পাকিস্তানকে না টেনে নিজের ক্ষমতায় জিতুন, মোদীকে হুঁশিয়ারি পাক বিদেশমন্ত্রকের
রবিবার গুজরাটের পালনপুরে এক নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেসকে বিঁধতে গিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন মোদী বলেন, "বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে গতকাল (শনিবার) একটি গোপন মিটিং হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিল পাকিস্তানের হাই কমিশনার ও প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী, ভারতের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।"
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতের নির্বাচনে বারবার পাকিস্তানকে টেনে আনার অভিযোগে নরেন্দ্র মোদীকে কার্যত সতর্ক করলেন পাক-বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়জল। এদিন হুঁশিয়ারি সুরে ফয়জল বলেন, ভারতের নির্বাচনী বিতর্কে পাকিস্তানকে ইস্যু করা বন্ধ করুক মোদী। ষড়যন্ত্র না করে নিজের ক্ষমতায় জিতুন তিনি। পাকিস্তান সম্পর্কে মোদী যা মন্তব্য করছেন তা ভিত্তিহীন।
আরও পড়ুন- সুষমার ব্যক্তিগত চিঠিতে মঞ্জুর আবেদন, বড়দিনের দিনই পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত হবে কুলভূষণের
প্রসঙ্গত, রবিবার গুজরাটের পালনপুরে এক নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেসকে বিঁধতে গিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন মোদী বলেন, "বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে গতকাল (শনিবার) একটি গোপন মিটিং হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিল পাকিস্তানের হাই কমিশনার ও প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী, ভারতের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।" মোদীর আরও দাবি, তিন ঘণ্টা ধরে এই বৈঠক চলে। এরপরের দিনই মোদীকে 'নীচ' বলেন মণিশঙ্কর আইয়ার। পাকিস্তান ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কীভাবে নাক গলাচ্ছে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, "গুজরাট নির্বাচনে পাক সেনার প্রাক্তন ডিজি হস্তক্ষেপ করছে। মণিশঙ্কের বাড়িতে পাকিস্তানিরা বৈঠক করছে। এরপর গুজরাটের বাসিন্দা, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়, গরিব মানুষ এবং মোদীকে অসম্মান করছে। এর থেকেই তাদের অভিসন্ধি স্পষ্ট।" পাশাপাশি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আহমেদ প্যাটেলকে তুলে ধরা হচ্ছে, এমন অভিযোগ এসেছে গেরুয়া শিবির থেকে। যদিও মোদীর এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। আমেদাবাদে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সূর্যেওয়ালা সাংবাদিকদের বলেন, "দেশের শীর্ষ পদে থাকা মোদীর এই ভিত্তিহীন অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক। মোদী ভয় পেয়েছেন। গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। তিনি রেগে যাচ্ছেন। তাঁর এই মন্তব্যে কোনও সত্যতা নেই। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন মন্তব্য শোভা পায় না।"
আরও পড়ুন- ভারত প্যালেস্টাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলবে, অবস্থান স্পষ্ট করল বিদেশমন্ত্রক
কংগ্রেসের দাবি, মণিশঙ্করের বাসভবনে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান দীপক কাপুর, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী নটবর সিং এবং প্রাক্তন কূটনীতিক সলমন হায়দার, টিসিএ রাঘবন, শরত সভরওয়াল, কে শঙ্কর বাজপেয়ী এবং চিন্ময় ঘরেখান। টিসিএ রাঘবন এবং শরত্ সভরওয়াল একদা পাকিস্তানে ভারতের হাই কমিশনার দায়িত্ব সামলেছেন। এদিকে নটবর সিং সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, বৈঠকে কী কথাবার্তা হয়েছে মোদী তা কী করে জানলেন? তাঁর দাবি, ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিতকে আরও উন্নত করার বিষয়েই আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। এখানে কোনও রাজনৈতিক বিষয় আলোচনা হয়নি। চিন্ময় ঘারেখানও দাবি করেন, এটি একটি নৈশভোজ ছিল। সেখানে কোনও রাজনৈতিক বিষয় আলোচনা হয়নি।
কিন্তু যে যাই বলুক, গুজরাট ভোটের বাজারে পাকিস্তান যোগ যে ক্রমশ ইস্যু হয়ে উঠছে তা নিশ্চিত। এখন দেখার এই ইস্যু নির্বাচনী রাজনীতিতে কারও পালের হাওয়া কাড়তে পারে নাকি 'নন ইস্যু' হয়ে দাঁড়ায়।