দিল না দিলে...

শর্মিলা মাইতি
দিলওয়ালে জ্বরে নাকি ভুগছিল দুনিয়া? কিন্তু রিলিজের পর যে এমন এপিডেমিক হবে, সেটা বোধহয় বাদশারও বোধগম্য হয়নি। প্রচুর প্রোমোশন, প্রায় সব চ্যানেলের সব খবরে সব নন-ফিকশনে, সব ফিকশনে কেকের-আগায়-চেরী স্টাইলে উপস্থিত শাহরুখ-কাজল জুটি। কলকাতা শাহরুখ খানের জান, শুক্রবার প্রতিটি শো হাউসফুল। এমন ঢল নেমেছিল হলে, যে পিঁপড়েও ঢুকতে পারবে না! সবাই জোড়ায় জোড়ায়, যেন ভ্যালেন্টাইনস ডে-র প্রিপারেশন.. জানা গেল প্রোপোজ করার পর পাঁচ মিনিটে প্রেম নিবেদন করবার কায়দা (নকল করে গার্লফ্রেন্ডকে ইমপ্রেস করতে যাবেন না, এটি বাস্তবে শুট করতে কম করে ৪৮ ঘণ্টা লেগেছে) জানা গেল, দুটি বিছড়ে যাওয়া দিলকে বার বার জোড়া দেওয়ার জন্যে আরও দুটি চরিত্র আমদানী করতে হয়, যারা আসলে ভাই আর বোন। মানে নায়কের ভাই আর নায়িকার বোন।
বরুণ ধাওয়ান আর কৃতি শ্যানন। এমন দুই চরিত্র, যারা যেমনই অ্যাক্টিং করুক, শাহরুখ কাজলের পাশে যেন লাগে মিয়োনো চানাচুর। কেঁদে কঁকিয়েও হাড়িকাঠে গলা দিলেন করণ জোহরের প্রিয়পাত্র বরুণ। কে জানে ক ঘণ্টার ছবি, হাফটাইমে জোড়ায় জোড়ায় সবাইকে ওয়াশরুম যেতে দেখে মনে হল, ওফ সবে ইন্টারভ্যাল। যাঁরা দিলওয়ালে আর দুলহনিয়ার প্রেম দেখতে এসেছিলেন, তাঁরা শুধু আহত বললে ভুল হবে। তড়িতাহত। বিদ্যুত্পৃষ্ট। তার উপর যেটুকু আস্ত ছিল তারও উপর পড়ল জনি লিভার আর বোমান ইরানির নুন-মরিচ। ওরে বাবারে! কী চুলকুনি। তবে হ্যাঁ, একজনকে টুপি খুলে সেলাম জানাতে হয়। যে-ভদ্রলোক ক্যামেরার পেছনে টুপি পরে বসে অনবরত অ্যাকশন-কাট বলে গেছেন। যেকোনও কাহিনিকেই তিনি এমন অলিগলিচলিলাম করে আগডুম-বাগডুম করে ফেলেন কোন জাদুমন্ত্রে, সে রহস্য একবার জানতেই হয়!
জীবন চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়, যেজন না বোঝে... দিলওয়ালে-তে যিনি জান দিলেন, তাঁর নামটা কি্তু কোত্থাও নেওয়া হল না, আব্বুলিশ। বলিউডকে এত দিয়েও কপালে যাঁর কপিক্যাট-ই জোটে। প্রিতম চত্রবর্তী। জনম জনম থেকে গেরুয়া, গানেই এমন ইমোশন দিয়েছেন যা হৃদয়ে নিয়ে ঘরে ফেরা যায়, সিন্দুকে তুলে রাখা যায়। দিলওয়ালে-র সেরা দিলওয়ালে তিনিই।