বেলপাহাড়ি গ্রামে গুটিচাষ নতুন দিশা দেখাচ্ছে বাংলাকে
বিকল্প চাষ কীভাবে বদলে দিতে পারে জীবনযাত্রা? উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যেতেই পারে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম লালজলকে। ভুলাভেদার এই গ্রামে এখন চাষ হয় তসর গুটির। একবারের ধান চাষের পর এই গুটিচাষই বদলে দিচ্ছে গ্রামের অর্থনৈতিক মানচিত্র। স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন গ্রামের মানুষ।
ওয়েব ডেস্ক:বিকল্প চাষ কীভাবে বদলে দিতে পারে জীবনযাত্রা? উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যেতেই পারে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম লালজলকে। ভুলাভেদার এই গ্রামে এখন চাষ হয় তসর গুটির। একবারের ধান চাষের পর এই গুটিচাষই বদলে দিচ্ছে গ্রামের অর্থনৈতিক মানচিত্র। স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন গ্রামের মানুষ।
বেলপাহাড়ির লালজল গ্রাম। চল্লিশ পঞ্চাশটি পরিবার নিয়ে ছোট্ট গ্রাম। এতদিন একবার ধান চাষের ওপরই নির্ভর করতো পরিবারগুলি। কিন্তু, লালমাটির দেশে সেই চাষটাও পুরোপুরি বৃষ্টি নির্ভর। কোনও বছর ভালো বৃষ্টি না হলে মাথায় হাত পড়তো পরিবারগুলির। কীভাবে টানবেন সংসার? ছেলেমেয়েদের পড়াশুনাই বা হবে কীভাবে? নতুন রুজির সন্ধানে ছিলেন ওরা।
কিন্তু, সম্প্রতি বদলেছে ছবিটা। সরকারি উদ্যোগে একটি সংস্থার মাধ্যমে গ্রামবাসীরা পরিচিত হয়েছেন তসরের গুটিপোকা চাষের সঙ্গে। গ্রামে বসেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন লালজলের বাসিন্দারা। বছরে দুবার এই গুটিপোকার চাষ করা হয় লালজল গ্রামে। প্রশিক্ষকরা বলছেন, যে গুটি চাষ হচ্ছে তার থেকে উন্নমানের তসর তৈরি হয়। একই সঙ্গে জানালেন কতটা অর্থকরী এই চায। শুধু প্রশিক্ষকরা নন। গ্রামের সাধারণ মানুষও বলছেন সেকথা। অনিশ্চয়তার মেঘ কেটে সুদিনের আলো ঢুকতে শুরু করেছে ঘরে। গুটিচাষের থেকে যে টাকা আয় হচ্ছে, তা দিয়ে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছান বাবা-মায়েরা।
সবথেকে বড় কথা, এই চাষের জন্য তেমন কোনও বিনিয়োগের দরকারই পড়ে না। শুধু গুটি বীজ কেনা। তারপর প্রায় পুরোটাই প্রকৃতির আঙিনায়। হ্যাঁ, প্রয়োজন আছে খেয়াল রাখার। কারণ, গুটিপোকা বড় হলে অনেকসময় পাখি খেয়ে ফেলে। তাই নজরদারিটা নিয়মিতই করতে হয়। একবার ধানচাষ আর শীত শেষে জঙ্গল থেকে পাতা কুড়িয়ে আনা। এই দুটি কাজকে ঘিরে তৈরি হওয়া জীবনের বৃত্তটা আজ অনেকটাই বড় হয়েছে। ভুলাভেদা গ্রামের লালজল গ্রাম কি পথ দেখাবে জেলার অন্য অংশকে? যেখানে রুখাসুখা মাটিকে নির্ভর করেও খুলে যেতে পারে বিকল্প চাষের এক নতুন দিশা।