াহিরি।